পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি ভাবসম্প্রসারণ
পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি
মানুষের উন্নতির একমাত্র চাবিকাঠি হলো পরিশ্রম। পরিশ্রম দ্বারাই মানুষ সাধনায় সিদ্ধিলাভ করে থাকে। যারা অলস ও শ্রমবিমুখ তারা কখোনই সফলতা লাভ করতে পারে না। কেননা অক্লান্ত পরিশ্রমই সুন্দর ভাগ্যকে জন্ম দেয়। পৃথিবীতে এমন অনেক লোক রয়েছে যারা দুঃখ-কষ্টকে ভয় করে অতি নিম্নস্তরের জীবনযাপন করছে। তারা অন্যের নিকট হাত পাততে দ্বিধাবোধ করে না। অথচ তারা একটু পরিশ্রম করলেই সাবলম্বী হতে পারে। একটা কথা মনে রাখা দরকার যে, আল্লাহ আমাদের হাত দিয়েছেন কর্ম করে নিজের ভাগ্যকে পরিবর্তন করার জন্য, ভিক্ষার জন্য নয়। ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, আজ যারা স্মরণীয় ও বরণীয় ব্যক্তি বা ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়ে ইতিহাসের পাতায় স্থান লাভ করেছে তাঁদের প্রত্যেকের পেছনেই ছিল কঠোর পরিশ্রম। পরিশ্রম দ্বারাই তাদের ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়েছে তাই সৎ পথে থেকে পরিশ্রম করলে কোনো পরিশ্রমই ব্যর্থ হয় না। শুধু বৃহৎ ব্যক্তি নয় অতি ক্ষুদ্র প্রাণীও পরিশ্রম দ্বারাই সৌভাগ্য অর্জন করে। পিপীলিকা ভবিষতের কথা চিন্তা করে গ্রীষ্মের সময় অতি কষ্ট করে খাদ্য সঞ্চয় করে। ফলে শীতের সময়টা তার আরাম আয়েশে কেটে যায়। বিনা পরিশ্রমে সৌভাগ্য কখোনো আকাশ থেকে ভেঙে পড়ে না। সুতরাং আমাদের নিজ নিজ ভাগ্যকে গড়ার জন্য কঠোর পরিশ্রমী হতে হবে।
পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি
মূলভাবঃ পৃথিবীর সকল কাজের পিছনে শ্রম একটি অন্যতম নিয়াওক হিসেবে কাজ করে। শ্রম ব্যতীত কেউ কখোনই কোনো কাজ সুসম্পন্নভাবে করতে পারে না। অর্থ-বিত্ত, প্রভাব-প্রতিপত্তি অর্জনের মূলে শ্রমই মুখ্য। শ্রম আছে বলেই পৃথিবী আজ সভ্যতার চরম শিখরে আরোহণ করতে পেরেছে।
সম্প্রসারিত ভাবঃ পৃথিবী প্রতিটি উন্নত জাতির মূল কারণ তাদের পরিশ্রম। পরিশ্রম বিমুখ জাতি মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে না। তাই ব্যক্তিজীবিন কিংবা পারিবারিক জীবনে উন্নতির জন্য পরিশ্রম অপরিহার্য। কিন্তু এক্ষেত্রে কারো এমন যে, সৌভাগ্য অর্জন শুধু স্রষ্টা প্রদত্ত নিয়ামিত; বিধাতা যাকে সৌভাগ্যবান হিসেবে পাঠাবেন তার কোনো পরিশ্রমের দরকার হয় না। বস্তুত এমন বদ্ধমূল ধারণা থেকেই মানুষের মনে জন্ম দিয়েছে কিছু লোককাহিনী; যেগুলোর অধিকাংশেই রয়েছে দৈবলব্ধ অর্থ প্রাপ্তি কিংবা ধনলাভ। আর শ্রম বিমুখ মানুষেরা এসমস্ত বিশ্বাসে নিজেদেরকে কল্পনার জগতে নিজেদেরকে আচ্ছন্ন করে রাখে। রাই এদের শ্রম প্রাধান্য পায় না, বরং কল্পনার সস্তা পথ খোঁজে সৌভাগ্য অর্জনের জন্য। কিন্তু শ্রমের বিকল্প যে কিছুই হতে পারে না একথা তারা বোঝার চেষ্টা করে না। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত শ্রমই একমাত্র পথ। আর শ্রমকে বাদ রেখে সফলতা অর্জন দুরাশামত্র। তাই একটি কথা প্রচলিত আছে- ' পরিশ্রমে ধন আসে, পুণ্যে আসে সুখ '। শ্রমবিমুখতা ও অলসতা জীবনে বয়ে আনে চরম অভিশাপ। ভাগ্যে নেমে আসে অমানিশার ঘন আঁধার। আর আবিরাম শ্রমের মধ্য দিয়ে আমরা অনায়াসে দারিদ্রকে জয় করতে পারি। সুতরাং অর্থ, বিদ্যা, যশ, মর্যাদা, প্রতিপত্তি অর্জন করতে প্রিশ্রম করতে হয়। নিরলস পরিশ্রমের মধ্যে দিয়েই যে কর্মযজ্ঞ তৈরি হয়, তাই সফলতার সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছাতে মানুষকে সহায়তা করে। তাই শ্রম হচ্ছে সফতার বীজমন্ত্র।
পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি
মূলভাবঃ পৃথিবীতে সৌভাগ্য বলে কিছুই নেই। মূলত সৌভাগ্য কিংবা দুর্ভাগ্য দুইটারই নিয়ন্ত্রকই হলো পরিশ্রম। পরিশ্রমই সৌভাগ্যের চাবিকাঠি।
সম্প্রসারিতভাবঃ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত উন্নতি লাভ করা কি আমরা সৌভাগ্য বলে প্রমাণ করি বা মনে করি তবে প্রকৃত বিচারে সৌভাগ্য বলতে কিছুই নেই। বস্তুত জীবনের সাফল্য আসে পরিশ্রমের মাধ্যমে এর জন্য কর্ম ক্ষেত্রে সুষ্টু ও দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে শ্রমের যথার্থ মর্যাদা দান করা প্রত্যেকের আবশ্যিক কর্তব্য। বস্তুত পরিশ্রম ছাড়া অর্থ, সম্পদ, জ্ঞান, বিদ্যা-বুদ্ধি কিংবা স্বাস্থ্য কোনটাই লাভ করা যায় না. পৃথিবীতে যারা সফল হয়েছেন তাদের সাফল্যের সকলের পেছনেই ছিল নিরলস পরিশ্রম। রাজনীতিকের জনকল্যাণ, বিজ্ঞানীর আবিষ্কার, ব্যবসায়ীর অর্থাপার্জন সবকিছু মূলে রয়েছে নিরলস পরিশ্রম। ছাত্রছাত্রীদের উত্তম ফলাফল সকলের কাম্য। কিন্তু কঠোর সাধনা ও নিরন্তন অধ্যাবস্যা ছাড়া কোন ছাত্রকাঙ্খিত ফল লাভ করতে পারে না। দেখা যায় সাধারণ মানের একজন ছাত্র শুধুমাত্র কঠোর অধ্যাবসায়ের কারণে আকর্ষণীয় ফলাফল করতে সক্ষম হয়, তেমনি অনেক মেধাবী ছাত্র অতিশ্রম বিমুখতার কারণে পরীক্ষার কাঙ্খিত ফলা-ফল লাভ করতে ব্যর্থ হয়। প্রকৃতপক্ষে ব্যক্তি ও সামাজিক সকল ক্ষেত্রে উন্নতি লাভের জন্য পরিশ্রমের একান্ত প্রয়োজন যারা দুর্বল চিত্ত তারাই কেবল ভাগ্যের হাতে আত্মসমর্পণ সমর্পণ করে। যারা বুদ্ধিমান ও সাহসী তারা পরিশ্রমকে উন্নতির স্বপন হিসেবে গ্রহণ করে। মাথার অস্তিত্ব ছাড়া যেমন কোনো জীবনের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না, তেমনি পরিশ্রম ছাড়া করা যায় না। তাই পরিশ্রম যথার্থ সৌভাগ্যের প্রসূতি।
নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url