সহবাসের পর মাসিক না হলে করণীয় - মাসিক না হলে ঔষধ
মেয়েদের যৌন জীবন এবং বাচ্চ জন্মদানের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে রেগুলার মাসিক। তবে বিভিন্ন সমস্যার কারণে অনেকেরই দেখা যায় বিভিন্ন কারনে মাসিক বন্ধ থাকে। তাই আজকে আমরা এই পোষ্টের মাধ্যমে জানবো সহবাসের পর মাসিক না হলে করণীয় ও মাসিক না হলে ঔষধ সহ আরো বেশ কিছু বিষয় সম্পর্কে, যেমন-পিল খাওয়ার পর মাসিক না হলে করনীয় এবং পিল খাওয়ার পর মাসিক না হওয়ার কারণ গুলো সম্পর্কে।
আপনি যদি সহবাসের পর মাসিক না হলে করণীয় এবং মাসিক না হলে ঔষধ গুলো সম্পর্কে না জানেন এবং বিষয়ে পাশাপাশি আরও বিভিন্ন বিষয় যেমন-সহবাসের পর মাসিক হলে কি বাচ্চা হয়, সহবাসের কতদিন পর মাসিক বন্ধ হয় ,পিল খাওয়ার পর মাসিক না হওয়ার কারণ এই ধরনের সমস্যা বা অসুবিধা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে অবশ্যই এই পোস্ট এর শেষ অংশ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আশা করছি এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত প্রশ্নের উত্তরগুলো পেয়ে যাবেন।
সূচিপত্রঃ সহবাসের পর মাসিক না হলে করণীয় - মাসিক না হলে ঔষধ
- সহবাসের পর মাসিক না হলে করণীয়
- সহবাসের পর মাসিক হলে কি বাচ্চা হয়
- সহবাসের কতদিন পর মাসিক বন্ধ হয়
- পিল খাওয়ার পর মাসিক না হওয়ার কারণ
- পিল খাওয়ার পর মাসিক না হলে করনীয়
- মাসিক না হলে ঔষধ
সহবাসের পর মাসিক না হলে করণীয়
অনেক মেয়েরাই একটি প্রশ্নের উত্তর জানতে চান, সেটি হল সহবাসের পর মাসিক না হলে
করণীয়। আজকে আপনাদের জানাবো সহবাসের পর মাসিক না হলে করনীয় সম্পর্ক। শারীরিক
যদি কোন জটিলতা না থাকে তাহলে সহবাসের পরে মাসিক না হওয়ার পেছনে সাধারণত দুইটি
কারণ থাকতে পারে প্রথমত - প্রেগনেন্সির কারণে এবং দ্বিতীয়ত- অনিয়মিত
মাসিকের কারণে। তাহলে চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক সহবাসের পরে মাসিক না হলে
করণীয় বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে।
**
সহবাসের পরে মাসিক না হলে সর্বপ্রথমেই আপনাকে যে কাজটি করতে হবে সেটি হল প্রেগনেন্সি টেস্ট করা।মাসিক মিস হওয়ার পর প্রেগনেন্সি টেস্টের সঠিক রিপোর্ট পেতে হলে নির্ধারিত মাসিকের তারিখ থেকে অন্ততপক্ষে ১৫ দিন পরে প্রেগনেন্সি টেস্ট করতে হবে।সহবাসের পরে মাসিক না হলে প্রেগনেন্সি টেস্টের সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হলো , হাতের কাছে থাকা যেকোন ঔষধের ফার্মেসি থেকে প্রেগন্যান্সি টেস্টর স্ট্রিপ নিতে হবে। এরপর রাতে সারারাত ঘুমানোর পর সকালে সর্বপ্রথম যখন প্রসাব করবেন, একটি পরিষ্কার পাত্রে সেই প্রসবের নমুনা সংগ্রহ করুন , তারপর দোকান থেকে আনা স্ট্রিপটি খাড়া ভাবে রাখুন, তবে খেয়াল রাখবেন কোন ভাবেই যেন নির্ধারিত লাইনের বাইরে চলে না যায়।এ পদ্ধতিটি ছাড়াও ঘরোয়া ভাবে প্রেগনেন্সি টেস্ট করার আরো বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি রয়েছে যেমন - সাবান, শ্যাম্পু, চিনি, টুথপেস্ট , সরিষার গুড়া , ভিনেগার, বেকিং সোডা ,ব্লিচিং পাউডার ,ডেটল মাধ্যমে প্রেগনেন্সি টেস্ট করিয়ে নিতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ
প্রেগনেন্সি টেস্টের ঘরোয়া পদ্ধতি
প্রেগনেন্সি টেস্ট রিপোর্ট যদি নেগেটিভ আসে তাহলে, মাসিক না হওয়ার কারণ হিসেবে ধরে নিতে হবে এটি অনিয়মিত মাসিকের জন্য। তাই অনিয়মিত মাসিকের ক্ষেত্রে সহবাসের পর মাসিক না হলে করণীয় হিসেবে আপনাকে অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা সমাধানের জন্য আপনি খেতে পারেন কাঁচা পেঁপে , কাঁচা হলুদ , অ্যালোভেরার রস, আদা , জিরা , পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গুলো। এছাড়াও অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা দূর করার জন্য নিয়মিত সুদ চর্চার অভ্যাস করুন পর্যাপ্ত পানি পান করা ,বিশ্রাম নেয়া এবং স্ট্রেস মুক্ত থাকার চেষ্টা করুন। এবং এরপরেও যদি অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা থাকে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারি পরামর্শ ও তাদের ওসব সেবনের মাধ্যমে এটি সমাধানের চেষ্টা করুন। আশা করছি সহবাসের পর মাসিক না হলে করণীয় বিষয় সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন।
সহবাসের পর মাসিক হলে কি বাচ্চা হয়
আমরা আজকে জানার চেষ্টা করব সহবাসের পর মাসিক ও বেশি বাচ্চা হয় এই বিষয়ে।
অনেকেই বিভিন্ন সময় সহবাসের পর মাসিক হলে কি বাচ্চা হয় এই বিষয়টি জানতে চেয়ে
থাকেন। সহজ ভাবে বলতে গেলে মেয়েদের ডিম্বাণুর ভেতরে যখন শুক্রাণে প্রবেশ করে সেই
সময় প্রাকৃতিকভাবে মেয়েদের প্রজনন অঙ্গ জরায়ুর মুখ বন্ধ হয়ে যায় আর এই
কারণে, প্রেগন্যান্ট অবস্থায় মেয়েদের মাসিক কোনোভাবেই সম্ভব নয় , আর সহবাসের
পর যদি মাসিক হয় তাহলে কোনভাবেই বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। তবে অনেক সময়
প্রেগন্যান্ট অবস্থাতেও যোনিপ দিয়ে সামান্য রক্ত আস্তে দেখা যায় যেটাকে মাসিক
হিসেবে ধরা হয় না। প্রেগন্যান্ট অবস্থায় যদি কোন কারণে জরায় মুখ পরীক্ষা
করা প্রয়োজন পরে সেক্ষেত্রে যোনিপথে রক্ত আসতে পারে, প্রেগনেন্সি অবস্থায়
সহবাসের কারণে সামান্য রক্ত মাঝে মধ্যে দেখা দিতে পারে।
**
দুই একটি সাধারণ কারণ ছাড়া যদি গর্ভাবস্থায় যোনি পথে রক্ত আসে এবং সেই রক্তক্ষরণের সাথে ব্যথা অনুভব হয় তাহলে আপনার উচিত হবে দ্রুত কোন গাইনি ডক্টরের পরামর্শ নেয়া কারণ এ ধরনের পরিস্থিতি শারীরিক জটিলতার কারণেই হয়ে থাকে। আর এছাড়াও গর্ভাবস্থায় যোনিপথে বা মাসিকের রাস্তায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ মিস ক্যারেজের লক্ষণ হতে পারে। তাহলে বুঝতেই পারছেন সহবাসের পরে মাসিক হলে কোনভাবেই বাচ্চা হওয়া সম্ভব নয়। আশা করছি ,সহবাসের পর মাসিক হলে কি বাচ্চা হয় কি এই প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছেন।
সহবাসের কতদিন পর মাসিক বন্ধ হয়
যারা বিবাহিত মহিলা রয়েছেন এবং বাচ্চা নেয়ার কথা চিন্তা করছেন তারা প্রায়ই একটি প্রশ্ন করে থাকেন যে সহবাসের কতদিন পর মাসিক বন্ধ হয়। তাই আজকে আমরা জানবো সহবাসের কত দিন পর মাসিক বন্ধ হয়। আর এই প্রশ্নের উত্তরটি জানানোর জন্য প্রাসঙ্গিক কিছু কথা বলার প্রয়োজন সেটি হল,মেয়েদের মাসিক চক্রের একটি নির্ধারিত সময় রয়েছে এই সময়টি হল সাধারণত ২৮ থেকে ৩৫ দিন তবে কারো কারো ক্ষেত্রে মাসিক চক্রের এই সময়টি ২৬ থেকে ৩২ দিনে হয়ে থাকে। সাধারণ মাসিক চক্রের নিয়মে অর্থাৎ যেসব মেয়েদের মাসিক চক্র ২৮ -৩৫ মধ্যে হয়ে থাকে তাদের ওভুলেসন অর্থাৎ বাচ্চা কনসেপ এর সময় হল মাসিক শুরুর ৭ম তম দিনের পর থেকে ২১ তম দিনের আগে পর্যন্ত।
পিল খাওয়ার পর মাসিক না হওয়ার কারণ
অনেক সময় দেখা যায় পিল খাওয়ার পরও মহিলাদের মাসিক হয় না , আর এই কারণে অনেকেই উদ্বিগ্ন থাকেন এবং জানতে চান পিল খাওয়ার পর মাসিক না হলে করণীয় বিষয় সম্পর্কে। চলুন আজকে তাহলে পিল খাওয়ার পর মাসিক না হওয়ার কারণ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যায়। নিচে পিল খাওয়ার পরেও মাসিক না হওয়ার সম্ভাব্য কারণগুলো তুলে ধরা হলো।
সঠিক নিয়মে পিল না খাওয়াঃ অনেক সময় দেখা যায় যারা পিল খাওয়ার মাধ্যমে জন্ম নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন তারা রেগুলার বা সঠিক নিয়মে এই পিল গুলো সেবন করেন না। অনেকে কোনদিন ভুলবশত পিল না খেলে ভেবে থাকেন পরের দিন দুটো পিল একসাথে খেয়ে নিলেই চলবে আসলে এ সকল ভ্রান্ত ধারণার কারণে অনেক সময় দেখা যায় পিল খাওয়ার পরেও নিজেদের অজান্তেই বাচ্চা কনসেপ করেছে। সেক্ষেত্রে আপিল খাওয়ার পরেও মাসিক না হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই পিল খাওয়ার পরে মাসিক না হলে অবশ্যই প্রথমে আপনার প্রেগনেন্সি টেস্ট করান এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
**
হরমোনাল ব্যালেন্সের তারতম্যঃ শরীরে হরমোনাল ব্যালেন্সের তারতম্যের কারণে অনেক সময় অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা দেখা দেয় সে ক্ষেত্রে পিল খাওয়ার পর মাসিক নাও হতে পারে। বিশেষ করে পিল খাওয়ার পরে অনেক সময় এই পিলের প্রভাবেও শরীরের হরমোনাল ব্যালেন্সের তারতম্য দেখা দেয় আর যে কারণে ফিল গ্রহণের পরেও মাসিক না হওয়ার সমস্যাটি হয়ে থাকে।
থাইরয়েডঃ যে সকল নারীদের থাইরয়েডের সমস্যা আছে তাদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ওজন এর
সমস্যা দেখা দেয়। আর শারীরিক ওজন অতিরিক্ত বেড়ে গেলে সে ক্ষেত্রে কে হরমোনাল
ব্যালেন্স অনেকাংশে কমে যায় এবং যার ফলে পিল খাওয়ার পরেও মাসিক বন্ধ থাকার অথবা
অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা দেখা দেয়।
পুষ্টিহীনতাঃঃপিল খাওয়ার পরেও মাসিক না হওয়ার আরেকটি কারণ হতে পারে শরীরের
পুষ্টিহীনতা। অধিকাংশ মেয়েদের শরীরে শারীরিক চাহিদা অনুযায়ী পুষ্টি থাকে না আর
এই কারণে অনিয়মিত মাসিক, দুই মাস মাসিক বন্ধ থাকা এবং পিল খাওয়ার পরেও মাসিক
বন্ধ থাকার সমস্যা গুলো দেখা দেয়।
পিল খাওয়ার পর মাসিক না হলে করনীয়
পিল খাওয়ার পরে মাসিক না হওয়ার কারণ গুলো তো আমরা জেনে নিয়েছি। এবার আমাদেরা জানবো পিল খাওয়ার পর মাসিক না হলে করনীয়। যদি আপনার পিল খাওয়ার পর মাসিক না হয় তাহলে সর্ব প্রথমে আপনাকে যে কাজটি করতে হবে সেটি হল প্রেগনেন্সি টেস্ট। ঘরোয়া ভাবে প্রেগনেন্সি টেস্ট অথবা দোকান থেকে প্রেগনেন্সি টেস্টের স্ট্রিপ এর মাধ্যমে প্রেগন্যান্সি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পরে , যত দ্রুত সম্ভব আপনাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
আরো পড়ুনঃ মেয়েদের অনিয়মিত মাসিকের কুফল
আর যদি দেখেন যে প্রেগনেন্সি টেস্ট এর রিপোর্ট নেগেটিভ তাহলে অন্য যে সকল কারণে পিল খাওয়ার পরেও মাসিক বন্ধ থাকে সেই সকল সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করতে হবে আর এই কাজটি করার জন্য আপনি স্বাস্থ্য কর্মীর পরামর্শ নিতে পারেন এবং সেই অনুযায়ী আয়রন ট্যাবলেট এর পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে পারেন। আর যদি হরমোনাল কোন সমস্যা থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে হরমোনাল প্রবলেম গুলো সলভ করার জন্য ডাক্তারি পরামর্শ গ্রহণ করবেন। আশা করছি,পিল খাওয়ার পর মাসিক না হলে করনীয় বিষয় সম্পর্কে বুঝেছেন।
মাসিক না হলে ঔষধ
অনেক সময় দেখা যায় বিভিন্ন কারণে মাসিক বন্ধ থাকবে এবং সেই মাসিক রেগুলার করার
জন্য আমাদের প্রয়োজন পড়ে মাসিক না হলে ঔষধ খাওয়ার। সে ক্ষেত্রে আমাদের জন্য
মাসিক না হলে ঔষধ এর নাম গুলো জেনে রাখার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। তাই আজকে
আমরা মাসিক না হলে ঔষধ এর নাম গুলো জেনে রাখব। আপনি যদি মাসিক না হলে ঔষধ এর নাম
গুলো না জেনে থাকেন তাহলে এখনি এই ঔষধের নাম গুলো জেনে নিতে পারেন। হলো নিচে
মাসিক না হলে ঔষধের নাম এবং এই ঔষধ গুলো কোন কোম্পানির সেগুলো তুলে ধরা হলো।
- Renata কোম্পানির ঔষধ - Normens 5mg
- Square কোম্পানির ঔষধ - Menoral
- Acme কোম্পানির ঔষধ - Feminor
- Incepta কোম্পানির ঔষধ - Noteron
- Health care কোম্পানির ঔষধ - Mensil N
- ACI কোম্পানির ঔষধ - Menogia
- Nuvista কোম্পানির ঔষধ - Norestin
মাসিক না হওয়ার আরো বেশ কিছু ঔষধ রয়েছে তবে উপরে দেওয়া এই ঔষধ গুলো অত্যন্ত জন এবং বহু পরিচিত হিসেবে শুধু এই ওষুধ গুলোর নাম উল্লেখ করা হলো।
মন্তব্য, আশা করছি এই পোস্টের মাধ্যমে ভালোভাবে জেনে নিয়েছেন সহবাসের পর মাসিক না হলে করণীয় ও মাসিক না হলে ঔষধ এর নাম সহ আপনাদের কাঙ্খিত প্রশ্নের উত্তরগুলো। আপনার যদি অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে অচিরেই এটি দূর করার চেষ্টা করুন কারণ, মাসিকের অনিয়মিত সমস্যাটি দিনে দিনে জটিলতা ধারণ করতে পারে এবং আপনাকে বন্ধত্বের দিকে নিয়ে যেতে
নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url