কফির উপকারিতা ও অপকারিতা - দিনে কয় কাপ কফি খাওয়া উচিত
স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি পানীয় হচ্ছে কফি। কফি পানের অনেক
উপকারিতা থাকলেও এর মধ্যে কিছু অপকারী দিকও রয়েছে। এই পোস্টে আমরা আলোচনা করব
বিভিন্ন ধরনের কফির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। কফির অপকারিতা সম্পর্কে জানা
থাকলে আপনি আপনার শরীরকে মারাত্মক ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে পারবেন।
সঠিক সময়ে কফি পান করলে শারীরিক বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা পাওয়া যায় কিন্তু সময়
না মেনে অথবা কয় কাপ কফি দিনের মধ্যে খাচ্ছি সেটি না জেনে কফি পান করতে থাকলে
এটি শরীরের উপর মারাত্মক প্রভাব সৃষ্টি করে। কফির উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে
বিস্তারিত জানতে হলে এই পোস্টটি অবশ্যই শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্টে কফি সম্পর্কিত যা যা থাকছেঃ কফির উপকারিতা ও অপকারিতা - দিনে কয় কাপ কফি খাওয়া উচিত
- কফির উপকারিতা ও অপকারিতা
- ব্ল্যাক কফির উপকারিতা
- গোল্ড কফির উপকারিতা
- দুধ কফির অপকারিতা
- সকালে কফি পানের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
- কফি খাওয়ার সঠিক সময়
- দিনে কয় কাপ কফি খাওয়া উচিত
কফির উপকারিতা ও অপকারিতা
কফি আমাদের মধ্যে অনেকেরই প্রিয় পানীয়। বন্ধুদের আড্ডায়, সকাল
সন্ধ্যা নাস্তার সাথে , ক্লান্তি দূর করতে আমরা বিভিন্ন সময়ে কারণে অকারণে
কফি পান করে থাকি। বিশেষ করে বর্ষাকালে কফি খেতে অনেকেই পছন্দ করে। কফি খেলে
বিভিন্ন ধরনের চিন্তা দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং সাথে সাথে বিভিন্ন
ধরনের রোগ থেকেও মুক্ত থাকা যাই। আমরা বিভিন্ন সময় কফি পান করি এবং আমাদের
অনেকেরই কপি খুব পছন্দের একটি পানি নিয়ে কিন্তু আমরা কি কফির উপকারিতা ও
অপকারিতা সম্পর্কে জানি? আপনার যদি কফির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে না জানা
থাকে তাহলে আসুন জেনে নিন কফির উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো।
আরো পড়ুন ঃ আম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
কফির উপকারিতাঃ কফির মধ্যে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যে উপাদান গুলো আমাদের শরীরের
জন্য খুবই উপকারী। আসুন তাহলে এবার একে একে কফের উপকারিতা গুলো জেনে নিই।
- কফি ওজন কমাতে সাহায্য করে
- স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে কফি
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে
- হার্ট ভালো রাখে কফি
- লিভার ভালো রাখে
- ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়
এবার চলুন কফির উপকারিতা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক। নিচে কফির বিভিন্ন উপকারিতা গুলোর বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হলো।
- কফি ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ কফির মধ্যে রয়েছে ক্যাথেন নামক উপাদান। এই ক্যাফেন পরিপাক ক্রিয়াকে উন্নত করতে সাহায্য করে। national center for bio technology এর ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়-এক্সি গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে ক্যাফিন অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এবং শরীরের মেটাবলিজম বাড়াতেও সাহায্য করে।
- স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে কফিঃ স্ট্রেস কমানোর একটি প্রাকৃতিক উপায় হলো কফি। কফির মধ্যে থাকা উপাদান গুলো আমাদের হতাশা , চিন্তা, উদ্বেগ , মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। অনেক সময় একঘেয়েমি বেশি বেশি ঘুম পাওয়া আমাদের কাজের ব্যাঘাত ঘটায়, কফি খাওয়ার মাধ্যমে আমরা অতিরিক্ত ঘুম নিয়ন্ত্রণ করতে পারি এবং কাজে একটিভ থাকতে পারি। কফি পান করলে চিন্তা একঘেয়েমি অতিরিক্ত ঘুম ইত্যাদি সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় , কারণ কফির ভেতরে থাকা উপাদান গুলো আমাদের স্নায়ুগুলোকে উদ্দীপ্ত করতে সাহায্য করে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে কফিঃ গবেষণায় দেখা গেছে কফি খাওয়ার ফলে শরীরে গ্লূকোজের মাত্রা কমতে থাকে , এ কারণে নিয়মিত কফি খেলে মধুমেয় বা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। এছাড়াও কফির ভেতরে রয়েছে ক্লোনজেনিক অ্যাসিড যা আমাদের শরীরের অ্যান্টি অক্সিজেন হিসেবে কাজ করে। এই ক্লোরোজেনিক এসিড অন্তর গ্লুকোজ শোষণকে বাধা দেয় এবং ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করে। মার্কিন এক গবেষণায় বলা হয়েছে প্রতিদিন যারা কফি খায় তাদের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে।
- কফি হার্ট ভালো রাখেঃ কফি আমাদের হার্টের জন্য খুবই উপকারী।ncbis এর ওয়েবসাইটে একটি গবেষণায় ফলাফল হিসেবে জানা যায় কফিতে রয়েছে এমন একটি উপাদান যা আমাদের শরীরের গ্লুকোজ মেটাবলিজমকে উন্নত করে এবং স্ট্রেস দূর করতে সাহায্য করে, কফি শরীরের ইমিউনো মডিউলেশন উন্নত করতে সাহায্য করে এই কারণে কফি খেলে আমাদের হার্ড ভালো থাকে। বিভিন্ন গবেষণার ফলাফল হিসেবে দেখা দিয়েছে নিয়মিত কফি খেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কম হয়।
- লিভার ভালো রাখে কফিঃ খেলে আমাদের লিভার ভালো থাকে। কফি খাওয়া লিভারের জন্য খুবই ভালো কারণ কফিতে রয়েছে পলিফেনালস , ক্যাফিন , ডিটার পিনার্ট যা আমাদের লিভারকে ভালোভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। কফি খেলে এর ভেতরে থাকা হেপাটো প্রটেকটিভ বৈশিষ্ট্য গুলো লিভার কে নিরাপদ রাখতে সাহায্য করে। কফি খেলে লিভারের জমার আশঙ্কা থাকে না এবং লিভার টিস্যু ক্ষয় রোধ হয়, এ কারণে নিয়মিত কফি খেলে লিভারের বিভিন্ন সমস্যা থেকে নিরাপদ থাকা যায়।
- ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়ঃ কফির মধ্যে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যেগুলো আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের কোষগুলোকে ড্যামেজ করতে সাহায্য করে এর ফলে আমাদের শরীর ক্যান্সারের ঝুঁকিমুক্ত থাকে।
এতক্ষণ আমরা জানলাম কফি খাওয়ার বিভিন্ন ধরনের উপকারিতার কথা। কফির কফি
খাওয়ার অনেক উপকারিতা থাকলেও , অতিরিক্ত কফি খাওয়ার বেশ কিছু অপকারিতাও
রয়েছে। আসুন এবার তাহলে জেনে নেওয়া যাক কফি খাওয়ার অপকারিতা গুলো।
কফি খাওয়ার অপকারিতাঃ আপনি যদি অতিরিক্ত কফি খান অথবা রাত্রে বেলা কপি
খান তাহলে আপনার অনিদ্রার সমস্যা হতে পারে। এছাড়া আপনি যদি সকালবেলা উঠে খালি
পেটে কফি খান তাহলে আপনার বদহজমের সমস্যা অথবা অ্যাসিডিটি সমস্যা হতে পারে। কফি
খেলে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে ঠিকই কিন্তু অতিরিক্ত কফি খেলে শরীরের
কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে।
প্রেগন্যান্ট অবস্থায় কফি খাওয়া খুব একটা নিরাপদ নয় কারণ প্রেগন্যান্ট
অবস্থায় কফি খেলে মিস ক্যারেজ হয়ে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে। অতিরিক্ত কফি খাওয়া
ব্লাড প্রেসারের বাড়িয়ে দেয় এবং অতিরিক্ত কফি খেলে কিডনির উপরেও ইফেক্ট
পড়তে পারে। এই কারণে অতিরিক্ত কফি খাওয়া কখনোই উচিত নয়। অতিরিক্ত কফি পানের
ফলে পাকস্থলীতে আলসার ও গ্যাস্ট্রিক এর সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে এবং এটি
স্নায়ুতন্ত্রের উপর মারাত্মক প্রভাব।
ব্ল্যাক কফির উপকারিতা
কফি পান করতে আমরা অনেকেই পছন্দ করি কেউ দুধ কফি পছন্দ করি, আবার কেউ ব্লাক
কফি। আমাদের শরীরের জন্য ব্ল্যাক কফি খুবই উপকারী, ব্ল্যাক কফি খাওয়ার অনেক
স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। চলুন তাহলে আর দেরি না করে ব্ল্যাক কফির উপকারিতা
গুলো জেনে নেয়া যাক। নিচে এক এক করে ব্ল্যাক কফি এর উপকারিতা গুলো তুলে ধরা
হলো।
- ওজন কমায়
- স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
- অ্যান্টিঅক্সিজেন তৈরি করে
- ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
স্মৃতিশক্তি বাড়ায়ঃ কফির মধ্যে রয়েছে ক্যাফেইন নামক এক
ধরনের উপাদান, এই ক্যাফেইন আমাদের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। ব্ল্যাক
কফির ভিতরে প্রচুর পরিমাণে ক্যাফিন থাকায় এটি আমাদের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে
সাহায্য করে।
অ্যান্টি অক্সিজেনঃ কফির ভেতরে থাকা ক্লোরোজেনিক এসিড আমাদের শরীরে
অ্যান্টিঅক্সিজেন হিসেবে কাজ করে। ব্ল্যাক কফি খেলে শরীরের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
বৃদ্ধি পায়।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করেঃ ব্ল্যাক কফি আমাদের শরীরের মধ্যে থাকা
ক্যান্সারের কোষ গুলোকে ড্যামেজ করে এবং লিভার,স্তন,কোলন বিভিন্ন ধরনের
ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
অনিদ্রা দূর করেঃ যাদের রাতে অথবা দিনে ঘুম আসতে চায় না অথবা যারা
অনিদ্রা রোগী রয়েছে তারা নিয়মিত কফি পান করলে অনিদ্রার সমস্যার হাত থেকে
রেহাই পাওয়া যায়।
গোল্ড কফির উপকারিতা
আমরা অনেকেই মনে করে থাকি গোল্ড কফি এবং নরমাল কফির পার্থক্য শুধু নামের
মধ্যেই। আসলে এ ধারণাটি সম্পূর্ণই ভুল। শুধু নামে নয় গোল্ড কফি এবং নরমাল কফির
বৈশিষ্ট্যগত এবং স্বাস্থ্য উপকারিতার দিক থেকেও বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে।
উপরের আলোচনায় আপনারা ব্ল্যাক কফির উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন এবার
আপনাদেরকে জানাব গোল্ড কফির উপকারিতা সম্পর্কে। অযথা দেরি না করে চলুন তাহলে
শুরু করে ফেলা যাক কোন কফির উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা। গোল্ড কফির উপকারিতা গুলো হল,
- স্মৃতিশক্তি প্রখর করে
- পেটের অ্যাসিডিটি কম হয়
- আয়ু বৃদ্ধি করে
স্মৃতিশক্তি প্রখর করেঃ গোল্ড কফি প্রস্তুত করার সময় কফি দিনগুলোকে খুব
বেশি রোস্ট বা ভাজা হয় না।বেশি না ভাজার কারণে গোল্ড কফিতে ক্যাফেইন এর
পরিমাণ বেশি থাকে। আর ক্যাফেইনের পরিমাণ বেশি থাকার কারণে গোল্ড কফি পান করলে
স্মৃতিশক্তির প্রখরতা বৃদ্ধি পায়।
দ্রুত ওজন কমানোঃ অন্যান্য কফির তুলনায় গোল্ড কফি পানের ফলে আমাদের শরীরের ওজন
দ্রুত হ্রাস পায়। এই কারণে যারা স্থূলতায় ভোগেন অথবা যাদের শরীরের ওজন
স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি তারা গোল্ড কফি পান করলে খুব ভালো ফলাফল পেতে পারেন।
কারণ গোল্ড কফি শরীরের শর্করার মাত্রাকে কম করতে সাহায্য করে।
পেটের এসিডিটি কম হয়ঃ কফি পানের ফলে অনেকের পেটেই গ্যাস অথবা এসিডিটি
হওয়ার সমস্যাটি দেখা যায়। গোল্ড কফি প্রস্তুত করতে যেহেতু তুলনামূলক কম রোস্ট
করা হয় এই কারণে গোল্ড কফি পানের ফলে পেটের এসিডিটি খুব একটা হয় না।
অথবা পেটে এসিডিটি হলেও সেটি অন্যান্য কফির তুলনায় কম হয়।
আয়ু বৃদ্ধি করেঃ গোল্ড কফি পানের ফলে আমাদের শরীরের অভ্যন্তরে রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে এবং ফলে আয়ু দীর্ঘায়িত হয়। গোল্ড কফি পান করলে
ক্যান্সারের ঝুঁকি লিভারের কর্মক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। এখন চলে আসবে
দুধ কফির অপকারিতা
বেশিরভাগ মানুষই ব্ল্যাক কফির চাইতে দুধ কফি খেতে বেশি পছন্দ করে, দুধ কফি
ব্ল্যাক কফির তুলনায় স্বাদে অনেকটা বেশি হওয়ায় মানুষ এটি বেশি পছন্দ করে
থাকি কিন্তু দুধ কফি ব্ল্যাক কফির চাইতে সাধের বেশি হলেও গুনাগুনের দিক থেকে
চাইতে ব্ল্যাক কফি বেশি গুনাগুন সম্পন্ন। এই জন্য আপনারা যারা দুধ কফি খেতে
পছন্দ করেন তারা অবশ্যই দুধ কফির অপকারিতা গুলো সম্পর্কে জেনে নিবেন। তাহলে দুধ
কফির অপকারিতা বা অসুবিধা গুলো নিয়ে আলোচনা করা যাক।
দুধ কফি পানের সবচাইতে বড় অসুবিধা হলো, আমরা যখন কফির ভেতরে দুধ মেশাই
তখন দুধের গুনাগুন অনেকটাই কমে যায়, দুধকপি পান করলে পেটে এসিডিটির
সমস্যা বেশি হয় এবং দুধ কপি ঘুমের ক্ষেত্রেও সমস্যা তৈরি করতে পারে। যারা
স্নায়ুর বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত তাদের ক্ষেত্রে দুধ কফি বিরূপ
প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারি। স্নায়ু রোগীদের জন্য দুধ কপি যোগের মাত্রা
বাড়িয়ে দেয়। এছাড়াও মনোযোগের অভাব , মাথাব্যথা , বিরক্ত লাগা ইত্যাদি
সমস্যা গুলো প্রকটভাবে দেখা দিতে পারে। কফি পান করলে হাড় ক্ষয় হওয়ার
প্রবণতা অনেকাংশে বেড়ে যায়। এ কারণে পারো তো পক্ষে আমাদের দুধ কপি এড়িয়ে
চলাই ভালো।
সকালে কফি পানের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
সারারাত ঘুমানোর পরে সকালে কফি পানের মধ্যে দিয়ে দিন শুরু করাটা
অনেকেরই অভ্যাস। কিন্তু এই কাজটি করা মোটেও উচিত নয়। কারণ সকাল বেলা খালি
পেটে কফি পান করাটা হতে পারে আপনার শরীরে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক
জটিলতার কারণ। এই কারণে সকালবেলা কফি পানের আগের অবশ্যই জেনে নিন সকালে
কফি পানের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো। সকালে কফি পানের ফলে , আপনার হতে
পারে।
- হজমের সমস্যা
- মানসিক চাপ বাড়ে
- পানি শূন্যতা
- রক্তচাপ কম করে
হজমের সমস্যাঃ সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই খালি পেটে কফি পান করলে আপনার
হজমের সমস্যা সৃষ্টি হবে। শরীরের পুরো ডাইজেস্টিক সিস্টেমটাই নড়বড়ে হয়ে যায়
সকালবেলা খালি পেটে কফি পান করার ফলে। সকালে খালি পেটে কফি পান করলে আইবিএস এর
সমস্যা ও দেখা দিতে পারে।
মানসিক চাপ বাড়েঃ আমাদের শরীরে এক ধরনের হরমোন রয়েছে যেটির নাম কর্টিসল
হরমোন। এই কর্টিসোল হরমোন এর কারণেই আমাদের মানসিক চাপ এবং স্ট্রেস হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরে শরীরের ভেতরে এই কটিসোল
হরমোন নিঃসরণ এর মাত্রা বেড়ে যায়, এই কারণে সকালে খালি পেটে কফি খেলে এই
হরমোনের মাত্রা অতিরিক্ত হয়ে গিয়ে মানসিক চাপ এবং স্ট্রেসের সমস্যা হতে
দেখা যায়।
পানি শূন্যতাঃ সকালে খালি পেটে কফি পান করলে শরীরে পানি শূন্যতা দেখা
দেয় বিশেষ করে গরমকালে সকাল বেলা কফি পান করা মোটেও না। কারণ গ্রীষ্মকালে
সকালে পানি পান করলে পানি শূন্যতার সাথে সাথে মাথা ঘোরা, ক্লান্তি বোধ এবং
হাত-পা শক্ত হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে।
খালি পেটে কফি পান করলে এটি সরাসরি রক্তের উপরে প্রভাব
ফেলে।
রক্তচাপ কম করেঃকফির ভেতরে থাকা ক্যাফেইন নামক উপাদানটি যেহেতু উচ্চ রক্তচাপে বাধা প্রদান
করে এ কারণে সকালবেলা খালি পেটে কফি খেলে এর ভেতরে থাকা গ্যাসের নাম ও উপাদানটি
সরাসরি রক্তের ওপরে প্রতিক্রিয়া দেখায় এবং শরীরের রক্তচাপ কমিয়ে দেয়।
এইজন্য যারা লো প্রেসার এর রোগী রয়েছেন তাদের জন্য খালি পেটে কফি পান করাটা
একেবারেই অনুচিত।
কফি খাওয়ার সঠিক সময়
আমরা বিভিন্ন সময়ে কাজের ফাঁকে, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে দিতে, ক্লান্ত হলে
অথবা অভ্যাস জনিত কারণেই বিভিন্ন সময়ে, সময় পেলেই কফি খেতে বসে যাই।
একচুয়ালি এই কাজটি করা আমাদের মোটেই উচিত নয় কারণ কফি খাওয়ার সঠিক সময়
না জেনে হুট - হাট করে কফি পান করতে বসে গেলে সেটি আমাদের শরীরে
উপকারের চাইতে অপকার করতে পারে। এই কারণে কফি খাওয়ার পূর্বে আমাদের জেনে
নেওয়া উচিত কফি খাওয়ার সঠিক সময় কোনটি।
কফি খাওয়ার সঠিক সময় হল সন্ধ্যা বেলা। এছাড়াও আপনি যদি দিনের বেলা কফি
খেতে চান তাহলে সকালে ঘুম থেকে ওঠার অন্তত তিন চার ঘন্টা পরে কফি খেতে হবে
সেটি অবশ্যই নাস্তার করে। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরপরই এবং রাতের বেলায় কফি
খাওয়া মোটেই উচিত না। সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করার তিন চার ঘন্টা পর
থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কপি পান করার উপযুক্ত টাইম।
দিনে কয় কাপ কফি খাওয়া উচিত
কফি প্রেমী মানুষ যারা আছে তারা দিনের মধ্যে কত কাপ কফি পান করে সেটি
নিজেরাও জানেনা। বিশেষ করে এই ধরনের মানুষ যখন মানসিক চাপ অথবা স্ট্রেস থাকে সেই
সময়। কিন্তু অতিরিক্ত কফি খেলে উপকারিতার চেয়ে অপকারিতা বেশি হয় এই কারণে দিনে
কয় কাপ কফি খাওয়া উচিত সেই সম্পর্কে নলেজ রেখে কপি পান করতে হবে।
সর্বোচ্চ ৪০০ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন একটি মানুষ দৈনিক গ্রহণ করতে পারি আর এক কাপ
কফিতে সর্বোচ্চ ১৪০ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন থাকে সুতরাং একজন মানুষ একদিনে সর্বোচ্চ
৪ কাপ অথবা ৫ কাপ কফি খেতে পারবে। অতিরিক্ত কফি খাওয়া যেহেতু স্বাস্থ্যের
পক্ষে ঝুঁকি কর এই কারণে পারতপক্ষে দুই থেকে তিন কাপের বেশি কফি না খাওয়াই ভালো।
রেগুলার কেউ পাঁচ কাপ অথবা পাঁচ কাপের বেশি কফি পান করতে থাকলে তার সন্তান ধারণ
ক্ষমতা অনেকটাই কমে যায়। এ কারণে দিনের মধ্যে তিন কাপের বেশি কফি না পান করাই
উচিত।
মন্তব্য, আলোচনার মাধ্যমে আমরা কফির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে
পেরেছি এবং আরও জানতে পেরেছি কফি খাওয়ার সঠিক সময় ও দিনে কয় কাপ কফি খাওয়া
উচিত। আপনার শরীরকে সুস্থ এবং রোগমুক্ত রাখতে হলে অবশ্যই কফি খাওয়ার নিয়ম
কানুন এবং কফি খাওয়ার সময় মেনে চলুন ও আপনার শরীরকে সুস্থ রাখুন। আশা করছি কফি
সম্পর্কিত উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য গুলো জানতে পেরে আপনি
অনেক উপকৃত হয়েছেন।
নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url