স্থায়ী ফর্সা হওয়ার ১২টি উপায় - স্থায়ী ফর্সা হওয়ার উপায়
ফর্সা ত্বকের চাহিদা সব জায়গায় বেশি থাকে আর এই কারণে আমরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্ট ইউজ করি গায়ের রং ফর্সা করে তোলার জন্য এবং এই প্রোডাক্টগুলো ইউজ করে আমরা অনেক ক্ষেত্রে খুব দ্রুত পেয়েও যাই ফলাফল। তবে বাজারের এই কেমিক্যাল যুক্ত প্রোডাক্টগুলো খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে আমাদের ত্বক ফর্সা করে তুললেও এই ফর্সা স্থায়ী করতে পারে না। তাই আজকে আপনাদের জানাবো বাজারের এই কেমিক্যালযুক্ত প্রোডাক্টগুলো ব্যবহার না করে কিভাবে স্থায়ীভাবে ফর্সা হওয়া যায় এ বিষয়ে।
ত্বক ফর্সার স্থায়িত্ব ধরে রাখতে হলে অবশ্যই আপনাকে ন্যাচারাল প্রোডাক্টগুলো ইউজ করতে হবে সবচেয়ে ভালো হয় আপনারা যদি ঘরেই ন্যাচারাল উপকরণ দিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করে তাকে ব্যবহার করেন তাহলে , এক্ষেত্রে হয়তো ত্বকের ফর্সা ভাব আসতে কিছুটা সময় লাগবে কিন্তু এই ফর্সা হবে স্থায়ী আর সবচেয়ে বড় কথা হলো ঘরে তৈরি করা এই ফেসপ্যাক গুলোর মাধ্যমে ত্বক ফর্সা করলে সে ক্ষেত্রে স্ক্রিনের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না বললেই চলে। আজকে আপনাদের জানাবো স্থায়ীভাবে কিভাবে ঘরোয়া উপকরণ গুলোর মাধ্যমে ত্বক ফর্সা করা যায় এই বিষয়ে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে স্থায়ী ফর্সা হওয়ার উপায় গুলো জেনে নেওয়া যাক।স্থায়ী ফর্সা হওয়ার উপায়
দুধঃ দুধ আমাদের শরীরে শক্তি যোগাতে এবং ক্যালসিয়ামের ও প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে অত্যন্ত উপকারী এটি আমরা সকলেই জানি কিন্তু আপনি জানেন কি দুধ দিয়েও ফর্সা হওয়া যায়। ফর্সা হওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রোডাক্ট ইউজ না করে ত্বকের ব্যবহার করুন দুধ। তবে অবশ্যই এর পূর্বে জেনে নিন দুধ দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে। দুধ দিয়ে স্থায়ীভাবে ত্বকের রং ফর্সা করার জন্য দুধের সাথে আরো কিছু উপকরণ মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করতে হবে। দুধ দিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করার জন্য এর সাথে মেশাতে পারেন- দুধ, মধু ও লেবুর রস
- দুধ ও কলা
- দুধ ও পাকা পেঁপে
- দুধ ও মুলতানি মাটি
স্থায়ীভাবে গায়ের রং উজ্জ্বল করার জন্য এভাবে বিভিন্ন উপকরণ দুধের সাথে
ভালোভাবে মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করে নিয়মিত ত্বকে লাগালে ভালো ফল পাওয়া যায়।এ
পদ্ধতি ছাড়াও আপনি কাঁচা দুধ সরাসরি ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন। কটন বলের
সাহায্যে কাঁচা তরল দুধ ত্বকের উপরে মাসাজ করলে,ত্বকের উপর থেকে কালো দাগ এবং
ত্বক পরিষ্কার করার মাধ্যমে দুধে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে তুলতে এবং
ত্বক স্থায়ীভাবে ফর্সা করতে সাহায্য করে।
- বেসন , হলুদ গুঁড়া ও লেবুর রস
- বেসন ও ডিমের কুসুম
- বেসন , টক দই ও অ্যালোভেরা জেল
- শসা টক দই , অ্যালোভেরা জেল ও বেসন এর প্যাক
- শসা , ডিমের কুসুম , বেসন ও কাঁচা হলুদের প্যাক
- শসা , আটা বা ময়দা , মসুরের ডাল বাটা ও গুড়া দুধের প্যাক
- শসা , এলোভেরা জেল , চিনির মিশ্রণ
উপরে দেয়া এই উপাদান গুলোর সাথে শসার রস ভালোভাবে মিক্স করে আপনার ত্বকে সপ্তাহে অন্তত ৩-৪ দিন লাগানোর চেষ্টা করুন। এই প্যাকগুলো আপনার ত্বকের প্রাকৃতিক ক্লিনজার হিসেবে এবং ত্বকের ওপরে থাকা কালো দাগ , রোদে পোড়া দাগ এবং ব্রণের দাগ দূর করতে সাহায্য করবে পাশাপাশি আপনার ত্বক উজ্জ্বল এবং ফর্সা করবে।
আলুঃ তখন ফর্সা করার আরেকটি সহজ সমাধান হলো ত্বকে আলুর রস ব্যবহার। আলুর ভেতরে থাকা কয়েক ধরনের ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান গুলো আমাদের ত্বকের প্রাকৃতিক ব্লিচ হিসেবে কাজ এবং আলুর রস আমাদের ত্বকের মেছতা দূর করতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আজকে আমরা জানবো আলু দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়। আলুর মাধ্যমে ত্বক ফর্সা করতে আলুর রস আপনি সরাসরি ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন কারণ আবার ব্লেন্ড করে এর রসের মধ্যেই ডিমের কুসুম ও বেসন মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। অথবা আলুর রস , গোলাপ জল , মধু একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করলে ত্বকের কালো দাগ দূর করে ত্বক ফর্সা করতে সাহায্য করে। তবে যদি আপনার ড্রাই স্কিন হয় তাহলে আলুর সাথে লেবুর রসের পরিবর্তে মধু ব্যবহার করুন আর যদি আপনার অয়েলি স্কিন হয় তাহলে মধুর পরিবর্তে লেবুর রস অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে।
- ত্বক ফর্সা করার জন্য টমেটোর রসের সাথে মসুরের ডাল বাটা ও টক দই
- ব্যবহার করতে পারেন টমেটো রসের সাথে লেবুর রস ও হলুদ গুঁড়া মিশিয়ে
- টমেটোর রসের সাথে যোগ করুন কনফ্লাওয়ার , জাফরান এর পেস্ট
- টমেটোর রস , টক দই , এলোভেরা জেল , বেসন
- টমেটোর রস , চালের আটা , গুড়া দুধ এবং মুশুরের ডাল বাটা একসাথে করেই ফেসপ্যাক তৈরি করতে পারেন
- ডিমের কুসুম , টমেটো রস , কাঁচা হলুদ , বেসন একসাথে মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করে আপনার স্ক্রিনের উপরে সপ্তাহে কমপক্ষে তিন দিন নিয়মিত ব্যবহারের চেষ্টা করুন
অ্যাভোকাডঃ অ্যাভোকাড আমাদের প্রায় সবারই জানা শোনা একটি ফল। এটি যে শুধু খাওয়ার জন্য তা নয়, অ্যাভোকাড রুপচর্চা, বিশেষ করে ত্বকের পুষ্টু বাড়াতে অনেক সাহায্য করে। স্থায়ীভাবে ত্বককে ফর্সা করে তোলার জন্য একটি অ্যাভোকাড ভালো করে পেস্ট বানিয়ে সেটি মুখে লাগিয়ে রাখুন এবং ১২-১৫ মিনিট পর প্রথমে ঠান্ডা দুধ দিয়ে এবং তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এর ফলে আপনার ত্বকের পুষ্টি উপাদান বাড়বে এবং ফলস্বরূপ আপনার চেহেরা অনেক তাড়াতাড়ি গ্লো করা শুরু করবে।
ত্বকে ডিম ব্যবহারঃ চেহেরার উজ্জ্বলতা বাড়াতে এবং স্থায়ীভাবে ত্বক ফর্সা করতে ডিমও খুব উপকার। অনেকে কাঁচা ডিমে থাকা গন্ধের কারণে অবহেলা করে থাকে কিন্তু তারা হয় তো জানেই না যে তারা কত বড় ভুল করছে। আপনি যদি খুব সহজেই চেহেরার উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে চান তাহলে ডিমের সাদা অংশ ভালোভাবে ফেটিয়ে নিয়ে সেটি মুখে শুকিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
হলুদঃ হলুদের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর জন্য সামান্য একটু হলুদ গুড়া এবং এক চামচ গোলাপজল ও মধু মিশিয়ে, ভালোভাবে মিক্স করে আপনার মুখের ত্বকে সারারাত লাগিয়ে রেখে সকালবেলা নরমাল টেম্পারেচারে থাকা পানি দিয়ে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এভাবে কিছুদিন ব্যবহারের ফলে দেখবেন আপনার ত্বক আগের চেয়ে অনেক বেশি উজ্জ্বল হয়ে যাবে এবং এই উজ্জ্বলতা বা ফর্সা ভাব হবে স্থায়ী।
আরো পড়ুন ঃ কমলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা করার উপায়
মন্তব্য , পুরো পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা এতক্ষণে নিশ্চয়ই স্থায়ী ফর্সা
হওয়ার উপায় গুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জেনেছেন । আপনার যদি নিয়মিত ভাবে
ন্যাচারাল এই উপাদানগুলোর মাধ্যমে ফেসপ্যাক তৈরি করে ত্বকে ব্যবহার করেন
দ্রুত সময়ের মধ্যে কাঙ্খিত ফলাফল পাবেন বলে আশা করা যায়। স্থায়ীভাবে ত্বক
ফর্সা করার জন্য ঘরোয়া উপাদান গুলো ব্যবহারের সবচেয়ে বড় উপকারিতা হলো এর
মাধ্যমে ত্বকের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে , তাই আপনাদের সকলের কাছে
অনুরোধ দ্রুত গায়ের রং ফর্সা করার জন্য বাজার কেমিকেল যুক্ত
প্রোডাক্টগুলো ইউজ করে ত্বকের ক্ষতি করার পরিবর্তে ঘরোয়া ন্যাচারাল উপাদান
গুলো দিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করে ব্যবহার করুন।
নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url