তায়াম্মুমের ফরজ কয়টি - তায়াম্মুমের নিয়ম
অনেক সময় পানির অভাবে অথবা বিভিন্ন অসুখের কারণে পানি ব্যবহার নিষেধ থাকলে, পবিত্রতা অর্জন করতে না পারার কারণে আমাদের অনেক ইবাদত কাজা হয়ে যেতপারে। আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতগুলো যাতে কাজা না হয় সেজন্য আল্লাহ পাক বিধান দিয়েছেন তায়াম্মুমের। আজকে আমরা জানবো তায়াম্মুমের ফরজ কয়টি এবং তায়াম্মুমের নিয়ম সম্পর্কে। তায়াম্মুমের ফরজ কয়টি এবং তায়াম্মুমের নিয়ম সম্পর্কে জানতে পুরো পোস্ট পড়ুন।
মনোযোগ সহকারে এই পোস্টটি পড়লে আপনি জানতে পারবেন তায়াম্মুমের ফরজ কয়টি এবং তায়াম্মুমের নিয়ম সম্পর্কে। আর আপনার যদি জানা থাকে,তায়াম্মুমের ফরজ কয়টি এবং তায়াম্মুমের নিয়ম সম্পর্কে তাহলে কোন সফরে বা পানির অভাব হলে অথবা অসুখ-বিসুখের কারণে পানি ব্যবহার করতে না পারলে আপনি তায়াম্মুমের মাধ্যমে পবিত্র হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতগুলো করতে পারবেন এতে করে আপনার ইবাদতগুলো কাজা হবে না আর আপনি অপবিত্রতা থেকে আপনার শরীর কেউ পবিত্র করতে পারবেন, তাহলে পুরো পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ে তায়াম্মুম সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য গুলো জেনে নিন।
সূচিপত্রঃ তায়াম্মুমের ফরজ কয়টি - তায়াম্মুমের নিয়ম
- তায়াম্মুমের কাকে বলে
- কি কি দিয়ে তায়াম্মুম করা যায়
- তায়াম্মুমের ফরজ কয়টি
- তায়াম্মুমের সুন্নত কয়টি
- তায়াম্মুমের নিয়ম
তায়াম্মুমের কাকে বলে
তায়াম্মুমের ফরজ কয়টি এবং তায়াম্মুম করার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনার আগে আমরা জেনে নেব তায়াম্মুম কাকে বলে এ বিষয়টি। চলুন তাহলে প্রথমে জেনে নেওয়া যায় তার আম্মু কাকে বলে। পানির অভাবে বা কোন রোগের কারণে পানি ব্যবহার করতে না পারলে , পবিত্রতা অর্জনের লক্ষ্যে নিয়তের সাথে মাটি বা মাটি জাতীয় পাক-পবিত্র দ্রব্য দিয়ে হাত ও মুখ মাসেহ করাকে তায়াম্মুম বলে।
আরো পড়ুনঃ
ফরজ গোসলের সঠিক নিয়ম
তায়াম্মুম করার মাধ্যমে ওযু ও গোসলের মতোই পবিত্র হওয়া চাই সুতরাং বলা যেতে
পারে তা মূল হল অজু ও গোসলের বিকল্প। মাটি বালি পাথর চুনা ইট ইট সুরকি সুরমা
হরতকি
কি কি দিয়ে তায়াম্মুমের করা যায়
আলোচনার উপরের অংশে আমরা জেনে নিয়েছি তায়াম্মুমের বলে, যেহেতু অজু ও গোসলের বিকল্প হিসেবে পানি ছাড়া তায়াম্মুম করতে হয়, এই কারণে আমাদের জেনে রাখা উচিত কোন কোন দ্রব্য গুলো দিয়ে তায়াম্মুম করা যায়। কি কি দিয়ে তায়াম্মুম করা যায় সেগুলো যদি আপনার জানা না থাকে তাহলে এখানে জেনে নিন কি কি দিয়ে তায়াম্মুম করা যায়।তায়াম্মুমের জন্য ব্যবহৃত দ্রব্যগুলো হল,
- মাটি
- বালি
- পাথর
- চুনা
- ইট
- সুড়কি
- সুরমা
- হরতকি
- সিমেন্ট
তায়াম্মুমের ফরজ কয়টি
আমরা আলোচনা করছি সম্পর্কে, এ পর্যায়ে আমরা জেনে নেব তার খরচ কয়টি এ বিষয়টি। যারা তায়াম্মুমের ফরজ কয়টি এ সম্পর্কে জানেন না, তাদেরকে জানানো হবে তায়াম্মুমের ফরজ সম্পর্ক । চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক তায়াম্মুমের ফরজ কয়টি।
তায়াম্মুমের ফরজ তিনটি, এর মানে হল তায়াম্মুমের মধ্যে তিনটি ফরজ কাজ করতে হয় এগুলো হল,
- নিয়ত করা
- মুখমন্ডল মাসেহ করা
- কুনুইসহ উভয় হাত মাসেহ করা
তায়াম্মুমের সুন্নত কয়টি
উপরে আমরা জেনে নিয়েছি তায়াম্মুমের ফরজ কয়টি এ বিষয়টি এবার আমরা জানবো তাইয়ামুমের মধ্যে কয়েকটি সুন্নত রয়েছে। বা বলতে পারেন ,তায়াম্মুমের সুন্নত কয়টি ও কি কি এ বিষয়টি। এবার তাহলে জেনে নেওয়া যাক তায়াম্মুমের সুন্নত কয়টি
তায়াম্মুমের সুন্নত ৬ টি। অর্থাৎ তায়াম্মুমের মধ্যে ৬টি সুন্নত কাজ করতে হয়। নিচে তায়াম্মুমের সুন্নত কাজ গুলো একে একে তুলে ধরা হল,
- বিসমিল্লাহ বলে হাতের আঙ্গুলগুলো ফাঁক করে তায়াম্মুম শুরু করতে হবে
- মাটি অথবা মাটির তৈরি জিনিসের উপরে আঙ্গুলগুলো ফাঁক করে উভয় হাত লাগাতে হবে
- মাটি এবং মাটি তৈরির জিনিসের হাত রেখে চাপ দিয়ে সামনে এবং পিছনে টানতে হবে
- এরপর হাত ঝেড়ে নিতে হবে
- প্রথমে মুখমণ্ডল এরপর ডান হাত ও তারপর বাম হাত মাসেও করতে হবে
- মাসেহ করার সময় ক্রমাগতভাবে বা অবিরাম হাতের উপরের অংশে এবং নিচের অংশে একবার ভালো ভাবে মাসেহ করতে হবে।
তায়াম্মুমের নিয়ম
পোস্টের এ পর্যায়ে আমরা আলোচনা করব তায়াম্মুমের নিয়ম সম্পর্কে। বিভিন্ন কারণে আমাদের তায়াম্মুম করার প্রয়োজন হতে পারে এই কারণে তায়াম্মুমের নিয়ম জেনে রাখা আমাদের উচিত। আপনি যদি তায়াম্মুমের নিয়ম না জেনে থাকেন তাহলে এ বিষয়টি সম্পর্কে এখানি জেনে নিন। তায়াম্মুমের নিয়ম সম্পর্কে নিচে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো।
তায়াম্মুমের নিয়মঃ মাটি এবং মাটি মাটি জাতীয় দ্রব্যের উপরে হাতের আঙ্গুল গুলো ফাঁক করে রাখতে হবে এরপর মাটি এবং মাটি জাতীয় দ্রব্যের উপরে চাপ দিয়ে সামনে একবার ও পেছনে একবার হাত দুটো টানতে হবে। হাতে ধুলো বালি লেগে গেলে দুই হাত ধরে ফেলে সম্পূর্ণ মুখমন্ডল মাসেহ করতে হবে। এরপর আবার আগের মতন মাটির পাত্রের উপরে দুই হাত আঙ্গুল ফাঁক করে রেখে সামনে একবার এবং পেছনে একবার টেনে হাত ঝেড়ে ফেলে, প্রথমে বাম হাতের মধ্যমা, অনামিকা এবং কনিষ্ঠা আঙ্গুলগুলোর পেট এবং হাতের তালুর কিছু অংশ দ্বারা ডান হাতের আঙ্গুলী নিচের পৃষ্ঠা থেকে আরম্ভ করেই কুনুই পর্যন্ত এবং বৃদ্ধা ও তর্জনীয় আঙ্গুলের পেট ও হাতের বাকি অংশ দ্বারা কুনুইয়ের উপর থেকে শুরু করে আঙ্গুল পর্যন্ত মাসেহ করতে হবে। ডান হাত মাসেহ করা হয়ে গেলে, একই নিয়মে ডান হাত দিয়ে বাম হাত মাসেহ করে নিতে হবে। এরপর এক হাতের আঙ্গুলি দিয়ে অপর হাতের আঙ্গুলিগুলোকে খিলাল করতে হবে।
তায়াম্মুম করার সময় খেয়াল রাখতে হবে হাতে কোন আংটি চুরি বা অলংকার জাতীয় দ্রব্য থাকলে সেগুলোর নিচেও মতেও করতে হবে। অজু করার সময় মুখমন্ডল এবং দুই হাতের যতদূর পর্যন্ত ধুতে হয় তায়াম্মুমের সময়ও ততদূর পর্যন্ত মাসেহ করতে হবে ,এর মধ্যে এক চুল পরিমাণ স্থানও যদি মাসেহ করতে বাকি থাকে তাহলে তায়াম্মুম হবে না।
আরো পড়ুনঃ সালাতুল তসবিহ নামাজের নিয়ম
মন্তব্য, পোস্টটি পড়ে নিশ্চয় আপনি জানতে পেরেছেন তায়াম্মুমের ফরজ কয়টি ও তায়াম্মুমের নিয়ম সম্পর্কে। আশা করছি ভবিষ্যতে আপনি যদি কোন সফরে থাকেন অথবা কোন অসুস্থতার কারণে পানি ব্যবহার করতে না পারেন তাহলে আপনার এবাদতগুলো কাজা হওয়ার আগেই তায়াম্মুমের মাধ্যমে পবিত্র হয়ে ইবাদত করতে পারবেন। আল্লাহ আমাদের সকলকে অপবিত্রতা থেকে মুক্ত রাখুন।
নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url