কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা - দুধ কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা
আপনারা হয়তো সকলেই জানেন কিসমিস তৈরি হয় আঙ্গুর থেকে , আঙ্গুরকে শুকানোর ফলে এর ভেতরে থাকা ফ্রুকটোজ জমাট বেঁধে কিসমিসের পরিণত হয়। খাবারের স্বাদ বাড়াতে এবং খাবার ডেকোরেশন করা ছাড়াও কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার রয়েছে অনেক উপকারিতা।
রক্তস্বল্পতা এবং হার্ট কে ভালো রাখার পাশাপাশি কিসমিস ভিজিয়ে খেলে পাওয়া যাবে নানান ধরনের উপকারিতা , তবে কিসমিস থেকে উপকারিতা পাওয়ার জন্য জানতে হবে কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। কিসমিস যেকোন ভাবে খেলেই এর উপকারিতা পাওয়া যেতে পারে আর আজকে আপনাদেরকে জানাবো কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা , রাতে কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা , দুধ দিয়ে কিসমিস খাওয়ার ফলে আপনারা কোন ধরণের স্বাস্থ্য উপকারিতা গুলো পাবেন এবং ভিজিয়ে কিসমিস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।সূচিপত্রঃ কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা - দুধ কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা
- কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
- কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার নিয়ম
- দুধ কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা
- রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস খেলে কি হয়
কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
কিসমিসেরর ভিতরে অনেক ভাল ধরনের পুষ্টি উপাদান থাকায় আমাদের শরীরের জন্য
অত্যন্ত উপকারী। সকালে কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনি জানলে অবাক
হয়ে যাবেন কারণ এর থেকে ম্যাজিক্যাল কিছু উপকারিতা পাওয়া যায়। কিসমিস ভিজিয়ে
খাওয়ার উপকারিতা তো রয়েছে এর পাশাপাশি কিসমিস ভেজানো সেই পানিটির মধ্যেও পাওয়া
যায় প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি। ভেজানো কিসমিস খেলে এর ভেত্রে থাকা পুষ্টি উপাদান
গুলো খুব সহজেই আমাদের শরীর শোষন করতে পারে। এছাড়াও জাদুর মতন ,আরও যেসব
ক্ষেত্রে কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে চলুন এবার সেগুলো জেনে
নেওয়া যাক।
রাতে সামান্য পরিমাণ পানির মধ্যে কিসমিস ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই ভেজানো কিসমিস
এবং কিসমিস ভেজানো পানি পান করলে, এর মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে আয়রন পাওয়া
যায়, যার ফলে আমাদের শরীরের চাহিদা অনুযায়ী আয়রনের ঘাটতি পূরণ হয় এবং
রক্তস্বল্পতা দূর হয়। কিসমিস ভেজানো পানি খেলে এটি আইরনের ঘাটতি পূরণ ,
রক্তস্বল্পতা করার পাশাপাশি শরীরে Red blood cells তৈরি করতে সাহায্য করে।
তাছাড়া ভেজানো কিসমিস খেলে পেট পরিষ্কারের পাশাপাশি রক্ত পরিষ্কার করতেও বিশেষ
ভূমিকা পালন করে।
প্রতিদিন সকালে কি কিসমিস ভেজানো পানি খেলে এর মধ্যে থাকা ফাইবার আমাদের হজম
প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য ও এসিডিটি এর প্রবণতা কমায়। কিসমিসের
মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় সকালে পানের ফলে , শরীরে
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং শরীরের অভ্যন্তরে ক্যান্সার প্রতিরোধই সেল
তৈরি হয়। এবং কিসমিসের ভেতরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় এটি আমাদের ত্বকের জন্যও
অত্যন্ত উপকারী।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে ভেজানো কিসমিস এবং কিসমিস ভেজানো পানি পানের
ফলে , রক্তে থাকা টক্সিক পদার্থ গুলো বেরিয়ে যেতে পারে , এবং যার ফলে এভাবে
কিসমিস খেলে লিভার এবং কিডনি দুটোই ভালো থাকে। শুধু তাই নয় কিসমিসের ভেতরে
প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং ক্যালসিয়াম থাকায় ভেজানো কিসমিস খেলে এটি দাঁত ও
হাড় মজবুত করতে সহায়তা করে এবং কিসমিস সারাদিনের এনার্জি ধরে রাখতে সাহায্য
করে।
কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার নিয়ম
ভেজানো কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা তো আপনারা জেনে নিয়েছেন । তবে কি শুধু উপকারিতা
জানলে চলবে , এর পাশাপাশি জানতে হবে কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।
পরিপূর্ণভাবে ভেজানো কিসমিসের উপকারিতা পাওয়ার জন্য চলুন আপনাদের এবার জানিয়ে
কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।
বিভিন্ন ধরনের শারীরিক জটিলতা দূর করার জন্য যে বেলা ১/২ কাপ পানির ভেতরে অথবা এক গ্লাস পানির মধ্যে বেশ কিছু কিসমিস ভিজিয়ে রাখুন। সকালবেলা এই কিসমিসের পানি গাঢ় রং ধারণ করলে এবার কিসমিস এবং পানি গুলো আলাদা করে নিন।কিসমিস ভেজানো এই পানিগুলো কখনোই ফেলে দেবেন না কারণ সারারাত কিসমিস ভিজে থাকার ফলে এর ভেতর থেকে বিভিন্ন ধরনের খনিজ উপাদানগুলো এই পানির সাথে মিশে থাকে , তাই কিসমিস ভেজানো এই পানীয় শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারিতা।
এবার কিসমিস গুলো চিবিয়ে খেতে পারেন। আর কিসমিস ভেজানো পানিটুকু হালকা কুসুম গরম করে খালি পেটে খেয়ে নিন।ভেজানো যদি প্রতিদিন খাওয়া হয় তাহলে সপ্তাহ নিয়ে অন্ততপক্ষে ৩-৪ দিন এইভাবে ভিজিয়ে কিসমিস খাওয়ার চেষ্টা করুন।
দুধ কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা
দুধ কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষই হয়তো জানেন না। দুধের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান এবং প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন আর কিসমিস এর মধ্যেও রয়েছে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী সকল উপাদান এবং প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। তাই দুধ কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি। চলুন এবার আপনাদের জানিয়ে দেয়া যাক কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।দুধ এবং কিসমিস একসাথে খেলে উপাদান দুটি আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি ঘাটতির চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি।
ইমিউনিটি বাড়াইঃ দুধ এবং কিসমিস একসাথে খেলে এর মাধ্যমে আমরা প্রোটিন ,
ভিটামিন , আইরন , ক্যালসিয়াম অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সহ আরো বিভিন্ন ধরনের উপাদান
পেয়ে যাই। যার ফলে শরীরে পুষ্টি চাহিদার একটি বড় অংশ আমরা দুধ এবং কিসমিস
খাওয়ার মাধ্যমে পূরণ করে ফেলতে পারি। দুধ এবং কিসমিস একসাথে খেলে শরীরে পুষ্টি
ঘাটতি থাকে না বিধায় এই উপাদান দুটি আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে
সাহায্য করে।
রক্তস্বল্পতা দূর করেঃ রক্তস্বল্পতা দূর করার ক্ষেত্রে দুধ এবং কিসমিস একসাথে খেলে এটি জাদুর মতন কাজ করে। কারণ দুধ এবং কিসমিস দুটো উপাদান থেকে আমরা প্রচুর পরিমাণে আইরন পেতে পারি, আর রক্তস্বল্পতা দূর করার জন্য একটি অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য উপাদান হলো আয়রন।
আরো পড়ুনঃ পেটে গ্যাস হলে কি সমস্যা হয় এবং পেটের গ্যাস কমানোর উপায়
হাড় গঠনে সহায়তা করেঃ আমাদের হার মজবুত করার জন্য এবং গর্ভাবস্থায় শিশুর হাড়ের গঠনের জন্য অত্যাবশ্যকীয় হল ক্যালসিয়াম ।ক্যালসিয়াম শুধু হাড়ের গঠনের জন্য নয় হারের ভূমিকা রয়েছে বিভিন্ন ধরনের রোগ দূর করতেও ক্যালসিয়ামের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। যেহেতু দুধ এবং কিসমিস দুটোর মধ্যে থেকেই পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায় এই জন্য এই দুই উপাদান একসাথে মিলিয়ে খেলে এটি আমাদের হাড় গঠনের জন্য খুবই ফলদায়ক হয় , এবং অতি দ্রুত মাত্রায় আমাদের শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ দুধ এবং কিসমিস একসাথে খাওয়ার ফলে কিসমিসে থাকা ফাইবার
আমাদের হজম প্রক্রিয়াকে ঠিক করতে সাহায্য করে এবং দ্রুত খাদ্য হজমের সহায়তা করে
যার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্ত থাকা যায়।
যৌন অক্ষমতাকে দূর করেঃ কিসমিস এবং দুধ একসাথে খেলে এটি শরীরের যৌন উদ্দীপনা বাড়াতে সাহায্য করে এবং শারীরিক অক্ষমতা বা যৌন অক্ষমতাকে দূর বিশেষ সাহায্য করে।
রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস খেলে কি হয়
রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস খেলে কি হয় আপনি কি জানেন। যেকোনো সময় কিসমিস খেলেই এর
থেকে কিছু না কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা অবশ্যই পাওয়া যায় তবে কোন সময় কিসমিস
খেলে কোন কোন বিশেষ উপকারিতা গুলো পাওয়া যায় সেগুলো আমাদের জেনে রাখা প্রয়োজন,
আর এই কথা চিন্তা করে আপনাদের আজকে রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস খেলে কি হয় এই
বিষয়টিও জানিয়ে দেবো। চলুন তাহলে আর দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক রাতে ঘুমানোর
আগে কিসমিস খেলে কি হয়। রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস খেলে,
- শরীর থেকে টক্সিন পদার্থ বের হয়ে যেতে সাহায্য করে
- হাড় মজবুত হয়
- ওজন কমাতে সাহায্য করে
- এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় Skin ভালো রাখে এবং চেহারায় বয়সের ছাপ করতে দেয় না
- রাতে কিসমিস খেলে যদি বাড়াতে সাহায্য করে
- রক্তস্বল্পতা দূর করে
- অনিদ্রা দূর করে
- সেক্স রিলেটেড যে কোন সমস্যা দূর করে
- স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ রাতে মধু খাওয়ার উপকারিতা
সবচেয়ে বড় কথা হলো কিসমিসের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, আইরন, খনিজ উপাদান গুলো থাকায় রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস খেলে এটি আমাদের শরীরের পুষ্টি ঘাটতি দূর করার মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলে এবং শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url