সিজারের কতদিন পর জার্নি করা যায় - সিজারের পর করনীয় ৯টি বিষয়

আজকে আপনাদের সাথে সিজার সম্পর্কিত দুইটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব ,আর এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় দুটি হলো সিজারের কতদিন পর জার্নি করা যায় এবং সিজারের পর করনীয় ৯টি বিষয় সম্পর্ক। আর এই বিষয়ে দুটি যদি আপনি ভালোভাবে না জানেন তাহলে সিজারের পরবর্তী সময়ে আপনার বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।

তাই যারা সিজার করিয়েছেন বা করানোর কথা চিন্তা করছেন তাদের উভয়েরই জেনে রাখা উচিত  সিজারের কতদিন পর জার্নি করা যায় , এই বিষয়টি জেনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ এ কারণে যে আমাদের বিভিন্ন প্রয়োজনে দেশের একই স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত করার প্রয়োজন পড়ে অথবা অনেক সময় দেশের বাইরে যাওয়ারও প্রয়োজন পড়ে। তাই আপনি যদি বিস্তারিতভাবে না জেনে থাকেন  সিজারের কতদিন পর জার্নি করা যায় এই বিষয়টি তাহলে , হয়তোবা আপনার এবং আপনার সন্তান উভয়েরই সমস্যা হতে পারে।সিজারের কতদিন পর জার্নি করা যায় এই বিষয়টি বিস্তারিত জানার পাশাপাশি আপনাদের আরো একটি বিষয়ে খুব ভালোভাবে জেনে রাখা উচিত আর সে বিষয়টি হলো সিজারের পর করনীয় কারণ এই বিষয়টিও যদি আপনি ভালোভাবে না জানেন তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনার সিজারের ক্ষতস্থানে ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হতে পারে এবং সে ক্ষেত্রে দেখা দিতে পারে সিজার পরবর্তী ইনফেকশন, তাই আজকে আপনাদের সিজারের পর করনীয় ৯টি বিষয় সম্পর্কে জানাবো। তাহলে চলুন সিজারের কতদিন পর জার্নি করা যায় এবং সিজারের পর করনীয় ৯টি বিষয় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

সিজারের কতদিন পর জার্নি করা যায়

সিজারের কতদিন পর জার্নি করা যায়া এই প্রশ্নটিও অনেকের মধ্যে আসে। কারণ বিভিন্ন প্রয়োজনে একই স্থান থেকে, স্থান অন্য স্থানে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে বা জার্নি করতে হয়। তাই এই বিষয়টিও জেনে রাখা উচিত সিজারের কতদিন পর জার্নি করা যায়।তায় আজকে চলুন এ বিষয়টি জেনে নেয়া যাক।আসলে সিজারের পরে এ সকল বেশিরভাগ বিষয়গুলোই নির্ভর করে শারীরিক সুস্থতা বা শরীর ক্ষত সারিয়ে কত দ্রুত সেরে উঠতে পারছে এর উপরে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ডাক্তাররা অন্তত পক্ষে ৩ মাস কোন প্রকার লং জার্নি না করাটি পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

আরো পড়ুনঃ লেবুর উপকারিতা

**

তবে আপনি যদি সঠিক নির্দেশনা মতন চলার মাধ্যমে সিজারের অপারেশনের ক্ষত দ্রুত সারিয়ে উঠতে পারেন তাহলে সেক্ষেত্রে দেড় দুই মাস পরে ছোটখাটো জার্নিগুলো করতে পারবেন। কাটায় স্থান ভালোভাবে না শুকাতেই আপনি যদি যে কোন প্রকার জার্নিগুলো করেন তাহলে, গাড়ির ঝাকুনিতে অথবা যখন গাড়ির জোরে ব্রেক দেয় সেই সময় ঝাকুনি লাগার ফলে আপনার পেটে অতিরিক্ত ব্যথা হতে পারে। তাই সিজারের অপারেশনের পর সম্পূর্ণরূপে সুস্থ হওয়ার জন্য অন্ততপক্ষে ৩ মাস লং জার্নিগুলো না করাই ভালো। আশা করছি সিজারের কতদিন পর জার্নি করা যায় বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। সিজারের পর তিন মাসে আগে জার্নি করা মা এবং সন্তান দুজনের জন্যই অসুবিধা দায়ক।

সিজারের পর করনীয়

সিজারের পরে কয়েকটি নিয়ম কানুন যদি মেনে চলেন তাহলে , খুব দ্রুত অপারেশন থেকে সুস্থ হতে পারবেন। দ্রুত স সেরে উঠার জন্য প্রথমে আপনাকে জানতে হবে, সিজারের পর করণীয় বিষয়গুলোস সম্পর্কে।সিজারের রোগী দের পেটে সেলায় দিয়ে অপারেশ্অন করা  অথবা কসমেটিক সার্জারি করা।সিজার আপনি যেভাবেই করান না কেন , সিজারের পরে এ নিয়ম গুলো মেনে চলা জরুরি।তাহলে চলুন সিজারের পরে করনীয় বিষয় গুলো সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।নিচে সিজারের পর করনীয় ৯টি বিষয় তুলে ধরা হলো,

**

ভারী কাজ না করাঃ সিজারের পরে কিছুদিন ভারি কাজ কর্ম ও সিঁড়ি দিয়ে বেশি  উঠা নামা বন্ধ রাখতে হবে।খুব বেশি হলে ২-৩ কেজি ওজন উঠাতে পারেন। তবে ভারী কাজকর্ম না করলেও। স্বাভাবিক উঠা চলা ,হাঁটাহাঁটি করলে সমস্যা নেই বরঞ্চ আরো ভালো। স্বাভাবিক হঁটা চলা শরীরে রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া ভালো থাকবে যা আপনাকে দ্রুত সরে উঠছে সাহায্য করবে।

ক্যালরিযুক্ত খাবার গ্রহণ করাঃ সিজারের পরে শারীরিক দুর্বলতা কাটানোর জন্য এবং সিজারিয়ান মায়ের ও বাচ্চার সুস্থতার জন্য ক্যালোরি যুক্ত খাবার গুলো বেশি গ্রহণ করতে হবে।

**

ভিটামিন সি জাতীয় খাবার গ্রহণ করাঃ সিজারের পরে সিজারিয়ান মায়ের খাদ্য তালিকার ওপর বিশেষ নজর দেওয়া উচিত। কাটা স্থান দ্রুত শুকানোর জন্য আপনাকে বেশি বেশি ভিটামিন সি জাতীয় খাবার গুলো খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। কারণ ভিটামিন সি জাতীয় খাবার গুলো শরীরের কাঁটা এবং ক্ষত স্থান দ্রুত সারিয়ে তুলবে।

তেল মশলা জাতীয় খাবার কম খাওয়াঃ সিজারের পরে কিছুদিন অতিরিক্ত তেল মশলা জাতীয় খাবার কম খেতে হবে। কারণ এই সময় গ্যাস হওয়ার সমস্যা বেশি দেখা যায়, আর যদি ভাজাপোড়া বা তেল মশলা জাতীয় খাবার বেশি খাওয়া হয় তাহলে অতিরিক্ত গ্যাস দেখা দিবে যার রোগীর স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। তাই সিগারেটের পরে তেল মশলা জাতীয় খাবার গুলো বাদ দিয়ে সহজে হজম হয় এই ধরনের খাবার গুলো খেতে হবে।

প্রচুর পানি পান করাঃসিজারের পর রোগীকে প্রচুর পরিমানে পানি পান করতে হবে।বেশি বেশি পানি পানের ফলে বাচ্চা বুকের দুধ পাবে এবং রোগীর শরীর থেকে দূষিত পদার্থগুলো প্রসাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যাবে।তাছাড়া সিজারের পরে কিছুদিন যেহেতু এন্টিবায়োটিক এবং বিভিন্ন ঔষধ খেতে হয় এই কারণে শরীরে পানির ঘাটতি পূরণের জন্য বেশি বেশি পানি খাওয়া উচিত।

রক্তবর্ধক খাবার গুলো খেতে হবেঃ সিজারের পরে অধিকাংশ মহিলার এই রক্তশূন্যতার সমস্যা দেখা দেয় এর কারণ হলো, সিজারের অপারেশনের সময় শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে রক্তক্ষরণ হয়। তাই রক্তশূন্যতা দূর করার জন্য সিজারের পরে রোগীকে শরীরে রক্ত তৈরি করে এই ধরনের খাবারগুলো খেতে দেওয়া প্রয়োজন। যেমন-কবুতরের মাংস , বেদানার রস ইত্যাদি জাতীয় খাবার গুলো। এতে করে রোগীর শরীরে দ্রুত রক্তশূন্যতা দূর হবে এবং দ্রুত ছেড়ে উঠতে পারবে।

আরো পড়ুনঃ দাঁত ব্যথা হলে করণীয় এবং দাঁত ব্যথার দোয়া

পায়খানা স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করাঃ সিগারেট পরে কোন অবস্থাতেই কোষ্ঠকাঠিন্য হয় এমন পরিস্থিতি তৈরি করা যাবে না। তাই সিজারের পর ফায়বার সমৃদ্ধ খাবারগুলো বেশি বেশি খেতে হবে যাতে করে কোষ্ঠকাঠিন্য না হয়। সিজার করে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিলে দ্রুত এটি চালিয়ে নেওয়া উচিত কারণ কোষ্ঠকাঠিন্য হলে সিজারের কাটা স্থানে চাপ পড়বে এবং এখান থেকে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।

পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রাম নেওয়াঃ সিজারের পর রোগীর জন্য পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রাম নেওয়া অত্যন্ত জরুরী। কারণ সিজারের সময় রোগীর শরীরের উপর দিয়ে প্রচুর চাপ যায়। এবং অধিক মাত্রায় রক্তক্ষরণের ফলে শরীর অত্যন্ত দুর্বল হয় এই কারণে সিজারের পরে দ্রুত শরীরের এই ক্ষতি গুলো  পুষিয়ে নেওয়ার জন্য অবশ্যই পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রাম নেওয়া প্রয়োজন।

সিজারের কাটা স্থান পরিষ্কার এবং জীবানো মুক্ত রাখতেঃ সিজারের পরে যাতে ইনফেকশন না হয়ে যায় এই কারণে সচেতন থাকতে হবে এবং সকল স্থানটি প্রতিদিন ড্রেসিং করতে হবে।

মন্তব্য , আশা করছি আলোচনাটি মনোযোগ সহকারে পড়ার মাধ্যমে আপনারা সিজারের কতদিন পর জার্নি করা যায় এবং সিজারের পর করনীয় ৯টি বিষয় সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিয়েছেন। যদিও বর্তমান সময়ে সিজারের ব্যাপারটি আমাদের মাঝে অত্যন্ত কমন হয়ে দাঁড়িয়েছে কিন্তু তারপরেও সিজারিয়ান ডেলিভারি ব্যাপারটি অত্যন্ত সেনসিটি , আর তাই সিজারের পরে সিজারের কতদিন পর জার্নি করা যায় এবং সিজারের পর করনীয়  বিষয় গুলো সহ সিজারের পরবর্তী সময়ের সকল সতর্কতা মেনে চলা উচিত কারণ এতে মা এবং সন্তান দুজনেরই স্বাস্থ্যা ভালো থাকবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url