আলু দিয়ে ফর্সা হওয়ার ৮টি উপায়
অনেকের গায়ে রং একটু চাপা থাকে , তারা চাই তাদের রঙ যদি আরেকটু উজ্জ্বল বা ফর্সা হয়। এই ইচ্ছা থেকেই অনেকে বিভিন্ন কেমিক্যালযুক্ত প্রোডাক্ট ইউজ করার মাধ্যমে ত্বকের ক্ষতি করছে। যারা ফর্সা হতে চান ন্যাচারাল উপায়ে তারা , আমাদের ঘরে সব সময় মজুদ থাকা আলুর মাধ্যমেও নিজেদের গায়ের রং কে ফর্সা করে নিতে পারেন। আলু দিয়ে যে শুধু মুখরোচক খাবার তৈরি হয় তাই নয় গায়ের রং ফর্সা করে নেয়া যায় খুব সহজে। আর এই কাজটি কিভাবে করে তা আজকে আপনাদের জানাবো।
ফর্সা হওয়ার জন্য আমরা অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের দামি দামি বেশি এবং বিদেশি বিউটি প্রোডাক্ট ইউজ করে থাকে। এই প্রোডাক্টগুলো আমাদেরকে আশানুরূপ ফল তো দেয় না , বরঞ্চ পাশাপাশি তৈরি করে স্কিনের নানান সমস্যা। কিন্তু আমরা চাইলে আমাদের হাতের কাছে থাকা সহজলভ্য সবজি আলু দিয়ে আমাদের ত্বককে ফর্সা করে নিতে পারি। আমাদের প্রতিটি ঘরে সবসময়ই আলু মজুদ থাকে , তাই নিয়মিতভাবে খুব সহজেই আমরা আলু ব্যবহারের মাধ্যমে নিজেদের ত্বককে উজ্জ্বল এবং ফর্সা করে নেওয়ার কাজটি অসম্ভব কিছু নয় , শুধু জানতে হবে এর উপায় বা নিয়মগুলো। ফর্সা হওয়ার জন্য যে যে প্রসেসে আলু ব্যবহার করতে পারেন সেগুলোই জানাবো আজকের সম্পূর্ণ আলোচনায়।
আলু দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
সরাসরি আলুর রস ব্যবহার করে অথবা আলুর রসের সাথে ঘরে থাকা সামান্য কিছু উপকরণ
মেশানোর মাধ্যমে , খুব সহজে এবং অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা আমাদের গায়ের ত্বককে
উজ্জ্বল এবং ফর্সা করে তুলতে পারি। আর এই সহজ কাজটি করার জন্য কিভাবে আলু ব্যবহার
করতে হবে তার প্রসেস গুলো প্রথমে ভালোভাবে জেনে নিন। ফর্সা হওয়ার জন্য ,
সরাসরি আলুর রস ব্যবহারঃ আলু পিষে বা ব্লেন্ড করে, এর থেকে রস বের
করে নিয়ে সেই রস সরাসরি তকে এপ্লাই করতে পারেন অন্য কোন উপাদান এড করা
ছাড়াই। আলুর রস আমাদের ত্বক ফর্সা করা ছাড়াও , প্রাকৃতিক ব্রিজ ,
ন্যাচারাল ক্লিনজার এবং টোনার হিসেবে অনেক ভালো কাজ করে।ত্বক উজ্জ্বল এবং ফর্সা
করার জন্য কটন বলের সাহায্যে আলুর রস স্ক্রিনে ভালোভাবে
লাগিয়ে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন এবং ভালোভাবে মুখ পরিষ্কার করে নিলেই
কিছুদিনের মধ্যেই এর সুফল পাবেন।
আলু এবং গোলাপ জল ঃআলুর রস , গোলাপ জল , মধু একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করলে ত্বকের কালো দাগ দূর করে ত্বক ফর্সা করতে সাহায্য করে। তবে যদি আপনার ড্রাই স্কিন হয় তাহলে আলুর সাথে লেবুর রসের পরিবর্তে মধু ব্যবহার করুন আর যদি আপনার অয়েলি স্কিন হয় তাহলে মধুর পরিবর্তে লেবুর রস অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে।
ডিমের কুসুম ,বেসন ও আলুর রসঃ ডিমের কুসুম , আলুর রস , বেসন একসাথে মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করে আপনার স্ক্রিনের উপরে সপ্তাহে কমপক্ষে তিন দিন নিয়মিত ব্যবহারের করুন। এতে আপনার ত্বক পরিষ্কার হবে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ত্বক ফর্সা হবে।
অ্যালোভেরা জেল , মুলতানি মাটি ও আলুর রসঃ প্রাকৃতিকভাবে ফর্সা ত্বক পাওয়া জন্য আলুর রস ব্যবহার করতে পারেন এলোভেরা জেল ও মুলতানি মাটির সাথে। এই প্যাকটির সাথে আপনি চাইলে সামান্য পরিমাণে চালের আটাও মিশাতে পারেন এতে করে , ত্বককে ন্যাচারাল স্ক্রাবের পাশাপাশি ত্বক উজ্জ্বল এবং ফর্সা হতে সাহায্য করবে। এই ফেসপ্যাকটি সপ্তাহে ১ -২ ব্যবহার করতে পারেন 20 থেকে 30 মিনিটের জন্য।
আরো পড়ুন ঃ কমলার খোসা দিয়ে রূপচর্চা করার উপায়
আলুর রস ,লেবু এবং মধুঃ রূপচর্চায় এবং ত্বক ফর্সা করতে মধু
ব্যবহারের কথা নতুন করলে বলার আর কিছুই নেই। আর লেবু এবং আলু দুটোই আমাদের ত্বকের
জন্য প্রাকৃতিক ব্রিচ হিসেবে কাজ করে। তাই আলুর রস , লেবুর রস এবং মধু একত্রে
মিশিয়ে ত্বকের ব্যবহার করলে এটি একদিকে যেমন আমাদের ত্বকের ন্যাচারাল ব্রিজ
হিসেবে কাজ করবে অন্যদিকে ত্বকের কালো দাগ দূর করার পাশাপাশি স্থায়ীভাবে গায়ের
রং ফর্সা করতেও সাহায্য করবে। তবে রূপচর্চার কাজে লেবু ব্যবহারের সময় সচেতন
থাকবেন , কোন সময় সরাসরি লেবুর রস টকে লাগাবেন না , এতে স্ক্রিনের রেস ,
জ্বালাপোড়া , চুলকানি হতে পারে। তাই ত্বকের লেবু ব্যবহারের সময় অবশ্যই পানি
অথবা অন্য কিছুর সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করবেন।
আপনার হাতে তার কাছে যদি আলুর রসের সাথে মেশানোর মতন মধু বা লেবু কোনোটির একটি না
থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে কোন সমস্যা নেই। আলুর রসের সাথে মধু অথবা আলুর রসের সাথে
লেবুর রস যে কোন একটি মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন , তবে তিনটি উপকরণ একসাথে
মেশাতে পারলে এর কার্যকারিতা বেশি পাওয়া যায়।
আলু এবং শসাঃ স্কিনের রং ফর্সা করার জন্য আলুর সাথে যদি শসার রস
এড করা হয় তাহলে এর কার্যকারিতাও বেড়ে যায় বহুগুনে । কারণ আমাদের গায়ের রং
ফর্সা করতে , ডার্ক সার্কেল দূর করতে এবং ত্বকের কালো দাগ দূর করার ক্ষেত্রে শসার
অবদানও কম নয়। শশা এবং আলু একসাথে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে এর মধ্যে সামান্য
একটু বেসন অথবা আটা কিংবা ময়দা মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করে ত্বকে লাগাতে
পারেন। এই প্যাকটি সপ্তাহে ২-৩ লাগিয়ে 15 থেকে 30 মিনিট অপেক্ষা করার পরে
ভালোভাবে স্কিন পরিষ্কার করে নিলে এক মাসের মধ্যেই আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বুঝতে
পারবেন।
আলু ও গাজরের রসঃ আলু দিয়ে ত্বক ফর্সা করার জন্য ঘরোয়া ভাবে
আলু ও গাজর দিয়ে ফেসিয়াল এর জন্য একটি প্যাক তৈরি করে দিতে পারেন। এই
ফেসিয়ালটি শুধু আপনাকে ফর্সার ত্বকই দেবে না, বরং এর পাশাপাশি আপনাদের মুখের
মেছতার কালো দাগ দূর করতে যথেষ্ট সাহায্য করবে। প্রথমেই এই ফেসপ্যাকটি তৈরি
করার জন্য আপনাকে আলু ও গাজর কুচি করে নিতে হবে এবং এগুলোকে একত্রে ব্লেন্ড
করে নিতে হবে। আপনি চাইলে গাজর ও আলু আলাদাভাবে ব্লেন্ড করতে পারেন। উপকরণ
দুটি ব্লেন্ড করা হয়ে গেলে এর থেকে থেকে রসগুলো বের করে নিতে হবে , সবটুকু রস
বের করা হয়ে গেলে রসের সাথে দের অথবা দুই চামচ পরিমাণ চিনি মিশিয়ে হালকা আছে
কিছুক্ষণ চুলায় জ্বাল দিতে হবে এবং অনবরত নাড়তে হবে। চুলার আচে কিছুক্ষণ
নাড়াচাড়া করার ফলে দেখা যাবে মিশ্রণটি ঘন আকার ধারণ করেছে । আলোর রস গাজর এবং
চিনির মিশ্রণটি ঘন হয়ে আসলে এটিকে নামিয়ে ঠান্ডা করে ফেসপ্যাক আকারে
ত্বকে লাগিয়ে রাখতে হবে 15 থেকে 20 মিনিট। তারপর পরিষ্কার পানি দিয়ে ত্বক ধুয়ে
নিতে হবে। এভাবে যদি আপনি মাসে ২-৩ দিন এই ফেসিয়ালটি ইউজ করেন তাহলে খুব
তাড়াতাড়ি আপনার ত্বক ফর্সা ও উজ্জ্বল হবে এবং পাশাপাশি মেছতার সমস্যা দূর
হবে।
মন্তব্য , ত্বকে আলুর রস ব্যবহারের মাধ্যমে শুধু যে ত্বক ফর্সা হয় তাই নয় এর
পাশাপাশি স্কিনের বিভিন্ন সমস্যা , ব্রণ , ডার্ক সারকেল , রিংকেলস , সান
বার্ন ইত্যাদিও দূর হয়। ফর্সা হওয়ার জন্য শুধু শুধু টাকা-পয়সা খরচ না করে এবং
বাজারের প্রোডাক্ট ইউজ করার মাধ্যমে স্কিনের ক্ষতি না করে আলুর রস ব্যবহারের
মাধ্যমে প্রাকৃতিক উপায়ে গায়ের ত্বককে ফর্সা এবং উজ্জ্বল করে নিন। এতে আপনার
ত্বকের উজ্জ্বলতা যেমন বৃদ্ধি পাবে অন্যদিকে স্কিনের কোন ক্ষতি হবে না।
নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url