দ্রুত ওজন কমানোর ২৫টি উপায় - মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায়
শরীরের অতিরিক্ত ওজন নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তা বা অশান্তিতে থাকে এবং এই ওজন বৃদ্ধির কারণে অনেক সময় পড়তে হয় নানান ধরনের অসুখের। শরীরের অতিরিক্ত ওজন শুধু আমাদের সৌন্দর্য নষ্ট করে না সুস্থভাবে জীবন যাপন করার ক্ষেত্রেও বাধা প্রদান করে। তাই আজকে আকর্ষণীয় ফিগার এবং সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য দ্রুত ওজন কমানোর উপায় এবং মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায় এই দুটি বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
শরীরের ওজন যদি স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি হয়ে যায় তাহলে সে ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপ , হৃদরোগ , ডায়াবেটিসহ আরো বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বহুবনে বেড়ে যাই। এছাড়াও শরীরের ওজন যদি স্বাভাবিক না থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে আমাদের সৌন্দর্য অনেকটাই নষ্ট করে দেয় শারীরিক ওজনের এই বিষয়টি। তাই বাহ্যিকভাবে সুন্দর এবং শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার লক্ষ্যে আজকে আমরা আলোচনা করব স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে দ্রুত ওজন কমানোর ২৫টি উপায় এবং মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায় নিয়ে। আপনারা যারা এ বিষয়ে দুটি বিস্তারিত ভাবে জানতে চান তারা অবশ্যই সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন এবং কার্যকরী ফলাফল পেতে এই পোস্টের মাধ্যমে শেয়ার করা টিপসগুলো সঠিকভাবে অনুসরণ করুন।সূচিপত্রঃ দ্রুত ওজন কমানোর ২৫টি উপায় - মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায়
দ্রুত ওজন কমানোর উপায়
আমরা অনেকেই শরীরের অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভুগে থাকি এবং এমনও ওনেক মানুষ আছে যারা চেষ্টআ করেও শরীরের অতিরিক্ত অজন কমাতে পারে না।যারা শরীরেরে অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় রয়েছেন তাদের জেনে রাখা দরকার দ্রুত ওজন কমানোর উপায় গুলো।কারণ অনেক সময় দ্রুত ওজন কমানোর উপায় গুলো সঠিকভাবে না জানার কারনে অনেক চেষ্টার পরেও ওজন কমে না। আর তাই আজকে আপনাদেরকে দ্রুত ওজন কমানোর উপায় গুলো সঠিকভাবে জানানো চেষ্টা করব। এখন আপনাদের জানাবো দ্রুত ওজন কমানোর ২৫টি উপায় শরীরের মেদ বা দ্রুত ওজন কমানোর উপায় গুলো হলো,
খাবার তালিকা প্রস্তুতঃ আপনি যদি শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমাতে চান
তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনাকে সঠিক খাদ্য তালিকা ফলো করতে হবে। কেননা আপনি যদি শরীরের
ওজন কমাতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে খাবারের বিষয়ে সচেতন হতে হবে কেননা আপনি
খাবার কন্ট্রোল করতে না পারলে কখনোই আপনার ওজন কন্ট্রোল করতে পারবেন না। খাবার
কন্ট্রোল করার অর্থ এই নয় যে না খেয়ে থাকা খাদ্য কন্ট্রোল বলতে বোঝায় খাদ্য
তালিকা থেকে সেসব কল খাদ্যকে বাদ দেয়া যেগুলো শরীরে মেদ তৈরি করার জন্য
দায়ী। আপনি যদি ওজন কমানোর জন্য ডায়েটিং করেন তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনাকে
একজন ভালো পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে হবে এবং সে অনুযায়ী খাদ্য তালিকা প্রস্তুত
করতে হবে। কারণ আপনি যখন ডায়েটিং করবেন সেই সময় আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে অল্প
পরিমাণ খাবারের মধ্যে দিয়ে আপনার শরীরে যেন সকল ধরনের খাদ্যপুষ্টি ও ভিটামিন
প্রবেশ করে। যদি এমনটি না করা হয় তাহলে আপনি খুব সহজেই দুর্বল এবং অসুস্থ হয়ে
পড়বেন। তাই সঠিক ভাবে ডায়েটিং করার জন্য অবশ্যই একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ
অনুযায়ী খাদ্য তালিকা প্রস্তুত করতে হবে।
প্রোটিন জাতীয় খাবার গ্রহণের মাধ্যমে ওজন কমানোঃ প্রোটিনযুক্ত খাবার গুলো
গ্রহণ করা হলো দ্রুত ওজন কমানোর কবি কার্যকরী একটি উপায়। প্রোটিন জাতীয় খাবার
গুলো গ্রহণ করলে আমাদের শরীরের মেয়েটা বৃদ্ধি পায় এবং অল্প খাবারের পেট ভরে
যায় বলে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ করার প্রয়োজন পড়ে না। একটি গবেষণায় দেখা গেছে
যারা প্রোটিন জাতীয় খাবার গুলো খাওয়ার মাধ্যমে ওজন কমানোর চেষ্টা করে তারা
অন্যান্য খাবারের তুলনায় প্রতিদিন প্রায় ৪৪১ ক্যালোরি পরিমাণ কম খাবার
গ্রহণ করে , কারণ প্রোটিনযুক্ত খাবার গুলো খুব দ্রুত আমাদের ভরিয়ে তুলতে সাহায্য
করে এবং খোদার পরিমাণ কমিয়ে দেয়। আর প্রোটিন জাতীয় খাবার গুলোর মাধ্যমে ওজন
কমানোর পদ্ধতি অনুসরণ করতে হলে খাদ্য তালিকায় কমপক্ষে প্রায় ৩০ শতাংশ
প্রোটিন জাতীয় খাবার রাখতে হবে।
কার্বোহাইড্রেট কম খাওয়াঃ আপনি যদি আপনার শরীরের ওজন খুব দ্রুত কমাতে চান
তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনাকে কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার গুলো কম গ্রহণ করতে
হবে , কারণ কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার গুলোর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি থাকে
আর এই ক্যালরি আমাদের শরীরের ওজন বাড়ানোর জন্য বিশেষ ভাবে দায়ী। তাই
কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার যেমন ভাত , রুটি , চিনি , আলুর , সফট
ড্রিংস ইত্যাদি খাবার গুলো খুবই সামান্য পরিমাণে খেতে হবে।
সময় মতন খাবার খাওয়াঃ আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছে যারা ওজন কমানোর
অজুহাতে সঠিক সময়ে খাবার খায় না। আসলে সঠিক সময়ে খাবার না খেয়ে অথবা না খেয়ে
থেকে কখনো শরীরের ওজন কমানো সম্ভব নয় এ ধারণাটি একেবারেই ভুল। অল্প পরিমাণে হলেও
সময় মতন খাবার খেতে হবে কেননা আপনি যদি কোন বেলার খাবার না খেয়ে থাকেন তাহলে সে
ক্ষেত্রে এটি আপনার শরীরে মেদ জমার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। তাই শরীরের ওজন
কমাতে হলে অল্প পরিমাণে সময় মতন খাবার খেতে হবে।
গ্রিন টি পান করাঃ আপনারা যারা শরীরের অতিরিক্ত ওজন নিয়ে চিন্তিত তারা নিয়মিতভাবে গ্রিন টি পান করার অভ্যাস করতে পারেন। কেননা বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিতভাবে যারা ২-৩ কাপ গ্রিন টি পান করে তাদের ক্ষেত্রে ওজন কমানো সহজ হয়ে যায়। শরীরে জমা অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে গ্রিন টি। আর শুধু শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমাতে সাহায্য করে না বরঞ্চ নতুনভাবে শরীরে মেদ তৈরির ক্ষেত্রেও বাধা প্রদান করে। এই কারণে যারা শরীরের অতিরিক্ত ওজন নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা রেগুলার পান করুন গ্রিন টি এতে আপনার শরীরের অতিরিক্ত ওজন খুব সহজে ঝরিয়ে ফেলতে পারবেন। তবে আপনাকে অবশ্যই গ্রীন টি পান করতে হবে চিনি ছাড়া।
ওজন কমানোর মসলাগুলো রেসিপিতে যুক্ত করাঃ অনেকেই মনে করেন ওজন
কমাতে হলে শুধুমাত্র সেদ্ধ করা সবজিগুলো খাওয়া জরুরী কিন্তু এই ধারণাটি মোটেই
ঠিক নয়। ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সবজি জাতীয় খাবার গুলো বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে
তবে এই সবজিগুলো যে মসলা ছাড়া খেতে হবে এর কোন মানে নেই , বরঞ্চ যে মসলা গুলো
আমাদের শরীরের অতিরিক্ত মেয়েদের ঝরাতে সাহায্য করতে পারে হালকা তেল ব্যবহার
করে সেই মসলাগুলো দিয়ে সবজি রান্না করে খেলে ওজন কমানোর ক্ষেত্রে ভালো ফলাফল
পাওয়া যাবে।
শরীর চর্চা করাঃ প্রতিদিন শরীরচর্চার করলে আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে এ কথাটি আমরা ছোট থেকে বড় সবাই জানি। নিয়মিত শরীর চর্চার ফলে অতিরিক্ত ওজন দূর করে শরীরকে ফিট এবং সুস্থ রাখা যায়। নিয়মিতভাবে শরীরচর্চার করলে আমাদের শরীর থেকে অতিরিক্ত ক্যালরিগুলো বার্ন হয় এবং শরীরের ভেতর অতিরিক্ত ক্যালরি জমা হয়ে থাকে না তাই , সেক্ষেত্রে ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না আর এ কারণেই যারা ওজন কমাতে চান তারা অবশ্যই নিয়মিত শরীর চর্চায় অভ্যাস গড়ে তুলুন । এই অভ্যাসটি আপনার দ্রুত ওজন কমানোর ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখবে।
হাটাহাটি করাঃ আপনি যদি নিয়মিত ভাবে শরীর চর্চা করতে না পারেন তাহলে
সে ক্ষেত্রে শরীর চর্চার বিকল্প হিসেবে বেছে নিতে পারেন হাঁটাহাঁটি করাতে।
হাটাহাটি করার মাধ্যমে শরীর থেকে অতিরিক্ত মেদ ছড়িয়ে ফেলা সম্ভব। তাই প্রতিদিন
অন্ততপক্ষে ২০-৩০ হাটাহাটি করুন। প্রতিদিন কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করলে আমাদের
শরীরের বিভিন্ন ব্যথা দূর হওয়ার পাশাপাশি ওজন কম করতে সুবিধা হবে।
নিজের হাতে ঘরের কাজ করাঃ শরীরের ওজন কমানোর জন্য আপনি যত বেশি
ক্যালোরি বার্ন হয় এই জাতীয় কাজ করবেন ততই আপনার জন্য ভালো। আর ঘরে বসেও
ক্যালোরি বার্ন হওয়ার মতন কাজগুলো আপনি খুব সহজেই করতে পারেন , যেমন ঝরে
টুকিটাকি কাজ নিজে হাতে করা , ঘর গোছানো , হাত দিয়ে মেঝে মোছা ইত্যাদি।
নিয়মিতভাবে নিজে হাতে ঘরের মেঝে মোছার কাজটি করলে কি করলে এটি শরীরের ওজন কমানোর
পাশাপাশি তলপেটের মেদ কমানোর ক্ষেত্রেও অনেক সাহায্য করবে।
মিষ্টি এবং চিনেযুক্ত খাবার বেশি না খাওয়াঃ শরীরের ওজন বৃদ্ধির জন্য
মিষ্টি এবং তিনি যুক্ত খাবার গুলো অনেকাংশেই দায়ী থাকে। তাই আপনি যদি অতিরিক্ত
ওজন কমাতে চান তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনাকে মিষ্টি এবং তিনি যুক্ত খাবার গুলো
সম্পন্ন রূপে পরিহার করতে হবে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে এক চা চামচ পরিমাণ
চিনির ভেতরে প্রায় ১৬% ক্যালোরি থাকে। তাই চা কফি যাই হোক না কেন চিনি
যুক্ত যে কোন খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে।
ছোট প্লেটে খাবার খাওয়াঃ ওজন কমাতে কমানোর জন্য ছোট প্লেটে
খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। শুনতে কিছুটা হাস্যকর মনে হলেও ছোট প্লেটে
খাবার খাওয়া আপনার ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে। বড় প্লেটে
খাবার খেলে অনেক সময় খাবারের পরিমাণ বোঝা যায় না এবং নিজের অজান্তেই বেশি
খাওয়া হয়ে যায় অপরদিকে ছোট প্লেটে খাবার খেলে খাবারের পরিমাণ দেখতেও বেশি
লাগে এবং খাবারের পরিমাণ বেশি হয়ে যায় না। আর ছোট প্লেটে খাবার খেলে খাবারের
পরিমাণ কম থাকে বিধায় এটি আমাদের ওজন কমানোর ক্ষেত্রেও সাহায্য করে।
খাবার পূর্বে পানি খেয়ে নেয়াঃ ওজন কমানোর জন্য খাবার কম
খাওয়া বিষয়টি অত্যন্ত জরুরী কেননা আপনি যা কিছুই করেন না কেন খাবার যদি
কন্ট্রোল করতে না পারেন তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনার ওজন কমানো কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
আর তাই খাবার কম খাওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে খাবার পূর্বে বেশ কিছুটা
পানি পান করে নেয়ার। কারণ খাবার পূর্বে পানি পান করে নিলে অল্প খাবারের পেট
ভরে যাবে , আর অল্প পরিমাণ খাবার গ্রহণের ফলে ওজন কমানো সুবিধা হবে।
পপ কর্ন খাওয়াঃ খাবারের নির্দিষ্ট সময় বাদে যদি আপনার খিদে পায় অথবা কোন কিছু খাবার ইচ্ছা হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনি বেছে নিতে পারেন পপকর্ন খাওয়া কে। পপকর্নের ভেতরে ক্যালরির মাত্রা অনেক কম থাকায় পেটি খেলে আমাদের শরীরের মেদ জমার সম্ভাবনা কম থাকে ।
ধীরে ধীরে খাবার খাওয়াঃ অনেকের অভ্যাস থাকে খুব দ্রুত খাবার খাওয়ার
এতে নির্দিষ্ট পরিমাণ এর চেয়ে বেশি খাবার গ্রহণ করা হয়ে যায় অনেক সময়। আপনি
যদি ওজন কমাতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে ধীরে ধীরে খাবার গ্রহণের অভ্যাস করতে হবে।
এতে আপনার খাবারের পরিমাণ ঠিক থাকবে এবং ধীরে ধীরে খাবার খাওয়া আরো অনেক
দিক থেকেই স্বাস্থ্যসম্মত।
আরো পড়ুনঃ লম্বা হওয়ার বৈজ্ঞানিক উপায়
দিনে ঘুমানোর অভ্যাস পরিহার করাঃ অনেকেই দিবা ঘুমের অভ্যাস থাকে
কিন্তু এই এই অভ্যাসটি শরীরে মেঘ তৈরি করার জন্য অনেক অংশেই দায়ী। তাই ওজন
কমাতে চাইলে অবশ্যই দিনের বেলা ঘুমানোর অভ্যাস পরিহার করুন। ঘুমের ঘাটতি
পূরণের জন্য দিনে না ঘুমিয়ে অভ্যাস করুন রাতেই ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানোর।
ফাস্টফুট দিয়ে খাবার না খাওয়াঃ ফাস্টফুড জাতীয় খাবারগুলো আমাদের শরীরের
উপরে মারাত্মক প্রভাব বিস্তার করে এবং এই ফাস্ট জাতীয় খাবার গুলো শরীরে অতিরিক্ত
কোলেস্টেরল জমা করতেও সাহায্য করে। তাই অবশ্যই ওজন কমাতে চাইলে ফাস্টফুট জাতীয়
যে কোন খাবার খাদ্য তালিকা থেকে সম্পূর্ণরূপে বাদ দিতে হবে। শুধু শরীরের অতিরিক্ত
মেদ বা ওজন কমানোর জন্য নয় শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য ফাস্ট জাতীয় খাবার গুলো
এড়িয়ে চলা উচিত।
তৈলাক্ত খাবার না খাওয়াঃ শরীরে মেদ জমার অন্যতম কারণ হতে পারে তৈলাক্ত
খাবার।তাই শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে হলে অবশ্যই এই তৈলাক্ত খাবার গুলো
সম্পন্নভাবে পরিহারের চেষ্টা করতে হবে। কেননা আপনি যদি তৈলাক্ত খাবারগুলো বাদ না
দেন তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনার শরীরে প্রতিনিয়ত ভাবে মেদ জমবে এবং যার ফলে
ওজন বৃদ্ধি পাবে।
কালোজিরাঃ শরীরের অতিরিক্ত মেদ বা ওজন কমানোর জন্য কালোজিরা মোক্ষম ভূমিকা পালন করতে পারে। অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে দুই চামচ টক দের সাথে এক চামচ কালোজিরা ভালোভাবে মিশিয়ে খেয়ে নিন তবে যাদের ঠান্ডা লাগা জনিত অসুবিধা রয়েছে তারা রাত্রেবেলা টক দই না খেয়ে দই ও কালোজিরা সকালে খেতে পারেন।
বাদাম খাওয়াঃ ড্রাই ফ্রুটস গুলোর মধ্যে বাদাম ওজন কমানোর ক্ষেত্রে বিশেষ সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রতিদিন কিছু পরিমাণ বাদাম খাদ্য তালিকায় রাখা হয় তাহলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব কারণ , ওজন নিয়ন্ত্রণে ক্ষেত্রে বাদাম রাখতে পারে বিশেষ অবদান। তাই আপনি যদি ওজন কমানোর টান তাহলে অবশ্যই আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অল্প পরিমাণে বাদাম রাখার চেষ্টা করুন। তবে তাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে বাদাম খাওয়ার পরে পানি পান না করাই ভালো কেন নাই যে শ্বাসকষ্টের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।
লেবু পানিঃ ওজন কমাতে লেবু পানির উপকারিতার কথা দ্বিতীয়বার আর বলার দরকার পড়ে না , কেননা লেবু পানি ওজন কমানোর অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি উপায় এবং এটি সম্পর্কে ছোট বড় প্রায় সবাই জানে। তাই আপনি আপনার শরীরের অতিরিক্ত ওজন ঝড়ানোর জন্য বেছে নিতে পারেন লেবু পানি পান করার অভ্যাসটিকে। লেবু আমাদের শরীর থেকে অতিরিক্ত ক্যালোরি ঝরিয়ে ফেলতে সাহায্য করে। যার কারণে যাদের শারীরিক ওজন স্বাভাবিকের চাইতে অনেক বেশি তারা যদি নিয়মিত লেবু জল খাওয়ার অভ্যাস করে তাহলে খুব দ্রুত শরীরের ওজন কমাতে এটি সাহায্য করবে ।
আরো পড়ুনঃ লেবু দিয়ে ওজন কমানোর উপায় বিস্তারিত
মধু পানিঃ মধুর অনেক উপকারিতার মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি উপকারিতা হল শরীরে অতিরিক্ত মেদ কমানো। দৈনিক সকালে এক গ্লাস হালকা কুসুম গরম পানির সাথে এক থেকে দুই চামচ মধু মিশিয়ে খেলে যাদের অতিরিক্ত ওজন তাদের ওজন কমাতে এটি সাহায্য করে। গরম পানির সাথে মধুর মধ্যে যদি লেবু মিশিয়ে দেওয়া যায় তাহলে এটি আরো দ্রুত এবং ভালো কাজ করবে।
অ্যাপেল সিডার ভিনেগারঃ শরীরের অতিরিক্ত মেদ বা ওজন কমানোর আরেকটি সহজ এবং কার্যকরী উপায় হল অ্যাপেল সিডার ভিনেগার পান করা। নিয়মিত সকাল বেলা খালি পেটে এক গ্লাস হালকা কুসুম গরম পানির সাথে এক চামচ অ্যাপেল সিডার মিশিয়ে খেলে খুব দ্রুত শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমানো সম্ভব। কুসুম গরম পানিতে অ্যাপেল সিডার ভিনেগার এর সাথে আপনি চাইলে মধুও যুক্ত করতে পারেন।
এলোভেরার রসঃ ওজন কমানোর আরেকটি সহজ উপায় হলো এলোভেরা রস পান করা। অ্যালোভেরার রস পান করা কিছুটা কষ্টকর হলেও , যদি এটি আপনি নিয়মিত পান করেতে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমাতে আপনি সক্ষম হবেন।
পর্যাপ্ত পানি পানঃ আপনি যদি শরীরে অতিরিক্ত ওজন কমাতে চান তাহলে সে
ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত পানি পান করুন। পানি আমাদের শরীর সুস্থ রাখার পাশাপাশি আমাদের
শরীর থেকে টক্সিক উপাদান গুলো বের করে দেয়ার মাধ্যমে শরীরের অতিরিক্ত ওজন
নিয়ন্ত্রণে রাখার ক্ষেত্রে সাহায্য করে এ কারণে ওজন কমানোর জন্য পর্যাপ্ত পানি
পান করতে পারেন। তবে ঠান্ডা পানি পানের চেয়ে কুসুম গরম পানি পান করলে মেদ ঝরানোর
ক্ষেত্রে বিশেষ উপকার পাওয়া যায়।
সাউন্ড স্লিপঃ আমাদের শরীর সুস্থ রাখার জন্য সাউন্ড স্লিপ অর্থাৎ নিরবিচ্ছিন্ন ঘুম এর ব্যাপারটি অত্যন্ত জরুরী। আমাদের মধ্যে অনেকেই রাত জেগে বিভিন্ন কাজ করা বা পড়াশোনা করার অভ্যাস রয়েছে কিন্তু আপনি জানেন কি এই বিষয়টি আপনার শরীরের অতিরিক্ত মেদ জমার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। সুতরাং আপনি যদি আপনার শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনাকে অতিরিক্ত রাত জাগার অভ্যাস পরিহার করতে হবে। রাতে দেরিতে ঘুমানোর অভ্যাস থাকলে, এই অভ্যাস শুধু শরীরের ওজন বাড়ানোর জন্যই নয় স্বাস্থ্য নষ্ট করার জন্যও দায়ী। আপনি যদি প্রতিদিন পর্যাপ্ত না ঘুমান তাহলে সে ক্ষেত্রে এটি আপনার শরীরের অতিরিক্ত ওজন বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট ভূমিকা পালন করবে।
মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায়
ওজন বেশি হওয়ার সমস্যাটি সাধারণত পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায় , তাই অনেকের মধ্যে এই প্রশ্ন থাকে এবং অনেকেই জানতে চেয়ে থাকেন মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায় গুলো সম্পর্কে। আর আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্য আজকে মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায় গুলোর সম্পর্কে কার্যকরী বেশ কিছু টিপস জানাবো। তাহলে আর দেরি না করে এবার চলুন মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায় জেনে নেয়া যাক। আমরা পোস্টের উপরের অংশে দ্রুত ওজন কমানোর ২৫ টি উপায় সম্পর্কে আলোচনা করেছি ,মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায় হিসেবে ওপরে দেওয়া এই ২৫ টিপস ভালোভাবে ফলো করলে আপনি বেশ কার্যকরী ফলাফল পাবেন , তবে এই টিপস গুলোর মধ্যে থেকে মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায় হিসেবে বেশ কয়েকটি উপরে বিশেষ নজর রাখতে হবে অর্থাৎ বেশ কয়েকটি টিপস কড়া ভাবে মেনে চলতে হবে। তাহলে চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর জন্য কোন টিপস গুলোর উপরে গঠন নজর দিতে হবে,
ফাস্টফুড এড়িয়ে চলাঃ ফাস্টফুড খাওয়ার প্রবণতা সাধারণত মেয়েদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায় , এই খাবারগুলো মুখরোচক হলেও শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর এবং ওজন বাড়ানোর জন্য বিশেষভাবে দায়ী। সুতরাং মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায় হিসেবে সর্বপ্রথমে যেই জিনিসটি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে সেটি হলো ফাস্টফুড খাওয়া। শুধু ফাস্টফুডই নয় পেস্ট্রি জাতীয় খাবারগুলো খাদ্য তালিকা থেকে সম্পূর্ণরূপে বাদ দিতে হবে। এছাড়াও -পাউরুটি , বিস্কিট জাতীয় খাবার গুলো খুব সামান্য পরিমাণে খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
তৈলাক্ত তো খাবার না খাওয়াঃ ফাস্টফুড জাতীয় খাবারের
পাশাপাশি মেয়েদের ওজন কমানোর জন্য খেয়াল রাখতে হবে তৈলাক্ত খাবার গুলো না
খাওয়া। কারণ তেল চর্বিযুক্ত তৈলাক্ত খাবারগুলো আমাদের শরীরে মেদ জমাতে সাহায্য
করে , তাই এই খাবারগুলো যত কম খাওয়া যায় ততই ভালো।
আরো পড়ুনঃ চোখের নিচের কালো দাগ দূর করার উপায়
নিজের হাতে ঘরের কাজ করাঃ মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর আরেকটি উল্লেখযোগ্য উপায় হল নিজের হাতে ঘরের কাজ করা। নিজের হাতে ঘরের কাজ করতে থাকলে সে ক্ষেত্রে শরীর থেকে অনেকটাই ক্যালোরি কমানো সম্ভব হয় , যার ফলে এই অভ্যাসটি আমাদের ওজন কমাতেও বিশেষ সাহায্য করে। ঘরে বিভিন্ন কাজ করার পাশাপাশি নিয়মিতভাবে ঘরের মেঝে মোছার অভ্যাস করতে পারেন এটি আপনার শরীরের ক্যালরি বার্ন করার পাশাপাশি তলপেটের মেদ কমাতে সাহায্য করবে।
নিয়মিত শরীর চর্চা করাঃ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে মেয়েরা যে
পরিমাণ খাদ্য গ্রহণ করে বা খাদ্য থেকে তাদের শরীরে যেই পরিমাণ ক্যালরি সঞ্চিত হয়
সেগুলো বার্ন হয় না। এভাবে দিনে দিনে শরীরে ক্যালরি জমা হতে থাকে এবং একপর্যায়ে
মুটিয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। আর এই সমস্যাটি সমাধানের জন্য নিয়মিত শরীর
চর্চার অভ্যাস করতে হবে। নিয়মিতভাবে অন্ততপক্ষে ১৫-২০ মিনিট শরীর চর্চা করলে
শরীফ থেকে অতিরিক্ত ক্যালরি দূর হবে এবং এটির কারণে ওজন কমানো সহজ হবে এছাড়াও
নিয়মিত শরীর চর্চা করলে শরীর সুস্থ থাকবে।
সময় মতন খাবার খাওয়াঃ সময় মতন খাবার না খাওয়া মেয়েদের মুটিয়ে
যাওয়ার আরেকটি উল্লেখযোগ্য প্রধান কারণ। সময়ের খাবার সময় না খেলে এই অভ্যাস
দিয়ে আমাদের শরীরে জমাতে সাহায্য করে। অনেকেই সঠিকভাবে ডায়েটিং এর নিয়ম না
জানার কারণে খাবার না খেয়ে থাকেন এই বিষয়টি ওজন কমানোর জায়গায় ওজন
বাড়িয়ে তোলে। তাই আপনাকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে কোন বেলা খাবার যেন বাদ না পরে
অল্প পরিমাণে প্রতিবেলায় খাবার সময় মতন খাওয়ার চেষ্টা করুন।
পর্যাপ্ত ঘুমঃ মেয়েরা অধিকাংশ সময় দেখা যায় ঘরের কাজ করতে গিয়ে
পর্যাপ্ত ঘুম বা বিশ্রামের সময় পায়না। আর আপনারা হয়তোবা জেনে থাকবেন পর্যাপ্ত
ঘুম বা বিশ্রাম আমাদের শরীরের মেদ কমানোর ক্ষেত্রেও বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে।
তাই অবশ্যই শত কাজের মাঝখানে চেষ্টা করতে হবে পর্যাপ্ত ঘুমানোর চেষ্টা করার।
প্রোটিনযুক্ত খাবার গ্রহণঃ মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর জন্য মেয়েরা গুরুত্ব দিতে পারেন প্রোটিন যুক্ত খাবার গুলোর উপরে। কেননা প্রোটিন যুক্ত খাবারগুলো অল্প পরিমাণ খেলেই আমাদের পেট ভরে ওঠে যার ফলে বেশি খাওয়ার প্রবণতা কম হয় এবং প্রোটিনযুক্ত খাবারগুলো আমাদের শরীরে পর্যাপ্ত শক্তি যোগাতে ও সাহায্য করে। তাই খাবার কম খাওয়ার একটি সহজ উপায় হতে পারে প্রোটিনযুক্ত খাবার গ্রহণ করা।
ভিটামিন এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়াঃ আমাদের দেশের মেয়েদের অধিকাংশই
ভিটামিন এবং পুষ্টিহীনতাই ভোগেন এর পেছনের উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে ভিটামিন এবং
পুষ্টিকর খাবার না খাওয়া। সুস্থভাবে শরীরের ওজন কমাতে হলে অবশ্যই ভিটামিন এবং
পুষ্টিকর খাবার গুলো গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরী। ওজন কমানোর জন্য আপনাকে অবশ্যই কম
খাবার খেতে হবে তবে সেই খাবারগুলো যেন পুষ্টিকর এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ হয় সেদিকে
লক্ষ্য রাখতে হবে।
পর্যাপ্ত পানি পান করাঃ মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর জন্য অবশ্যই
পর্যাপ্ত পানি পান করার বিষয়টি অত্যন্ত জরুরী। অধিকাংশই ক্ষেত্রেই দেখা
যায় মেয়েরা পর্যাপ্ত পানি পান করে না তাই তাদেরকে পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে
শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমানোর জন্য পর্যাপ্ত পানি পানির , কেননা পানি শরীর থেকে
টক্সিক উপাদান গুলো সহজেই বের করে দিতে সাহায্য করে। খাবার আগে পানি পান করলে
অল্প খাবার এই পেট ভরে যায় সুতরাং বেশি খাবার প্রবণতা কম হয়।
এছাড়াও, মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায় হিসেবে নিয়মিতভাবে সকালবেলা খালি পেটে হালকা গরম পানিতে লেবু , মধু অথবা অ্যাপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে খেলে পারেন কিংবা অ্যালোভেরার রস পান করতে পারলেও ওজন কমানোর ক্ষেত্রে অনেক দ্রুত এবং কার্যকরী উপকার পাবেন।
মন্তব্য, আজকের পোস্টের মাধ্যমে শেয়ার করা টিপস গুলো আপনি সঠিকভাবে
অনুসরণ করেন তাহলে আশা করা যায় খুব দ্রুত আপনি আপনার শরীরের অতিরিক্ত ওজন ঝরিয়ে
ফেলতে সক্ষম হবেন। শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমানো শুধু ,আকর্ষণীয় ফিগার
ক্ষেত্রে নয় শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য অত্যন্ত জরুরী। কারণ অতিরিক্ত মেদ
জমতে থাকলে হার্ট অ্যাটাক , হাই প্রেসার সহ আরো বিভিন্ন ধরনের
অসুখ শরীরে বাসা বাঁধে তাই সুস্থ থাকতে হলে অবশ্যই শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে
রাখা অত্যন্ত জরুরী।
নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url