হরমোন কি কত প্রকার - হরমোনের সমস্যা দূর করার উপায়

শরীরের সকল কার্যকলাপ ঠিক রাখে বা নিয়ন্ত্রণ করে হরমোন। হরমোন নামটির সাথে আমরা সকলেই পরিচিত থাকলেও, সবাই কি হরমোন সম্পর্কে বিস্তারিত জানি? আপনি কি জানেন যে হরমোনের ঘাটতি বা তারতম হয়ে উঠতে পারে আপনার শরীরের নিরব ঘাতক? হরমোন সম্পর্কিত এই বিষয়গুলো জানানোর জন্য আজকে আলোচনা করা হবে হরমোন কি কত প্রকার, হরমোন বেড়ে গেলে কি হয় , হরমোন কমে গেলে কি হয় এবং হরমোনের সমস্যা দূর করার উপায় সম্পর্কে।


আজকের এই পোষ্টের আলোচনার মাধ্যমে আমরা জানবো হরমোন কি কত প্রকার , হরমোন বেড়ে গেলে কি হয় , হরমোন কমে গেলে কি হয় , হরমোনের সমস্যা দূর করার উপায় সম্পর্কে। হরমোন বিষয়কে সমস্যা গুলো আপনার জানা থাকলে বিভিন্ন লক্ষণ দেখে আপনি হরমোনের তারতম‍্য সমস্যা গুলো সমাধান ঘরোয়া ভাবে করে ফেলতে পারবেন। সুতরাং হরমোন বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য জানতে হলে এ পোস্টটি সম্পন্ন মনোযোগ দিয়ে পড়ার চেষ্টা করুন।

পোস্ট সূচিপত্রঃ হরমোন কি কত প্রকার - হরমোনের সমস্যা দূর করার উপায়

হরমোন কি

আজকে আমরা আলোচনা করব হরমোন কি এই বিষয়টি নিয়ে। 'হরমোন' নামটির সাথে অনেকেই পরিচিত থাকলেও হরমোন কাকে বলে বা হরমোন কি এই বিষয়টি অনেকেরই জানা নেই। তাই আজকে আপনাদেরকে এই পোষ্টের মাধ্যমে জানাবো হরমোন কি। আর দেরি না করে চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক হরমোন কাকে বলে।

হরমোন কিঃ যে জৈব রাসায়নিক পদার্থ জীব কোষের বিভিন্ন গ্রন্থি থেকে উৎপন্ন হয়ে এবং নিঃসরিত হয়ে, কোষের বিভিন্ন কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে সেই তরল পদার্থটিকে হরমোন বলে। আরো সহজ ভাবে বলতে গেলে বলতে ভয় গ্রন্থি থেকে বের হওয়া রসকে হরমোন বলে। জীবদেহের বিভিন্ন ধরনের  গুরুত্বপূর্ণ কার্যকলাপ গুলো এই হরমোন দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হয়।হাইপোব্যালাথার্ম নামক যে জায়গাটি মস্তিষ্কে রয়েছে তার নিচে অবস্থিত হরমোন নিঃসরণের সবচেয়ে বড় গ্রন্থি যার নাম পিটুইটারি, পাসপোর্ট করা দেখতে যেটিকে মাস্টার গ্ল্যান্ড ও বলা হয়ে থাকে।

হরমোন কত প্রকার

হরমোন কি বা কাকে বলে এ বিষয়টি উপরে আমরা আলোচনা করেছি এবার আমরা ধারণা নেব হরমোন এর প্রকারভেদ বা হরমোন কত প্রকার এই বিষয়টি সম্পর্কে। হরমোন মানবদেহের বা জীব দেহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মানবদেহে হরমোনের সংখ্যা অসংখ্য, তবে হরমোনের রাসায়নিক গঠনের ওপরে ক বিবেচনা করে বিভিন্ন ধরনের হরমোনকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে, এগুলো হলো

  • লিপিড দ্রবণীয় হরমোন
  • অ্যামিনো অ্যাসিড থেকে পাওয়া হরমোন
  • টেপটাইড থেকে পাওয়া হরমোন

এই হরমোন গুলো বিভিন্ন গ্রন্থি থেকে বের হয়ে শরীরের বিভিন্ন কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে। মানব শরীরের বিভিন্ন কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণের এই অসংখ্য হরমোন এর মধ্যে থেকে আমরা এবার কিছু গুরুত্বপূর্ণ হরমোন সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করব। বিভিন্ন গ্রন্থি থেকে বের হওয়া কিছু হরমোনের প্রকারভেদ সম্পর্কে নিচে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো,

পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হরমোনঃ পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হরমোন গুলোর মধ্যে রয়েছে-গোনাডোট্রোপিক, সোমাটোট্রোপিক,থাইরয়েড উদ্দীপক হরমোন , এডরেনোকর্টিকোট্রপিন

থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হরমোনঃ থাইরক্সিন হরমোন নিঃসৃত হয় থাইরয়েড নামক গ্রন্থি ্থেকে। এই হরমোনটি শরীরের বৃদ্ধির কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে

প্যারা থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হরমোনঃ প্যারাথরমোন হরমোন নিঃসৃত হয় প্যারা থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে। এ হরমোন ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে

থাইমাস গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হরমোনঃ থাইমাস নিঃসৃত হরমোনের নাম হল থাইমসিন। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভূমিকা রাখে।

অ্যাড্রেনাল গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হরমোনঃ এ গ্রন্থি থেকে বের হওয়া রস বা হরমোন মানসিক চাপ কমাতে বিশেষ সাহায্য করে।

আইলেটস অফ ল্যাংগারহ্যানস গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হরমোনঃ শরীরের শর্করা নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করে আইলেটস অফ ল্যাংগারহ্যানস গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হরমোন।
গোনাড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হরমোনঃ গোনাড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হরমোনটি নারী এবং পুরুষের  এস্ট্রোজেন ,টেস্টোস্টেরন উৎপাদনের সাহায্য করে।

হরমোন কি কাজ করে

হরমোনের প্রকারভেদ সম্পর্কে আমরা মোটামুটি একটি ধারণা পেয়ে গেছি, এবার আমরা জেনে নিই হরমোন কি কাজ করে সে বিষয়গুলো। বিভিন্ন ধরনের হয় শরীরের বিভিন্ন ধরনের ক্রিয়া-কলাপ নিয়ন্ত্রণ করে। শরীরের যেসব ক্ষেত্রে হরমোন কাজ করে সেগুলো হলো,
খাদ্য হজম প্রক্রিয়া
  • মেজাজ
  • ঘুম
  • ঘুম রুচি
  • ত্বকের লাবণ্য
  • রক্ত চলাচল
  • ইমিউনিটি বৃদ্ধি
  • মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ
  • প্রজনন
  • শারীরিক বৃদ্ধি
আশাকরি বুঝতে পেরেছেন হরমোন আমাদের শরীরে কি কি কাজ করে। আমরা হরমোনের কাজ সম্পর্কে জেনে নিলাম এবার আমরা জেনে নেব গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি হরমোনের কাজ সম্পর্কে। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি হরমোনের বিশেষ কিছু কাজ সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো,

থাইরয়েড হরমোনঃ আমাদের গলার সামনে থাকা থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে থাইরয়েড হরমোন মিশ্রিত হয়। থাইরয়েড সাধারণত- ওজন , বুদ্ধির বিকাশ , প্রজনন ক্ষমতা , শ্বাস প্রশ্বাস , মাতৃগর্ভে থাকা ভ্রুনের বিকাশ ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

মেলোটনিন হরমোনঃ মেনোটোনিন হরমোনটি সাধারণত আমাদের ঘুম এবং ঘুম থেকে জেগে ওঠার বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করে। দিনের বেলা সূর্যের আলোতে মিলোটোনিন উৎপাদন ব্যাহত থাকে এবং সূর্যের আলো নিভে যাওয়ার পরে বারাতের অন্ধকারে মেলোটোনিন উৎপাদন শুরু হয়। এবং রাতের বেলা ঘুম আসছে এই হরমোনটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে তবে বর্তমানের ইলেকট্রিক ডিভাইস যেমন-কম্পিউটার, ল্যাপটপ , স্মার্টফোন এগুলো শরীরের মেলোটোনিন উৎপাদনে বাধার সৃষ্টি করে। আর এ কারণে রাতের বেলায় এ ধরনের ডিভাইস গুলো স্বল্পমাত্রায় ব্যবহার করা উচিত অথবা ব্যবহারের সময় নীল অথবা ব্ল্যাক চশমা পরিধান করা উচিত।

আরো পড়ুনঃ চোখের নিচের কালো দাগ দূর করার উপায়

প্রোজেস্টেরন হরমোনঃ এই হরমোনটি মহিলাদের মাসিক চক্রের উপরে কাজ করে। মানব শরীরের প্রোজেস্টেরণ তৈরি হওয়ার প্রধান স্থান হল ডিম্বাশয়ের কর্পাস লুটিয়াম। মহিলাদের শরীরে এই হরমোনের ঘাটতি দেখা দিলে অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা হয়ে থাকে।

টেস্টোস্টেরন হরমোনঃ শুক্রাণু উৎপাদনে বিশেষ যে হরমোনটির প্রয়োজন সেটির নাম হল  টেস্টোস্টেরন হরমোন।টেস্টোস্টেরন হরমোন মেজাজ নিয়ন্ত্রণে করে এবং লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে।

কারটিসোল হরমোনঃকারটিসোল হরমোন মানুষের মুড, ভয় , মানসিক চাপ  ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণের কাজ করে। এছাড়াও কারটিসোল হরমোন ব্লাড প্রেসার, প্রদাহ ইত্যাদি ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সঠিক মাত্রায় এই হরমোন শরীরে নিঃসৃত না হলে বেশ কিছু সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে যেমন -দুর্বল লাগা, ডায়রিয়া , লো প্রেসার ইত্যাদি।

এস্ট্রোজেন হরমোনঃমেয়েদের যৌন এবং প্রজনন ক্রিয়া-কলাপে বিশেষ ভূমিকা পালন করে এস্ট্রোজেন হরমোন। মেয়েদের ডিম্বাশয় এই এস্ট্রোজেন হরমোন তৈরি হয় ।এস্ট্রোজেন হরমোন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় প্রজনন নালী , মাসিক ,স্তন , চুল ,ত্বক ইত্যাদি অঙ্গগুলো।

ইনসুলিন হরমোনঃ শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা কে নিয়ন্ত্রণ করে ইনসুলিন হরমোন। এই হরমোনের কারনে কার্বোহাইড্রেট , চর্বি এবং প্রোটিন জাতীয় খাবার গুলো সহজে হজম করা সম্ভব হয়।

হরমোন বেড়ে গেলে কি হয়

স্বাভাবিকের চেয়ে হরমোনের মাত্রা কম বা বেশি দুটো কারণে শরীরে বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। আমরা পর্যায়ক্রমে হরমোন বেড়ে গেলে কি হয় এবং হরমোন গেলে কি হয় বিষয় দুটি জেনে নেব। আমরা আলোচনা করব হরমোন বেড়ে গেলে কি হয় এই বিষয়টি নিয়ে। বিভিন্ন গ্রন্থি থেকে স্বাভাবিকের তুলনায় যদি বেশি হরমোন মিশ্রিত হয় তাহলে আপনি শারীরিকভাবে যে সমস্যা গুলোর সম্মুখীন হতে পারেন সেগুলো হল।

  • গ্রোথ হরমোন এর অতিরিক্ত নিঃসরণের ফলে অনিয়ন্ত্রিত শারীরিক বৃদ্ধি করতে পারে
  • থাইরয়েড হরমোন অতিরিক্ত নিঃসরণ হলে ডিম্বাণু ও শুক্রাণু গঠনে বাধা প্রদান করে। থাইরয়েড হরমোন অতিরিক্ত নিঃসরণের ফলে বন্ধত্বের মতন অসুবিধা দেখা দিতে পারে।
  • প্রোল্যাক্টিন হরমোন সাধারনত মায়ের বুকের উৎপাদনে সাহায্য করে, আর যখন এই হরমোনটি মাত্রাধিক ভাবে নিঃসরণ হয় তখন মায়ের বুকের অতিরিক্ত উৎপাদন হয় এবং এই সময় মেয়েদের মাসিক বন্ধ থাকতে পারে
  • প্রোল্যাক্টিন হরমোন অতিরিক্ত হওয়ার কারণে বন্ধ্যা দেখা দিতে পারে এবং স্তন ব্যথা সহ অবিবাহিত মেয়েদেরও নতুন মায়েদের মতন স্তনে দুধ আসার সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
  • মেয়েদের শরীরে এন্ড্রোজেন হরমোন বেশি ফলে-অনিয়মিত মাসে, ব্রণ , ও মুখে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে অবাঞ্ছিত লোম , তলপেট ব্যাথা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরনের আমার মনের আধিকের কারণে, মাসিকের সময় অতিরিক্ত ফ্লো হতে পারে। এবং এর সাথে প্রচন্ড পেট ব্যথা থাকতে পারে

হরমোন কমে গেলে কি হয়

হরমোনের আলোচনার শুরুতেই আমরা জেনেছি যে হরমোনের প্রভাবে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রিত হয়। আর এ কারণে, স্বাভাবিকের চেয়ে কম মাত্রায় হরমোন নিঃসৃত হলে ছড়িয়ে দেখা দিতে পারে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা বা অসুবিধা। তাহলে চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক হরমোন কমে গেলে কি হয় বা হরমোন কমে গেলে কি কি সমস্যা হতে পারে। হরমোন কমে গেলে কি হয় এ বিষয়গুলো জানা থাকলে, খুব সহজেই আমরা এই সমস্যাগুলো সমাধান করতে পারব। তাহলে আর দেরি না করে চলুন জেনে নি হরমোন কমে গেলে কি হয়। বিভিন্ন হরমোনের ঘাটতির কারণে শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন,

আরো পড়ুনঃ লম্বা হওয়ার উপায়

  • শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয় গ্রোথ হরমোনের ঘাটটির কারণ
  • ফর্সা তোকে কালকে ছোপ ছোপ দাগ তৈরি হতে পারে মেলানিনের কারণে
  • থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতির কারণে হতে পারে ওজন বৃদ্ধ,রাগ , ত্বকের শুষ্কতা , চুলকানি ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতির কারণে দেখাইতে পারে চুল পড়ার সমস্যা।
  • ইস্ট্রোজেন হরমোনের ঘাটতির কারণে হতে পারে আপনার ঘুমের সমস্যা।
  • শরীরে ইনসুলিন হরমোনের অভাবে ডায়াবেটিস ছাড়াও দাঁত , চোখ , নখ , হার্ট অ্যাটাক , কিডনির সমস্যা ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে।
  • টেসটোস্টেরন হরমোনের অভাবে যৌন উত্তেজনা , পেশির গঠন এর ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি করে। এছাড়াও এ হর মনের অভাবে পুরুষের শুক্রানু সঠিক মাত্রায় উৎপাদিত হয় না

হরমোনের সমস্যা দূর করার উপায়

হরমোনের তারতম্যের কারণে সৃষ্টি হতে পারে শারীরিক ধরনের জটিলতা, হরমোনের এই তারতম্য যদি শুরুতেই সমাধান করা না যায় তাহলে এটি হয়ে উঠতে পারে আপনার শরীরের লুকিয়ে থাকা নীরব ঘাতক। এলোপ্যাথিক এবং হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার মাধ্যমে আপনি হরমোনের সমস্যা দূর করে নিতে পারেন। তবে আপনি যদি ঘরোয়া ভাবে বা অতিরিক্ত কোনো টাকা পয়সা খরচ না করে হরমোনের সমস্যা দূর করতে চান তাহলে আপনার খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। কোন কোন খাবার গুলোর মধ্যে হরমোনের সমস্যা দূর করার উপায় বা হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দূর করার উপায় রয়েছে এবার আমরা খাবার গুলো সম্পর্কে জানব। চলুন তাহলে হরমোনের সমস্যা দূর করার উপায় বা হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দূর করার উপায় গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

প্রোটিন জাতীয় খাবারঃ হরমোনের ভারসাম্য ঠিক রাখতে হলে প্রোটিন জাতীয় খাবার গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ যেমন-মাছ , মাংস , দুধ , ডিম  , ডাল ইত্যাদি।

বাদামঃ বাদাম শরীরের হরমোনের মাত্রা ঠিক রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। শরীরে হরমোনের মাত্রা ঠিক রাখার জন্য বিভিন্ন ধরনের বাদাম যেমন-কাঠবাদাম , কাজুবাদাম , পেস্তা বাদাম , আখরোট খাদ্য তালিকায় যুক্ত করতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

শাকসবজিঃ খাদ্য তালিকায় যে সবজিগুলো যুক্ত করলে আপনার হরমোনের ভারসাম্য ঠিক থাকবে সেই শক্তিগুলো হলো-গাজর,মিষ্টি আলু , বিট , টমেটো , ব্রকলি , পালং শাক , বাঁধাকপি ইত্যাদি।

ফলঃ বিভিন্ন ফলের মধ্যে যে ফলগুলো আপনার হরমোনের মাত্রা ঠিক রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে সেগুলো হল-আপেল , কলা , স্ট্রবেরি , এভোকাডো ইত্যাদি।

ঘিঃ ঘি এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ ,ডি , ই , কে । কি আপনার শরীরের হরমোনের মাত্রা করতে ভূমিকা রাখতে পারে।

ওমেগা 3 ও 6 জাতীয় খাবারঃ ওমেগা 3 ও 6 জাতীয় খাবারগুলো হরমোনের মাত্রা ঠিক রাখতে পারে। ওমেগা 3 ও 6 সমৃদ্ধ খাবার গুলো প্রধান উৎস হল-সূর্যমুখীর বীজ ও মুরগির মাংস।

থায়ামিন জাতীয় খাবারঃ ওর মনের মাথা ঠিক রাখার জন্য থায়ামিন জাতীয় খাবার গুলো অত্যন্ত জরুরী। থায়ামিন এর ঘাটতি পূরণের জন্য আপনি হারবাল টি এবং গ্রিন টি খাদ্য তালিকায় যুক্ত করতে পারেন।

এছাড়াও শরীরে হরমোনের ঘাটতি পূরণের জন্য অথবা হরমোনের তারতম্য ঠিক রাখার জন্য চা , চকলেট , কফি , কোলড্রিংস , ডাবের পানি নিয়মিত খেতে পারেন। তবে যারা ইতোমধ্যে হরমোন ভারসাম্য হীনতাই ভুগছেন তাদের জন্য কিছু খাবার সমস্যা আরো বাড়িয়ে দিতে পারে। হরমোনের তারতম্য হীনতার রোগীদের জন্য যে খাবার গুলো এড়িয়ে চলা উচিত সে খাবারগুলো হল,

  • দুগ্ধ জাত খাবার
  • রেডমি
  • আলু
  • টমেটো
  • স্টেভিয়া
  • স্যাচুরেটেড ফ্যাট
  • বেগুন
  • মরিচ

মন্তব্য, উপরিউক্ত আলোচনার মাধ্যমে হরমোন বিষয় বিভিন্ন তথ্য দিয়ে আপনাদের উপকার করার চেষ্টা করেছি, আশা করছি হরমোন বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য গুলো জানতে পেরে আপনি তো হয়েছেন। আপনাদের পরামর্শ এবং সতর্কতামূলক বার্তা হিসেবে জানাতে চাই , হরমোনের তারতম্যের দূর করতে বা হরমোনের সমস্যা দূর করতে হলে আপনাদেরকে পর্যাপ্ত ঘুম এবং পর্যাপ্ত পানি পানের অভ্যাস করতে হবে কারণ শরীরে এই দুইটি উপাদানের ঘাটের ফলে সকল কার্যকলাপ ব্যাহত হয় এবং যার ফলে হরমোনের তারতম্য দেখা দিতে পারে এবং সৃষ্টি হতে পারে শারীরিক নানান জটিলতা।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url