আজকের এই একটি পোস্ট পড়ার মাধ্যমে আপনি জানতে পেরে যাবেন গরমে শুষ্ক ত্বকের
যত্ন নেয়ার সকল উপাগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। আপনি যদি শুষ্ক
ত্বক নিয়ে সমস্যায় থাকেন তাহলে এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনি শুষ্ক
ত্বকের সকল সমস্যার সমাধান পেয়ে যাবেন এই পোস্ট। গরমে শুষ্ক ত্বকের যত্ন
নিতে এই পোস্টটি আপনাদের অনেক উপকার করবে বলে আশা করছি।
এই পোস্টটি আপনাদের আজকে জানাবো গরমে শুষ্ক ত্বকের যত্ন কিভাবে নিতে হয়, শুষ্ক ত্বকের ঘরোয়া যত্ন এবং শুষ্ক ত্বকে ব্যবহার উপযোগী সাবান, ফেসওয়াশ , মশ্চারাইজার এবং ফাউন্ডেশন সম্পর্কে। তাহলে আর দেরি না করে যারা শুষ্ক ত্বকের অসুবিধায় ভুগছেন তারা পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ে ফেলুন আর জেনে নিন গরমে শুষ্ক ত্বকের যত্ন এবং শুষ্ক ত্বকের সকল সমস্যার সমাধান সম্পর্কে।
আজকে আমরা আলোচনা করব গরমে কিভাবে শুষ্ক ত্বকের যত্ন নিতে হয় সে সম্পর্কে। শুষ্ক
ত্বক বা Dry skin নিয়ে যারা অসুবিধায় আছেন, তারা দুশ্চিন্তা না করে গরমে
শুষ্ক ত্বকের যত্ন সম্পর্কে জেনে নিন। নিচে শুষ্ক ত্বকের অসুবিধা গুলোর সলিউশন
হিসেবে উপায় আপনাদের জন্য শেয়ার করা হয়েছে। এ পদ্ধতি গুলো নিয়মিত এবং
ঠিকঠাক মতন পালন করলে গরমে শুষ্ক ত্বকের যত্ন নিতে অনেকটা হেল্পফুল হবে। তাহলে
জেনে নিন গরমের শুষ্ক ত্বকের যত্ন নেয়ার উপায় গুলো।
পর্যাপ্ত পানি পান করুনঃগরমের দিনেও ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে
প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা উচিত। পানি আমাদের শরিরে থাকা নানা ধরনের খারাপ
উপাদান বের করে দেওয়ার সাথে সাথে আমাদের ত্বকের মধ্যে থাকা খারাপ উপাদানও বের করে
দিয়ে ত্বককে রাখে সুন্দর ও ঝলমলে মশ্চারাইজ করতে সাহায্য করে। তাই গরমের দিনেও
ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে দিনে ৮-৯ গ্লাস পানি পান করুন।
সানস্ক্রিন ব্যবহারঃ ত্বক শুষ্ক হয়ে ওঠার অন্যতম একটি কারণ হলো সূর্যের
অতিবেগুনি রশ্নি। এ কারণে গরমের দিনে বাইরে গেলে অবশ্যই অবশ্যই প্রত্যেকের সান্স
ক্রিম ব্যবহার করা উচিত বিশেষ করে যাদের ত্বক শুষ্ক তাদের জন্য বিষয়টি অতি
জরুরি। এ কারণে যাদের শুষ্ক রোদ থেকে নিজের ত্বককে প্রোটেক্ট করা খুবই জরুরি এবং
বিশেষ করে গরমের দিনের সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্তের রোদে থাকা আল্টাভায়োলেট
রে আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা কমায়, ব্রণের কালো দাগ বাড়িয়ে দেয়, আবার এই সময়ের
রোদের জন্য আমাদের স্কিন ক্যান্সারও হতে পারে।
কিন্তু সান্স ক্রিম কেনার সময় ২টা জিনিস মাথায় রাখা খুব জরুরি। প্রথমত হলো SPF,
SPF হলো Sun Protection Factor. সান্স ক্রিম কেনার সময় SPF 30 বা তার উপরে কেনাই
ভালো , সান্স ক্রিমের এসপিওএফ 30 মানে হলো যদি আপনার ত্বকে সান্স ক্রিম লাগানো পর
রোদ লাগে তাহলে এটি রোদে পুড়তে ৩০ মিনিট সময় লাগবে। আর দ্বিতীয়ত হলো সান্স
ক্রিমটি আমাদের UVA & UVB থেকে প্রটেক্ট করে কি না। এখানে এই দুইটা সহজে
বুঝাতে ভাবতে পারেন UVA আমাদের বয়সের ছাপ বাড়িয়ে দেয় আর UVB আমাদের ত্বককে পুড়িয়ে
উজ্জ্বলতা কমিয়ে দেয়। তাই সান্স ক্রিম কেনার সময় এসপিএফ দেখে কেনা ও সান্স
ক্রিমটি ইউভিএ, ইউভিবি প্রতিরোধ করে কি না তা ভালোভাবে চেক করে নিবেন।
ত্বক পরিষ্কার রাখাঃ আমরা সবাই জানি যে ত্বক ভালো রাখতে হলে ত্বক পরিষ্কার
রাখা একটি গুরুত্বপুর্ণ বিষয়। কারণ আমাদের দেখা ধুলা-ময়লাই শুধু ত্বকের রুক্ষতা
বাড়িয়ে তোলে এবং ত্বকের ক্ষতি সাধন করে তাই নয়, আমাদের অজান্তেও অনেক জীবাণু
আমাদের ত্বকে লেগে থাকে যেমন: বাতাসে ভেসে বেড়ানো রোগ-জীবাণু, হাতে বা রুমালে
থাকা রোগ জীবানু। এর জন্য সকালে ঘুম থেকে উঠে ও রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মুখ ভালো
কোন স্ক্রাব বা ফেয়াওয়াস দিয়ে ধুয়ে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি, সাথেই আপনার শোয়ার
বালিশের কভার ৩-৪ দিন পর পর ধুয়ে ব্যবহার করা ও মুখের ত্বকে বার বার হাত না
লাগনো।
ত্বকে আইস কিউব অ্যাপ্লাই করাঃ গরমে শুষ্ক ত্বকে বরফ ঘষারও প্রচুর
উপকারীতা রয়েছে। যেমন: গরমে আমাদের মুখে অনেক বেশি ধুলা-ময়লা লাগে, আবার শরীর
থেকে ঘাম আকারে বের হওয়া ক্ষতিকর উপাদানও আমাদের মুখে লেগে থাকে আর এর থেকে হয়
আমাদের মুখে বিভিন্ন ধরনের ব্রণ ও চুলকানি। গরমে বরফ মুখে ব্যবহারের ফলে এই
ব্রণের জীবাণুটি অনেক তাড়াতাড়ি কমে যায়, এছাড়া এটি আমাদের ত্বকের রক্ত সঞ্চালনের
দিকেও অনেক ভালো কাজ করে, আমাদের ত্বক ঠান্ডা রাখে এবং এটি আমাদের চোখের চারিপাশে
থাকা ডার্ক-সার্কেল দূর করে।
ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধোয়াঃ দিনে কয়েকবার ঠান্ডা পানির ঝাপটা দেওয়া।
কিন্তু খেয়াল রাখবেন যাতে পানি বেশি ঠান্ডাও না হয় আবার ঝাপটাগুলো বেশি জোরেও
না হয়। দিনের মধ্যে কয়েকবার ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুলে শুষ্ক ত্বকের টানটান
ভাব অনেকটাই কম হয়।
গরমে শুষ্ক ত্বকের ঘরোয়া যত্ন
গরমে শুষ্ক ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য আপনাকে আর বেশি কিছু করতে হবে না। আপনি
আপনার আশেপাশে থাকা বা ঘরে থাকা বিভিন্ন জিনিস দিয়েই করে নিতে পারবেন গরমে
শুষ্ক ত্বকের ঘরোয়া যত্ন। ঘরে থাকা কোন উপাদান গুলো দিয়ে আপনি শুষ্ক ত্বকের
যত্ন নিবেন সে বিষয়ে যদি না জেনে থাকেন তাহলে পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন এবং
গরমে শুষ্ক ত্বকের ঘরোয়া যত্নগুলো সম্পর্কে জেনে নিন। ঘরোয়া উপাদান গুলো
দিয়ে ত্বকের যত্ন নিলে শুষ্ক ত্বকে র্যাস, চুলকানি এবং এলার্জি হওয়ার সমস্যা
অনেকটাই কম হয়। তাই অবশ্যই জেনে নিন গরমে শুষ্ক ত্বকের ঘরোয়া যত্ন নেওয়ার
উপায় গুলো।
অ্যালোভেরা জেল ও গোলাপ জলঃ ত্বকের ঘরোয়া যত্নের জন্য এলোভেরা জেলের
কথা বলার আর অপেক্ষা রাখে না। প্রথমেই একটি পাত্রে ২-৩ চামচ অ্যালোভেরা জেল ও ১
চামচ গোলাপ জল নিয়ে সেটি ভালোভাবে মিশিয়ে মুখে লাগায়ে নিন। অ্যালোভেরা জেলে আছে
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের ত্বককে সতেজ রাখে ও শুষ্ক ত্বকও হাইড্রেট করে
অন্যদিকে গোলাপ জলের মাধ্যমে ত্বকের কোষগুলো সতেজ ও টানটান হয়।
শশার রসঃ শসা শুষ্ক ত্বক মশ্চারাইজ করার জন্য বিশেষ উপকারী একটি
উপাদান। শশার রস মুখে লাগানোর মাধ্যমে রোদে পুড়ে ত্বকের কালো দাগ দূর করতে
পারে, ডার্ক সার্কেল দূর করতে পারেন, ত্বকের তৈলাক্তভাব দূর করতে পারেন, ত্বকের
উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি ও বয়সের বলিরেখাও দূর করতে পারেন এবং ত্বকের শুষ্ক তাও দূর
করতে পারে না। এই শশার রস ব্যবহারের নানা দিক আছে, আপনি চাইলে এটি এমনি রস বের
করে সারা মুখে লাগান বা শশার রস বের করে সেটার মধ্যে কাচাঁ দুধ ও লেবুর রস দিয়ে
মুখে ১০-১২ মিনিটের জন্য লাগিয়ে রাখুন আবার আপনার হাতের কাছে অ্যাভোকাডো থাকলে
সেটির অর্ধেক যুক্ত করতে পারেন।
অ্যাভোকাডোঃ একটি পাত্রে অ্যাভোকাডো নিয়ে তাতে ৩-৪ চামচ শশার রস, ২চামচ
গুড়াঁ দুধ বা কাচাঁ তরল দুধ নিয়ে সেটি একসাথে মিশিয়ে মুখে লাগাতে হবে এবং ১০-১৫
মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। অ্যাভোকাডো ভেতরে থাকা উপাদান গুলো আপনার ত্বকের শুষ্কতা
দূর করতে সাহায্য করবে।
পাকা পেঁপেঃ পাকা পেঁপে ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে বিশেষ অবদান রাখতে
পারেঃ সপ্তাহে ২-৪ দিন এটি ব্যবহার করে নিজেই এর জাদু দেখেনিন। এর জন্য একটি
পাত্রে ২-৩ চামচ মতো পেঁপেঁ নিয়ে তাতে ২ চামচ মধু মিশান এবং সেটি সারা মুখে ও
ঘাড়ের দিকে এপ্লাই করুন, ঠিক ৮-১০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
পাকা কলাঃ শুষ্ক ত্বকের যত্ন নেয়ার আরেকটি উপাদান হল পাকা কলা। একটি
পাত্রে একটি কলা অর্ধেক করে কেটে নিয়ে তাতে ১ চামচ অলিভ অয়েল বা আমন্ড অয়েল
নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে সেটি মুখে লাগিয়ে রাখুন এবং ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এটি
সপ্তাহে ৩-৪ দিন করার মাধ্যমে ত্বক হয়ে উঠবে সফট ও উজ্জ্বল।
নারিকেল তেলঃ আমরা জানি যে নারিকেল তেল চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারি
কিন্তু এটি চুলের সাথে সাথে আমাদের শুষ্ক ত্বকের মশ্চারাইজার লক
করার জন্যও অনেক উপকারী। আপনি এটি সকালে ঘুম থেকে উঠে বা গোসলের আগে ৫ মিনিট এই
নারিকেল তেল আপনার ত্বকে আস্তে আস্তে সারকিউলার মোশনের মাসাজ করুন।
বেসনঃ আমাদের ত্বকের নানান সমস্যা দূরীকরণ ও ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে
এবং ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে সবচেয়ে পরিচিত একটি উপাদান বেসন। বেসন ব্যবহার তো
বিভিন্নভাবেই করা যায় কিন্তু আপনি চাইলে এটিকে নর্মালি একটি পাত্রে ৩-৪ চামচ
বেসন নিয়ে তাতে সামান্য পানি দিয়ে প্যাক বানিয়ে ইউজ করতে পারেন অথবা বেসনের
সাথে পানির জায়গায় কিছু পরিমাণ দুধ মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
শুষ্ক ত্বকের ফেসপ্যাক
শুষ্ক ত্বকের জন্য ফেসপ্যাক ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি। গরম হোক বা শীতকাল
যেকোনো সময়ই শুষ্ক ত্বক নিয়ে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয়। হালকা মশ্চারাইজার
লাগালে শুষ্ক ত্বকের ক্ষেত্রে কোন উপকারিতা পাওয়া যায় না আবার একটু ভারী
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে দেখা দেয় ব্রণের সমস্যা। তবে, বিভিন্ন ফেসপ্যাক
ব্যবহার করার মাধ্যমে শুষ্ক ত্বকের সমস্যা গুলো থেকে আপনি অনেকটাই মুক্তি পেতে
পারেন। আজকে আপনাদের জানাবো শুষ্ক ত্বকে ব্যবহারের জন্য ঘরোয়া কয়েকটি
ফেসপ্যাক বানানোর পদ্ধতি। কারণ বাজারের কেমিক্যাল যুক্ত গুলো ব্যবহার করার
চাইতে ঘরে তৈরি করা ফেসপ্যাক বেশি নিরাপদ। এবার তাহলে জেনে নেই শুষ্ক ত্বকের
ফেসপ্যাক তৈরি করার পদ্ধতি গুলো।
অলিভ অয়েল ও ডিমের কুসুমঃ ডিমের কুসুমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই
রয়েছে, যে উপাদানটি ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। একটি বাটিতে
ডিমের কুসুম নিম এবং এর ভেতরে ১ থেক.২ ১ চামচ অলিভ অয়েল অ্যাড করুন। উপাদান
রুটি ভালোভাবে মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে রাখুন ৩০-৪০ মিনিট। আপনার ত্বকের
শুষ্কতা দূর করতে অনেক ভালো কাজ করবে।
গ্লিসারিনঃ বাইরের ধুলাবালি এবং সূর্যের তাপ আমাদের ত্বককে শুষ্ক করে
তুলতে সাহায্য করে। আর যাদের আগে থেকেই dry skin তাদের কথা বলার তো আর
অপেক্ষায় রাখেনা। তবে আপনি যদি গ্লিসারিন এর সাথে সামান্য একটি লেবুর রস
মিশিয়ে ত্বকে লাগাতে পারেন তাহলে আপনি আপনার ত্বকের দক্ষতা অনেকটাই দূর করতে
পারবেন। কারণ, গ্লিসারিন ত্বক মশ্চারাইজ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
হলুদ ও গোলাপজলের ফেসপ্যাকঃ হলুদ ও গোলাপ জল দুটি উপাদানির
রূপচর্চার কাজে অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং এই উপাদান দুটি যে কোন ধরনের স্কিনের
জন্যই বিশেষ উপযোগী। ড্রাই স্কিনে মশ্চারাইজার ধরে রাখার জন্য আপনি হলুদ
ও গোলাপজল একসাথে মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। এই প্র্যাক্টটি সারা মুখে ১৫
মাখিয়ে রেখে নরমাল ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
লেবু ও ময়দার ফেসপ্যাকঃ লেবুর রস এবং দুই থেকে তিন চামচ ময়দা ভালোভাবে
মিশিয়ে এই মিশ্রণটি সারা মুখে লাগিয়ে ৩০ মিনিটের জন্য
অপেক্ষা করুন, শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এই
প্যাকটি ড্রাই স্কিনের জন্য অনেক উপকারী এবং মুখের মৃত কোষ গুলো দূর করতেও
কার্যকরী।
পেঁপে ও দইয়ের প্যাকঃ প্রথমে পাকা পেঁপে প্রেস করে এর মধ্যে ২ চামচ টক
দই এড করুন। ভালোভাবে মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করে ফেলুন। পেঁপে ও টক দই এর এই
প্যাকটি ভালোভাবে মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে। শুকিয়ে গেলে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
টক দই ও পাকা পেঁপের এই প্যাকটি আপনার ত্বকের রুক্ষতা দূর করতে বেশ ভালো
কাজে দিবে।
চন্দন গুড়া ও গোলাপজলঃ চন্দন গুড়া যুগ যুগ ধরেই রূপচর্চার কাজে
ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিশেষ করে রুক্ষ ত্বকের যত্ন নিতে এটি বিশেষ কার্যকরী।
চন্দনের গোড়ার সাথে পরিমাণ মতো গোলাপজল মিশিয়ে কিছুক্ষণের জন্য ত্বকে
লাগিয়ে রাখুন,৩০ ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেল। সপ্তাহে ৪-৫ নিয়মিত
এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে, ধীরে ধীরে আপনার ত্বকের রুক্ষতা অনেকটা কমে আসবে।
টক দই ও মধুর প্যাকঃ দুই চামচ টক দইয়ের সাথে দুই চামচ খাঁটি মধু
মিশিয়ে ব্যাগ তৈরি করে এই প্যাকটি মুখে লাগিয়ে না শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা
করুন এবং ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে ফেলেন। মধু আপনার ত্বকের রুক্ষতা
বা শুষ্কতা দূর করতে অনেক ভালো কাজ করবে।
মুলতানি মাটি এবং চন্দন গুড়াঃ মুলতানি মাটি এবং চন্দন গুড়া দুটি
উপাদানই সুস্থ ত্বকের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দুই চামচ
মুলতানি মাটি এবং দুই চামচ চন্দন গুড়া ভালোভাবে মিশিয়ে এর মধ্যে গোলাপ জল
অথবা মধু যুক্ত করুন।২০ মিনিট পরে মুখ ধুয়ে ফেলুন, এতে আপনার
ত্বকের শুষ্কতা এবং ত্বকের টানটান ভাব দূর হবে।
শুষ্ক ত্বকের ফেসওয়াশ
যারা শুষ্ক ত্বকে ফেসওয়াশ ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত ফেসওয়াশের খোঁজ করছেন
তাদের জন্য,Dry skin এ ব্যবহার উপযোগী কিছু ভালো মানের ফেসওয়াশের নাম নিচে
উল্লেখ করা হলো।এই ফেসওয়াশ গুলো আপনার ড্রাই স্কিনের জন্য অনেক ভালো হবে
বলে আশা করছি। জেনে নিন শুষ্ক ত্বকে ব্যবহার উপযোগী কয়েকটি ভালো মানের
ফেসওয়াশের নাম।
Garnier Clean smooth cream cleanser
Vani cream gentle facial cleanser
Cetaphit clean skin cleanser
CeraVe foaming cleanser
Simple sensitive skin expert
Dove Derma Series dry skin relife
Ultra Gentle Daily Cleanser
শুষ্ক ত্বকের মশ্চারাইজার
এই বিষয়টি আর নতুন করে বলার কিছু নাই যে সুস্থ ত্বকের জন্য মশ্চারাইজার কতটা
গুরুত্বপূর্ণ। শুষ্ক ত্বক বা Dry skin মশ্চারাইজ করার জন্য আপনি দুই ধরনের
মশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন, একটি হল-বাজার থেকে ভালো ব্র্যান্ডের
মশ্চারাইজিং ক্রিম কিনে ব্যবহার করতে পারেন অথবা দ্বিতীয় উপায়টি হলো
- প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার গুলো ব্যবহার করতে পারেন। আপনাদের জন্য নিচে ভালো
ব্র্যান্ডের কিছু মশ্চারাইজার ক্রিমের নাম সাজেস্ট করা হলো। আপনি চাইলে এই
ব্র্যান্ডের মশ্চারাইজিং ক্রিম গুলো আপনার ত্বকে ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
Neutrogena
Himalaya dry skin moisturiser cream
Simple kind to skin rich moisturiser
Nivea
cere Ve moisturiser cream
Lilac Brightening Moisturiser
Aveeno moisturiser cream
শুষ্ক ত্বকের জন্য ব্যবহৃত বাজারের এই কোনটা জাতকরণ মশ্চারাইজার গুলো বাদ দিয়ে
আপনি যদি প্রাকৃতিক মশ্চারাইজার গুলো ব্যবহার করতে সবচাইতে ভালো ফলাফল
পেতে পারেন। আপনি যদি শুষ্ক ত্বকের প্রাকৃতিক মশ্চারাইজার কোনগুলো সে সম্পর্কে না
জেনে থাকেন তাহলে বিষয়টি এখনই আপনাকে জানিয়ে দিচ্ছি। শুষ্ক ত্বকের জন্য সবচাইতে
ভালো তিনটি প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার হল,
মধু
এলোভেরা জেল
গ্লিসারিন
মধুঃ মধু শুষ্ক ত্বকের প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার হিসেবে খুবই ভালো একটি
উপাদান। শুষ্ক ত্বক মশ্চারাইজ করতে নিয়মিত 20 মিনিটের জন্য ত্বকে মধু
লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন। মধুর ভেতরে থাকা উপাদানগুলো আপনার dry skin এর
রুক্ষতা দূর করতে প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার হিসেবে কাজ করবে।
এলোভেরা জেলঃ অ্যালোভেরা জেল যে কোন ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী হলেও,
এটি সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে dry skin সফট
করতে। শুষ্ক ত্বকের মশ্চারাইজার হিসেবে আপনি যদি এলোভেরা পাতা সংগ্রহ
করে সেখান থেকে জেল বের করে সেই জেলটি চুলার আছে কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করে ঘন
করে নিতে পারেন এবং এই ঘন মিশ্রণটি ঠান্ডা হলে মশ্চারাইজার হিসেবে শুষ্ক ত্বকে
ব্যবহার করেন তাহলে, ত্বকের শুষ্কতা নিয়ে আপনাকে আর চিন্তা করতে হবে না।
গ্লিসারিনঃ শুষ্কতা দূর করে ত্বক মশ্চারাইজ করতে স্কিন সাহায্য
করে। ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে গ্লিসারিনের সাথে গোলাপজল অথবা মধু মিশিয়েও
ব্যবহার করতে পারেন। এই উপাদান গুলো আপনার ত্বকের সুস্থতা দূর করতে প্রাকৃতিক
ময়শ্চারাইজার হিসেবে কাজ করবে।
শুষ্ক ত্বকের সাবান
যেকোনো সাবান ব্যবহার করলে আপনার শুষ্ক ত্বকের শুষ্কতা আরো বাড়িয়ে দিতে
পারে। এবং যার ফলে আপনি স্কিন নিয়ে করতে পারেন ঝামেলায়। এই কারণে, জেনে নিন
শুষ্ক ত্বকে কোন সাবান গুলো ব্যবহার করা উচিত। ব্যবহার উপযোগী শুষ্ক ত্বকের
সাবানগুলোর নামের তালিকা নিচে দেওয়া হল। আপনার পছন্দ মতন শুষ্ক ত্বকের
সাবান গুলো ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
ডেটল সাবান
ডাব ক্রিম বিউটি বার
বায়োটিক অরেঞ্জ পিল বডি ক্লিনজার
খাদি ন্যাচারাল সোপ
কোক বাথ সোপ বার
নিভিয়া সোপ ক্রিম কেয়ার
পিয়ারস পিওর এন্ড জেন্টাল সোপ
মেডিমিক্স আয়ুর্বেদিক ন্যাচারাল গ্লিসারিন বাথিং বার
লেভের আয়ুস টারমারিক সোপ
ওলে আল্ট্রা ময়শ্চারাইজার বার
শুষ্ক ত্বকের ফাউন্ডেশন
শুষ্ক ত্বকে যেকোনো ফাউন্ডেশন ব্যবহার করলেও পড়তে হয় অসুবিধা, এ কারণে শুষ্ক
ত্বকে ফাউন্ডেশন ব্যবহারের ক্ষেত্রেও সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। শুষ্ক ত্বকের
ফাউন্ডেশন হতে হবে ওয়েলি এবং ক্রিম টাইপের। আপনাদের সুবিধার জন্য শুষ্ক
ত্বকের উপযোগী কয়েকটি ফাউন্ডেশন এর নাম আজকে জানাবো। শুষ্ক ত্বকের ফাউন্ডেশন
গুলোর নাম যদি আপনি না জানেন তাহলে দেরি না করে এখুনি জেনে নিন।
কারণ, মেয়েদের সাজবো যে গুরুত্বপূর্ণ এবং অন্যতম উপাদান হল
ফাউন্ডেশন। তাই যাদের ড্রাই স্কিন তাদের প্রত্যেকেরই জেনে রাখা উচিত ড্রাই
স্কিনের উপযোগী ফাউন্ডেশন গুলোর নাম। শুষ্ক ত্বকে ব্যবহার উপযোগী গুলো হল,
Wet n Wild
L.A Girl Pro HD illuminating foundation
Maybelline
Fit me smooth foundation
Milani 2 in 1 foundation
মন্তব্য, আশা করছি পোস্টটি ভালোভাবে পড়ার মাধ্যমে গরমে শুষ্ক ত্বকের যত্ন
নেওয়ার এবং শুষ্ক ত্বকে ব্যবহৃত বিভিন্ন পণ্যগুলোর নাম সম্পর্কে জেনে
নিয়েছেন। যদি আপনি পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আর আপনাকে শুষ্ক
ত্বকের সমস্যায় ভূগতে হবে না। তবে অবশ্যই সতর্ক থাকবেন, আপনার স্কিন যে ধরনেরই
হোক না কেন , ত্বককে সূর্যের আলো এবং ধূলা-ময়লা থেকে দূরে রাখতে
নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url