আজকে আপনাদেরকে জানাবো পারফেক্ট মিষ্টি দই বানানোর ঘরোয়া রেসিপি। আপনারা অনেকেই ঘরোয়া ভাবে পারফেক্ট দই বানাতে গিয়ে বারবার ব্যার্থ হন আর এই ব্যর্থ হওয়ার পেছনে মূল কারণ হলো পারফেক্ট মিষ্টি দই বানানোর ঘরোয়া রেসিপি সঠিক ভাবে না জানা। তাই আজকে আপনাদেরকে জানাবো পারফেক্ট মিষ্টি দই বানানোর ঘরোয়া রেসিপি। এই রেসিপি জানা থাকলে আপনারা খুব সহজেই দোকানের মতন সুঘ্রাণ যুক্ত মিষ্টি দই ঘরে বানিয়ে ফেলতে পারবেন।
আপনারা যারা মিষ্টি ঘরোয়া ভাবে একেবারে দোকানের মতন পারফেক্ট বানাতে চান তাহলে অবশ্যই আজকের এই পোস্টটি সম্পন্ন মনোযোগ সহকারে পড়ুন, কেননা আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আপনাদেরকে জানাবো পারফেক্ট মিষ্টি দই বানানোর ঘরোয়া রেসিপি। আপনাদের মধ্যে অনেকেই পারফেক্ট দই বানানো রেসিপি জানতে চান, তাই আজকে খুব সহজভাবে এবং অল্প সময়ের মধ্যে কিভাবে আপনারা পারফেক্ট দই বানাতে পারেন সেটি শেখাবো। তাহলে চলুন আর দেরি না করে রেসিপিটি জেনে নেওয়া যাক।
মিষ্টি দই বানানোর ঘরোয়া রেসিপি
প্রথমেই আপনাদেরকে দই বানানোর জন্য কিছু উপকরণ রেডি করতে হবে। তাই দই বানানোর শুরু করার আগে চলুন জেনে নেওয়া যাক কি কি উপকরণ লাগছে।পারফেক্ট মিষ্টি দই বানানোর ঘরোয়া রেসিপি তৈরির জন্য যে উপকরণগুলো লাগবে সেগুলো হলো,
দুধ ১ লিটার
বীজ দই এক টেবিল চামচ,
চিনি পরিমাণমতো।
পারফেক্ট মিষ্টি দই বানানোর ঘরোয়া রেসিপি এর জন্য আমাদের প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো জানা হয়ে গেছে তাই এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক পারফেক্ট মিষ্টি দই বানানোর ঘরোয়া রেসিপি এর প্রস্তুত প্রণালী।
প্রস্তুত প্রণালী: জেনে রাখা ভালো যে দুধ থেকে দই হতে ল্যাক্টোব্যাসিলাস নামক ব্যাকটেরিয়া দায়ী। গাজন প্রক্রিয়ায় এরা দুধের ল্যাকটোজকে ভেঙে ল্যাকটিক এসিড উৎপন্ন করে যা দুধকে দইয়ে পরিনত করে। এখন প্রস্তুত প্রণালীতে আসা যাক। প্রথমে খাঁটি এক লিটার দুধে পরিমাণমতো চিনি দিয়ে জ্বালিয়ে আধা লিটার করে নিয়েছি। অন্য একটা পাত্রে এক টেবিল চামচ পানি দিয়ে তার মধ্যে চিনি দিয়ে ঘনঘন নেড়েচেড়ে ক্যারামেল বানিয়ে সেটা ফুটতে থাকা দুধের মধ্যে ঢেলে দিয়েছি।
এতে যেমন দেখতে সুন্দর লাগবে তেমনি দোকানের দইয়ের মতো ঘ্রাণ আসবে এবং খেতেও অসাধারণ হবে। এখন চুলা বন্ধ করে চামচ দিয়ে নেড়ে দুধটাকে উষ্ণ গরম অবস্থায় নিয়ে এসেছি! এমনভাবে ঠান্ডা করেছি যেন আঙুল দুধের মধ্যে দিয়ে ৮-১০ সেকেন্ড অনায়াসে সহ্য করা যায়! তখন এর মধ্যে বীজ দই বা মিষ্টি দই ভালোভাবে ফেটিয়ে দুধের মধ্যে মিশাতে হবে। বীজ দই মেশালে চিনি একটু বেশি দিতে হবে! যেহেতু বীজ দইটা টক এবং খেতেও টক-মিষ্টি লাগবে। তবে আমি মিষ্টি দই মিশিয়েছি যাতে খেতে শুধু মিষ্টি লাগে। তারপরে একটা হটপটে দুধটা ঢেলে নিয়ে ৬-৭ ঘণ্টার জন্য স্থিরভাবে রেখে দিয়েছি। ৬ ঘণ্টা পর পারফেক্ট দই জমে গেলে সেটা কয়েক ঘণ্টার জন্য নরমাল ফ্রিজে রেখে দিয়েছি। তারপরে পরিবেশন করেছি।
বীজদই: আপনি যদি কাঁচা দুধ একটা পাত্রে ঢেকে রেখে কিচেন বা একটু উষ্ণ জায়গায় রেখে দেন তাহলে যে দইটা জমবে সেটাই বীজ দই! বীজ দই সবসময় টক হয়! টক দইটাকেই বীজ দই বলা হয়! দোকানে যে টক দই পাওয়া যায় সেটাও কিন্তু বীজ দই! অর্থাৎ দইয়ের যে বেসিক পদ, সেটাকেই বীজ দই বলে।
ক্যারামেল: কড়াইয়ে এক টেবিল চামচ পানি নিয়ে তার মধ্যে এক টেবিল চামচ চিনি দিয়ে যদি অনবরত নাড়তে থাকেন তাহলে দেখবেন পানি আস্তে আস্তে টানবে এবং চিনিটা হালকা সোনালী রং ধারণ করবে! যখন চিনি এভাবে জ্বাল দিতে দিতে গাঢ় বাদামি রং ধারণ করবে সেটাকেই ক্যারামেল বলে। তবে খেয়াল রাখতে হবে গাঢ় বাদামি রং হবার সাথে সাথেই চুলা থেকে কড়াই সরিয়ে নিতে হবে; না হলে ক্যারামেল পুড়ে যাবে।
কিছু টিপ্স: পারফেক্ট দই বানানোর জন্য কিছু টিপ্স দিলাম।
১। খাঁটি দুধ হতে হবে। তাহলে খেতে বেশি সুস্বাদু হবে।
২। দুধে যখন প্রথম বলক আসবে তখন পরিমাণমতো চিনি দিতে হবে।
৩। দুধ বারবার নাড়তে হবে যাতে দুধে সর না পড়ে।
৪। ১ লিটার দুধ জ্বালিয়ে ৫০০-৬০০ মিলিলিটারে নিয়ে আসতে হবে অথবা দুধ জ্বাল দিতে দিতে যখন দেখবেন দুধটা হালকা বাদামী রং ধারণ করছে তখন বুঝবেন দুধটা দইয়ের জন্য পারফেক্ট এবং এক লিটার দুধে ১ থেকে দেড় টেবিল চামচ বীজ দই যথেষ্ট।
৫। বীজ দই ফ্রিজে থাকলে সেটা বের করে আগে রুম টেম্পারেচারে নিয়ে আসতে হবে এবং সেটা থেকে পানি ঝরিয়ে ভালোভাবে ফেটিয়ে দুধের সাথে মিশাতে হবে।
৬। মনে রাখতে হবে বীজ দই মেশানোর সময় দুধ যেন বেশি ঠান্ডা না হয় আবার বেশি গরম না হয়। দুটোর একটাও হলে দই জমবে না। খেয়াল রাখতে হবে যেন দুধটা কুসুম গরম থাকে।
৭। আপনি যেটাতে দই বসাবেন সেটা যেন ভেজা না হয়। কাপড় বা টিস্যু দিয়ে মুছে তারপরে দুধ ঢালবেন।
৮। দই জমেছে কিনা সেটা দেখার জন্য একটু পরপর ঢাকনা খুলে উঁকি মারা যাবে না। এতে দই পারফেক্ট হবে না। হটপটে দই জমতে ৬-৭ ঘণ্টা লাগবে। তবে হটপটে না রেখে কাঁথা-কম্বল দিয়ে মুড়িয়ে রাখলে ১০ ঘণ্টার মতো লাগতে পারে দই জমতে।
অনেকের দই বসে না। আবার বসলেও পানি জমে যায়। যদি বসেও যায় উপরে আবার সর পড়ে না। আশা করছি এগুলো অনুসরণ করলে পারফেক্ট দই বসাতে পারবেন এবং আমার মতো দইয়ের উপর মোটা সর পড়বে যেটা খেতে অসাধারণ লাগবে।
মন্তব্য, আশা করি আজকের পোষ্টের মাধ্যমে সহজ ভাবে উপস্থাপন করা পারফেক্ট মিষ্টি দই বানানোর ঘরোয়া রেসিপি আপনাদের ভালো লেগেছে এবং এই রেসিপিটির মাধ্যমে খুব সহজেই আপনারা পারফেক্ট মিষ্টি দই তৈরি করে ফেলতে পারবেন। যারা মিষ্টি দই বানাতে দিয়ে বারবার ব্যর্থ হয়েছেন তারা আজকের এই পদ্ধতিটি এপ্লাই করে দেখতে পারেন আশা করি এই পদ্ধতিতে আপনারা পারফেক্ট ভাবে ঘরোয়া উপায়ে মিষ্টি দই তৈরি করে নিতে পারবেন।
নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url