গলা ব্যথা হলে করণীয় - ঢোক গিলতে গলা ব্যথার ওষুধ
আমাদের মধ্যে অতি সাধারণ অসুখগুলোর মধ্যে গলা ব্যথার সমস্যাটি অন্যতম। ছোট বড় যেকোনো বয়সী মানুষের মধ্যেই এই গলা ব্যথার সমস্যা লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু কেন হয় এই গলা ব্যথা এই বিষয়টি আজকে আপনাদের জানাবো এবং আরো জানাবো গলা ব্যথা হলে করণীয় বিষয় সম্পর্কে।
অনেক সময় গলা ব্যথা সমস্যা এতটাই মারাত্মক পর্যায়ে চলে যায় যে যে কোন খাবার খাওয়া , কথা বলা এবং ঢোক গিলাও আমাদের জন্য কষ্টকর হয়ে ওঠে এই পরিস্থিতিতে গলা ব্যথা হলে করণীয় বিষয়গুলো জানা থাকলে অনেকটাই সত্যি পাওয়া যায়। তবে গলা ব্যথা কমানোর এই ঘরোয়া টোটকা গুলো ঠান্ডা লাগার সহ সাধারণ গলা ব্যথা দূর করতে সাহায্য করলেও জটিল রোগের কারণে হওয়া গলা ব্যথা দূর করতে খুব একটা কাজ করে না। তাই যদি আপনারা অনুভব করেন যে গলা ব্যথা দূর করার এই ঘরোয়া উপায় গুলো ফলো করার পরেও সমস্যা থেকে যাই তাহলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা গ্রহণ করুন তার আগে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ুন এবং জেনে নিন গলা ব্যথার কারণ ও গলা ব্যথা হলে করণীয় বিষয়ক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো।সূচিপত্রঃগলা ব্যথা হলে করণীয় - ঢোক গিলতে গলা ব্যথার ওষুধ
গলা ব্যথা কেন হয়
গলা ব্যথা কথা খুবই সাধারণ এবং কমন একটি সমস্যা, অধিকাংশ সময় ঠান্ডা লাগার কারণে গলা ব্যাথার সমস্যা হতে দেখা যায়। গলা ব্যথা আর অন্যতম সাধারণ কারণ গুলোর মধ্যে রয়েছে - টনসিল প্রদাহ ,মাম্পস, ফ্যারিংজাইটিস এবং লেরিংজাইটিয়া ইনফেকশন । বেশিরভাগ সময় গলা ব্যথা হতে পারে ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারণে। আমাদের দেশে প্রায় মানুষের ভেতরে দেখা যায় ঠান্ডা লাগা এবং ভাইরাসজনিত ফ্লু ও ইনফ্লুয়েঞ্জা গুলো থেকে গলা ব্যথা হতে, যার অন্যতম উদাহরণ যেমন কোভিড 19 সহ সিগিনাল ইনফ্লুয়েঞ্জা ইত্যাদি।
এছাড়াও গলা ব্যথারকারণ হতে পারে পেটের অ্যাসিডিটি এবং এলার্জি আবার অনেক সময় হঠাৎ করে অতিরিক্ত জোরে কথা বলা , চিৎকার করা , ফ্রিজে ঠান্ডা জিনিস খাওয়ার কারণে গলা ব্যথা হতে দেখা যায়।এই সাধারণ কারণ গুলো ছাড়াও গলায় ব্যথা হতে পারে টিউমার বা ক্যান্সারের কারণে। গলা ব্যথার পেছনে অনেক কারণই থাকতে পারে তবে গলায় ব্যথা হলে এ ব্যাপারে অবহেলা না করে যত দ্রুত সম্ভব এটি সারিয়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বিশেষ করে যদি গলা ব্যথার সাথে শ্বাসকষ্ট , রক্তক্ষরণ , খোলা ভাব , দীর্ঘদিন ধরে গলা ব্যথা ইত্যাদি সমস্যা দেখা যায় তবে অতিদ্রুত ডাক্তারি পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।
ঢোক গিলতে গলায় ব্যাথার কারন
আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষেরই ঠান্ডা লাগার কারণে কথা ব্যথা হয় এবং এই ঠান্ডা
লাগা থেকে টনসিল প্রদাহ লেরিনজাইটিস এবং ফ্যারিনজাইটিস এর প্রদাহ ও ইনফেকশন
বেড়ে গিয়ে ঢোক গিলার সময় গলায় ব্যথা অনুভব হয় । ঢোক গিলার সময় গলা
ব্যথা হলেই আমরা সাধারণভাবে ধারণা করি যে এই ব্যথা ঠান্ডা লাগার কারণেই হয়ে
থাকে, এই ধারণাটি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সত্য প্রমাণিত হলেও অনেক সময় দেখা যায়
এই ধারণা মিথ্যা প্রমাণিত করে অনেক বড় বড় রোগের কারণেও ঢোক গেলার সময় গলা
ব্যথার অনুভূতি সৃষ্টি হয়। ঢোক গিলতে গলা ব্যাথার অন্যতম প্রধান কারণ হতে পারে
গলায় টিউমার অথবা ক্যান্সারের কারণে।
গলা ব্যথা হলে করণীয়
গলা ব্যথার সমস্যায় ভুগতে হয়নি বা ভোগেন না এমন মানুষ খুব কমই রয়েছে।
যদিও সাধারণ কারণে হওয়া গলা ব্যথাগুলো সপ্তাহখানেকের মধ্যে সেরে যাই , কিন্তু এই
টাইমটি পার করায় হয়ে পড়ে কষ্টকর। আর এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য গলা
ব্যথা হলে করণীয় বিষয়গুলো জানা থাকলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। গলা ব্যথা কমাতে
বা গলার ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে যে কাজগুলো করলে গলার ব্যথা থেকে অনেকটা
মুক্ত থাকবেন সেগুলো হলো,
অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা এড়িয়ে চলুনঃ ঠান্ডা লাগা জনিত কারণ , টনসিল
, জীবাণুর সংক্রমণ , এলার্জি যে কারণেই গলা ব্যথা হোক না কেন , গলা ব্যথা
হলে কথাবার্তা বলতে গেলে অনেক কষ্ট হয় এবং এ সময় গলার উপরে চাপ পড়ে। তাই গলা
ব্যথার সময় এই যন্ত্রণাদায়ক পরিস্থিতি এড়িয়ে চলার জন্য যতটা সম্ভব
অপ্রয়োজনীয় কথাবাত্রা এড়িয়ে চলুন।
শক্ত খাবারের পরিবর্তে তরল খাবার খানঃ গলা ব্যাথা হলে শক্ত খাবারের
পরিবর্তে নরম খাবার খান ,গলা ব্যাথার সময় শক্ত খাবার খেলে ব্যাথা আরো বেড়ে যাতে
পারে তাই এ সময় স্যুপ ,মাড়ি ভাত এই জাতীয় নরম খাবার খাওয়ার চেষ্টা
করুন।
এসিডিক খাবার এড়িয়ে চলুনঃ গলা ব্যথা হলে যেকোন ধরনের এসিডিক খাবার গুলো
এড়িয়ে চলতে হবে। গলা ব্যথার সময় এসিডিক খাবারগুলো খেলে পেটে গ্যাসের সমস্যা তৈরি
হতে পারে এবং এর থেকে গলায় জ্বালাপোড়া অনুভূত হতে পারে এতে করে
অস্বস্তি এবং গলা ব্যথা বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
ঠান্ডা খাবার দিয়ে চলুনঃ গলা ব্যথার সমস্যা যেই বিষয়টিতে
বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে সেটি হলো ঠান্ডা খাবার অর্থাৎ গলা ব্যাথার সমস্যা হলে
অবশ্যই ঠান্ডা জাতীয় কোন প্রকার খাবার খাওয়া যাবে না। গলায় ব্যথা যে কারণেই
হোক না কেন এই সময় ঠান্ডা খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে বিশেষ করে ফ্রিজের খাবার ,
আইসক্রিম ইত্যাদি ।সবসময় চেষ্টা করতে হবে হালকা কুসুম গরম খাবার খাওয়ার।
আরো পড়ুনঃ মাম্পস কেন হয়? মাম্পসের ঘরোয়া চিকিৎসা
কুসুম গরম পানি পান করুনঃ গলা ব্যথা দূর করতে ঠান্ডা পানি পরিহার করে
হালকা কুসুম গরম পানি পান করুন । হালকা কুসুম গরম পানি পান করলে গলা ব্যথার
সমস্যা থেকে সাময়িক হলেও আরাম পাওয়া যাবে। বিশেষ করে যাদের ঠান্ডা
লাগার কারণে বা টনসিলের কারণে গলা ব্যথা হয় তাদের ক্ষেত্রে কুসুম গরম পানি
পান করা খুবই জরুরী।
**
ঘনঘন গার্গেল করুনঃ গলা ব্যথা কমানোর জন্য কুসুম গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে
ঘন ঘন গার্গেল করুন। কুসুম গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে গর্গেল করলে জীবাণু
ধ্বংস হবে এবং এই টোটকাটি প্রদাহ কমাতেও সাহায্য করবে। গলা ব্যথা থেকে স্বস্তি
পাওয়ার জন্য ঘন ঘন গার্গেল করার পদ্ধতিটি অনেক পুরনো এবং কার্যকরী একটি
উপায়।
আদা চা পান করুনঃ গলা ব্যথা ও কাশি সারাতে আদার জুড়ি মেলা ভার । আদার ভেতরে রয়েছে অ্যাান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান যা প্রদাহ এবং ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে , এ কারনে গলা ব্যথা কমাতে খেতে পারেন আদা চা বা আদার রস কাশির সময় যখন গলা খুসখুস করে সেই সময় এক টুকরো আদা চিবিয়ে খেলে বা মুখে মধ্যে রাখলে এই সমস্যা অনেকটাই দূর হয়। ঠান্ডা লাগা জনিত কারণে গলা ব্যথা হলে আদা খেলে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়।
খেতে পারেন রসুনঃ গলা ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে ব্যবহার করতে পারেন রসুন। রসুনের ভেতরে থাকা এন্টিব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান দ্রুত সময়ের মধ্যে গলা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এলিসিন নামক একটি যৌগ এই রসুনের ভেতরে থাকায় সংক্রমণ রোধ করার ক্ষেত্রেও রসুন বিশেষ সাহায্য করে। গলা ব্যথা কমানোর জন্য রসুনের সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন অথবা কাঁচা রসুন চিবিয়েও খেতে পারেন।
**
গোলমরিচ ও মধুঃ গলা ব্যথা কমাতে গোলমরিচ রাখতে পারে বিশেষ অবদান।
গোলমরিচের ভেতরে রয়েছে মেন্থল এবং গোলমরিচের রয়েছে এন্টি ইনফ্লামেটরি ও এন্টি
ভাইরাল বৈশিষ্ট্য যা গলা ব্যাথার সমস্যা থেকে দ্রুত আরাম দিতে সাহায্য করে। গলা
ব্যথা কমাতে গরম পানি সাথে গোলমরিচের গুড়া ও মধু মিশিয়ে পান করতে পারেন এতে
অল্প সময়ের মধ্যেই গলার ব্যথা থেকে অনেকটা স্বস্তি পাওয়া যাবে।
মধু ঃ ঠান্ডা লাগা জনিত যে কোন সমস্যা দূর করার পাশাপাশি গলার
ব্যথা দূর করতেও মধু বিশেষ কার্যকরী। মধুর ভেতরে রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ,
এন্টিমাইক্রোবিয়াল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। গলা ব্যথা কমানোর জন্য হালকা কুসুম গরম
পানিতে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন । এছাড়াও কুসুম গরম পানিতে মধুর সাথে লেবুর
রস মিশিয়ে খেলেও গলার ব্যথা থেকে দ্রুত আরাম পাওয়া যায়। মধু শুধু গলা ব্যথা বা
ঠান্ডা লাগা জনিত সমস্যা দূর করতে নয় শ্বাসকষ্ট কমাতেও সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ অ্যাডিনয়েডের লক্ষণ ও অ্যাডিনয়েড হলে করণীয়
আপেল সিডার ভিনেগারঃ গলা ব্যথা অ্যাপেল সিডার ভিনেগার অনেক ভালো কাজ করে, শুধু গলা ব্যথায় নয় গলা খুসখুস দূর করার জন্যও । অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান থাকায় গলা ব্যথা কমাতে বিশেষ সাহায্য করতে পারে এই ভিনেগার। গলায় ব্যথা হলে হালকা গরম পানির সাথে সমপরিমাণ অ্যাপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে এক আধ ঘণ্টা পর পর কুলকুচি ও গার্গেল করলে গলা ব্যথা ও গলা খুসখুস কম হয় পাশাপাশি দাঁতে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থাকলে সেটিও রোধ হবে।
ঢোক গিলতে গলা ব্যথার ওষুধ
ঢোক গিলতে গলার ব্যথায় অস্থির হয়ে আপনাদের মধ্যে অনেকেই গলা ব্যথার ওষুধের নাম
জানতে চান। আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষই কোন সমস্যা হলে শুরুতেই রেজিস্টার
ডাক্তারের পরামর্শ না নিয়ে , আশেপাশে থাকা ফার্মেসি গুলো থেকে ওষুধ সংগ্রহ করে
খেয়ে থাকে কিন্তু এই অভ্যাসটি শরীরের উপরে মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করতে
পারে তাই যে কোন সমস্যা সমাধান করার ওষুধ গুলোর নাম জানা থাকলেও কোন সময় এই
ওষুধগুলো ডাক্তারি পরামর্শ ছাড়া সেবন করা উচিত নয়। নিচে আপনাদেরকে ধোক কিনতে
গলা ব্যথার ওষুধের নাম সাজেস্ট করা হলো তারপরেও এই ঔষধ গুলো সেবনের পূর্বে অবশ্যই
রেজিস্টার ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন।
- Cap. Doxicap100mg
- Tb. Napa500mg
- Cap. Doxi A100mg.
- Cap.Doxin100mg
- Tb. Oracine k 250/500 mg
- Tb Open 250/500 mg.
- Tb .Penveick250/500 mg
নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url