কোমর ব্যথা কি প্রেগন্যান্সির লক্ষণ - প্রেগন্যান্সির লক্ষণ কি কি

প্রেগনেন্সির সেনসেটিভ সময়টি সতর্কতার সাথে পার করার জন্য সর্বপ্রথমে জানা দরকার প্রেগন্যান্ট হওয়ার লক্ষণ গুলো। কারণ যত দ্রুত আমরা প্রেগন্যান্ট এর ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারব তত দ্রুত সময় থেকে এর ব্যাপারে সচেতন হতে পারব। এছাড়াও অনেকেরই হয়তো জানা নেই যে কোমর ব্যথা প্রেগনেন্সির লক্ষণ কি না এই বিষয়ে। প্রেগনেন্সি সংক্রান্ত সাধারণ বিষয়গুলো সম্পর্কে সব মেয়েদেরই মৌলিক একটা ধারণা থাকা উচিত।

বিশেষ করে যারা প্রথমবার মা হতে চলেছে তাদের ক্ষেত্রে বিস্তারিতভাবে প্রেগনেন্সির টাইম টা কিভাবে পার করতে হবে স্পেশালি প্রথম ট্রাইমিস্টার এই সময়টি। প্রেগনেন্সির লক্ষণ গুলো জেনে নিয়ে শুরু থেকে এই ব্যাপারে সচেতন হওয়া এবং প্রেগন্যান্ট অবস্থায় যদি কোমর ব্যথার মতন সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে এই ব্যথা কিভাবে প্রতিরোধ বা প্রতিহত করা যায় সে বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য আজকের পোস্টটি পড়ে নিতে পারেন। এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন প্রেগন্যান্ট অবস্থায় যদি কোমর ব্যথা হয় তাহলে এই ব্যথা থেকে কিভাবে উপশম পাবেন আর প্রেগনেন্সির প্রথম মাসের কোন কোন বিষয়গুলোর উপরে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে বিশেষভাবে।

সূচিপত্রঃ কোমর ব্যথা কি প্রেগন্যান্সির লক্ষণ - প্রেগন্যান্সির লক্ষণ কি কি

প্রেগন্যান্সির লক্ষণ কি কি

মেয়েদের সম্পূর্ণ জীবনী অত্যন্ত সেনসিটি এবং ক্রিটিকাল সময় হলো প্রেগনেন্সি টাইম। এই সময় শুরু থেকে প্রত্যেকটি ধাপে ধাপে সচেতন থাকতে হয় একজন প্রেগনেন্ট মহিলাকে। এমনকি রাতে ঘুমানোর সময় সচেতনতা মেইনটেইন করে শুতে হয়। আর এই সচেতনাগুলো মেনে চলা শুরু করতে হবে একেবারে প্রথম দিন থেকে অর্থাৎ যেদিন আপনি বুঝতে পারছেন যে প্রেগন্যান্ট হয়েছেন ঠিক সেদিন থেকে। আর দ্রুত সচেতনতা গ্রহণের জন্য অবশ্যই প্রেগনেন্সির লক্ষণ গুলো সম্পর্কে সাধারণ ধারণাটুকু রাখা দরকার। মেয়েরা প্রেগনেন্ট হলে এর সাধারণ এবং বিশেষ কিছু লক্ষণ বা উপসর্গ প্রকাশ পায় , এই লক্ষণ গুলোর মধ্যে রয়েছে

**

  • মাথা ঘোরা
  • বমি বমি ভাব লাগা অথবা বমি হওয়া
  • মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়া
  • দুর্বলতা এবং ক্লান্তি অনুভব করা
  • সাদা স্রাব স্বাভাবিকের তুলনায় একটু বেশি হওয়া
  • তলপেটে ব্যথা
  • খাবারের অরুচি হওয়া
  • বিশেষ খাবারের উপরে টান হওয়া । কারো কারো ক্ষেত্রে টক খাওয়ার , ঝাল , মিষ্টি খাওয়া ইত্যাদির প্রবণতা বেড়ে যাওয়া
  • লালা নিঃসরণ বেড়ে যাওয়া
  • খাবার বা তরকারির গন্ধ সহ্য না হওয়া
  • ঘ্রাণ শক্তি বেড়ে যাওয়া
  • ঘন ঘন এবং প্রস্রাবের চাপ হওয়া
  • পেটের ভেতরে অস্বস্তি হওয়া
  • পেট ফাঁপা এবং পেটে এসিডিটির মাত্রা বেড়ে যাওয়া
  • বুক জ্বালাপোড়া করা
  • কোষ্ঠকাঠিন্য
  • স্তন ব্যথা
  • স্তন এবং কোমরের সাইজ বেড়ে যাওয়া
  • রক্তচাপ , পালস রেট বেড়ে যাওয়া
  • ঘন ঘন মুড সুইং
  • তা কারো কারো ক্ষেত্রে যোনিপথ বা জরায়ু থেকে সামান্য রক্ত ক্ষরণ হতে পারে

কোমর ব্যথা কি প্রেগন্যান্সির লক্ষণ

বিশেষ করে প্রথমবার প্রেগনেন্ট হওয়া মহিলাদের অধিকাংশই একটি প্রশ্ন জানতে চেয়ে থাকেন ,  প্রশ্নটি হল কোমর ব্যথা কি প্রেগনেন্সির লক্ষণ , নাকি অন্য সমস্যা ? এর উত্তরটি হল , হ্যাঁ । মেয়েরা প্রেগন্যান্ট হলে বেশ কিছু স্বাভাবিক উপসর্গ প্রকাশ পায় এবং এর মধ্যে কোমর ব্যথাও একটি। কোমরে ব্যথা হওয়া প্রেগনেন্সির খুবই স্বাভাবিক এবং সাধারণ একটি লক্ষণ। এর মূল কারণ হলো শরীরে হরমোনের পরিবর্তন। গর্ভাবস্থায় শরীরে হরমোনের বিশেষ কিছু হরমোন নিঃসরণের মাত্রা বেড়ে যায় , যার মধ্যে রয়েছে প্রোজেস্টেরন ও রিলাক্সিন হরমোন। এই হরমোন দুটি নিঃসরণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে কোমরের লিগমেন্টটেসকে কিছুটা সেনসিটি , নরম ও ঢিলা করে দেয় আর এর কারণেই মূলত এই সময় কোমরে ব্যথা অনুভব হয়।

আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কি কি কাজ করা নিষেধ

এছাড়াও প্রেগন্যান্ট অবস্থায় মেয়েদের জরায়ু বড় হতে থাকে , জরায়ু বড় হওয়ার কারণে মধ্যাকর্ষণের বিপরীতে ভার বহন করতে যথেষ্ট শক্তি ব্যয় করতে হয়। প্রেগনেন্ট অবস্থায় জলবায়ু বড় হতে থাকলে , এর আশেপাশে থাকা বেশিগুলো বিচ্ছিন্ন হতে শুরু করে আর এই অবস্থাতে মেরুদন্ডের উপরে বিশেষ চাপ পড়ে, মেরুদন্ডের চাপের কারণে প্রেগন্যান্ট অবস্থায় কোমর ব্যথা হওয়া এই সময়ের অন্যতম একটি কারণ । প্রেগনেন্ট অবস্থায় মহিলাদের ওজন বেড়ে যাওয়া এবং শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি কারনেও সময়ের সাথে সাথে কোমর ভারী অনুভব করা , কোমরে ব্যথার সমস্যার অনুভব হয়।

**

প্রেগন্যান্ট অবস্থায় মেয়েদের কোমর ব্যথা হওয়ার স্বাভাবিক কারণ হলো পেটের পেশিগুলো দুর্বল হয়ে পড়া। সঠিকভাবে শোয়া-বসা, হাঁটাচলা না করা এই সময় কোমর ব্যথা হওয়ার আরেকটি কারণ। প্রেগনেন্সিতে যদি সঠিকভাবে শোয়া-বসা , হাঁটা চলার অঙ্গভঙ্গি ঠিক না থাকে  এবং এই সময় যদি স্বাভাবিকের চেয়ে ভারী কাজ , অতিরিক্ত কাজকর্ম করা হয় তাহলে এর কারণে কোমর ব্যথা হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় কোমর ব্যথা হলে করণীয়

প্রেগনেন্সির অতি স্বাভাবিক সমস্যা গুলোর মধ্যে কোমরে ব্যথা হওয়া একটি , প্রায় প্রতি চারজনে তিনজন প্রেগন্যান্ট মহিলা এই সমস্যা ফেস করে। প্রেগনেন্সির শুরু থেকেই কোমর ব্যথার সমস্যা থাকলেও শেষ ট্রাইমেস্টারে এটি চরম আকার ধারণ করে। কোন কোন মহিলাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যাটি অসহ্য পর্যায়ে চলে যায় , যেহেতু প্রেগনেন্সিতে কোমর ব্যথার সমস্যা কি খুবই কমন এবং এর কারণে জীবনযাপন অসহ্য পর্যায়ে চলে যাই , তাই এই পরিস্থিতি থেকে রিলিফ পেতে এবং এই পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার জন্য বিশেষ কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। গর্ভাবস্থায় কোমর ব্যথা হলে করণীয় বিষয় গুলো হলো ,

**

ফিজিক্যাল এক্সারসাইজঃ প্রেগনেন্সিতে কোমরের ব্যথা কমানোর জন্য এই সময়কার নির্দিষ্ট ব্যায়াম  করলে কোমরের ব্যথা থেকে অনেকটাই উপশম পাওয়া যায়। তবে অবশ্যই , প্রেগন্যান্সির নির্দিষ্ট ব্যায়াম গুলো করতে হবে কোনভাবেই এই অবস্থাতে ভারী ব্যায়াম করা যাবে না। ব্যায়াম বা এক্সারসাইজ আমাদের মেরুদন্ড ও কোমরের পেশিগুলোকে শক্তিশালী করে তোলে আর এই কারণেই প্রেগন্যান্ট অবস্থায় নিয়মিত হালকা এক্সারসাইজ করলে কোমরের বেশি শক্ত হবে এবং ব্যথা কমবে। প্রেগন্যান্ট অবস্থায় সহজ ব্যায়ামগুলোর মধ্যে বেছে নিতে পারেন হাঁটা এবং ইয়োগা কে।

ভারী কাজ ও ভারী জিনিস না তোলাঃ প্রেগন্যান্ট অবস্থায় ভারী কাজ বা বেশিক্ষণ কাজ করলেও কোমরে ব্যথা হয়। আর আমরা সবাই জানি যে প্রেগন্যান্ট অবস্থায় ভারী কাজকর্ম করলে কোমর ব্যথা ছাড়াও শরীরের বিভিন্ন সমস্যার পাশাপাশি মিস ক্যারেজ হওয়ার সম্ভাবনাও অনেক বেশি থাকে। তাই এই সময় কখনো ভারী কাজ করা যাবে ন। মাটি থেকে কোন কিছু তোলার সময় চেষ্টা করতে হবে কোমর কোমর বাঁকা না করে তোলার । নিচে থেকে কোন কিছু যদি উঠাতেই হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে হাঁটু ভাঁজ করে উঠাতে হবে এতে কোমরের উপরে চাপ কম পড়বে এবং ব্যথা বেশি হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে।

কোমরে মাসাজ করাঃ এমনিতেও ব্যথার স্থানে হালকা মাসাজ দিলে , ব্যথা পুরোপুরি নির্মূল হোক আর নাই হোক কিছুক্ষণ বেশ অনেকটা রিলাক্স পাওয়া যায়। আর এই থেরাপিটি প্রেগনেন্সির কোমর ব্যাথা কমানোর ক্ষেত্রেও কাজে লাগাতে পারেন। কোমরের ব্যথা হলে হালকা হাতে অথবা একটু তেল কোমরে লাগিয়ে নিয়ে , হালকা হাতে মাসাজ করতে পারেন

একটানা বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে বসে না থাকাঃ শরীরের অভ্যন্তরের বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন এবং ক্রমবর্ধমান ওজনের কারণে প্রেগন্যান্ট অবস্থায় প্রমর ব্যথা হতে পারে তাই এই সময় একটানা বেশিক্ষণ শুয়ে বসে বা দাঁড়িয়ে না থেকে কিছুক্ষণ পরপর অবস্থান পরিবর্তন করা উচিত। অর্থাৎ কিছুক্ষণ শুয়ে থাকার পরে হয়তো বা দুই পাঁচ মিনিট বসে থাকতে পারেন আবার বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করার পরে কিছুক্ষণ শুয়ে বসে রেস্ট নিতে পারেন অথবা মাঝে মাঝে আস্তে আস্তে হাঁটাহাঁটি করলেও কোমরের ব্যথাটা অনেকটা কম হবে। তবে যেটাই করুন না কেন সাবধানের সাথে আসতে ধীরে করতে হবে।

বাঁ পাশে ঘুরে শোয়াঃ গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রেগন্যান্ট অবস্থায় বাঁ পাশে আসলে কোমর ব্যথার সমস্যা অনেকটা কম থাকে কারণ এই পজিশনে শোয়ার ফলে মেরুদন্ডের ওপরে চাপ কম পড়ে এবং শরীরে রক্ত প্রবাহ ভালোভাবে চলাচল করতে পারে। তাই এই সময় চিত হয়ে বা ডান পাশে না ফিরে বাঁ পাশে ফিরে শুলে কোমর ব্যথা কম হয়।

আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় ডানপাশে ঘুমালে কি হয়

বালিশ ব্যবহারঃ এই সেনসিটিভ সময়ে কোমরের ব্যথা , কোমর ভারী লাগা বা কোমর খিচে ধরে থাকা যাই বলেন না কেন এর থেকে  সাময়িক কিছুটা আরাম পেতে বিছানায় শোয়ার সময় কোমরের পাশে বালিশ ব্যবহার করতে পারেন। এই সময় কোমরের পাশে বা পেটের পাশে এবং দুই পায়ের মাঝখানে  বালিশ নিয়ে শুলে অনেকটা আরাম ফিল হয় , এক্ষেত্রে আপনি প্রেগনেন্সিতে ব্যবহার করার জন্য স্পেশাল বালিশগুলো আলাদাভাবে বানিয়ে নিতে পারেন অথবা অনলাইন থেকে অর্ডার করে নিতে পারেন।

ঠান্ডা ও গরম কম্প্রেস দেয়াঃ কোমর ব্যথা কমানোর জন্য ঠান্ডা ও গরম কম্প্রেস অর্থাৎ সেক দিতে পারেন কোমরে। হট ওয়াটার ব্যাগ , কোল্ড ওয়াটার ব্যাগ অথবা কাপড়ের সাহায্যেও কোমরের সেক দিলে অনেকটা আরাম পাওয়া যাবে। যেহেতু এক একজনের শরীরে বৈশিষ্ট্য এক এক রকম তাই ঠান্ডা বা গরম সেক দেওয়ার মাধ্যমে প্রথমে যাচাই করে নিতে পারেন কোন ধরনের সেক দিলে আপনি বেশি আরাম অনুভব করছেন। যদি ঠান্ডা পানির সেক দেয়াতে আরাম বোধ করেন তাহলে এটি আর যদি গরম পানির সেক সেক দিলে বেশি আরাম বোধ করেন তাহলে সে ক্ষেত্রে গরম পানি ব্যবহার করতে পারেন। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন কখনোই পেটে সেক দেয়া যাবে না  , এতে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে।

অঙ্গভঙ্গি ঠিক করাঃ প্রেগন্যান্ট অবস্থায় শরীরের অঙ্গভঙ্গি ঠিক না থাকার কারণে ও অনেক সময় কোমরে ব্যথা সহ বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হয়। যেমন এই পেট বড় হওয়া ওজন বেড়ে যাওয়ার কারণে অনেকে সোজা হয়ে হাটে না , আবার দেখা যায় যে এই সিচুয়েশনে অনেকের বিশ্রাম বা ঘুমানোর সময় শোয়ার পজিশন ঠিক থাকে না। প্রেগনেন্সিতে এই বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখা খুবই জরুরী , অঙ্গভঙ্গ নিয়েই ঠিকভাবে চলাফেরা এবং শোয়া বসা করলে কোমরের ব্যথা অনেকটাই কমানো সম্ভব। এই সময় যতটা সম্ভব কোমর সোজা করে হাঁটাচলা করার চেষ্টা করতে হবে , যদি এই পরিস্থিতিতে সোজা হয়ে হাটা অনেকটা কষ্টকর হয়ে পড়ে তারপরেও চেষ্টা করতে হবে কোমর সোজা রেখে বসা বা হাঁটার তাতে কোমরের উপরে চাপ কম পড়বে এবং ব্যথা কম হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।

জুতা ও স্যান্ডেল বাছাইঃ প্রেগন্যান্ট অবস্থায় জুতা বা স্যান্ডেল বাছাই করার ক্ষেত্রেও যথেষ্ট সতর্ক হতে হবে। এই সময় উঁচু স্যান্ডেল বা উঁচু জুতা ব্যবহার করলে আমাদের শরীরের ভার পায়ের পাতার দিকে বেশি থাকে আর এই কারণেও অনেক সময় কোমর ব্যথা হতে পারে। উঁচু জুতা স্যান্ডেল ব্যবহার করলে শুধু কোমর ব্যথায় নয় প্রেগন্যান্ট অবস্থায়  দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনাও থাকি তাই অবশ্যই এই সময় উঁচু স্যান্ডেল পরিহার করে ফ্লাট এবং নিচু স্যান্ডেল ব্যবহার করতে হবে।

গর্ভাবস্থায় প্রথম মাসের সতর্কতা

প্রেগনেন্সি টেস্ট করার পরে যদি আপনি সম্পূর্ণরূপের নিশ্চিত হন যে , আপনি প্রেগন্যান্ট তাহলে সেই মুহূর্ত থেকেই সতর্কতা এবং সাবধানতা অবলম্বন করে চলতে হবে কেননা মেয়েদের প্রেগনেন্সির সম্পূর্ণ টাইমটাই অত্যন্ত সেনসিটি বিশেষ করে প্রথমের এক থেকে তিন মাস। এই সময় শারীরিক নানান জটিলতা হওয়ার পাশাপাশি মিসক্যারেজ হওয়া সম্ভব না বেশি থাকে। প্রেগন্যান্সি নিশ্চিত হলে সর্বপ্রথমে উচিত হবে একজন ভালো গাইনোকলজিস্ট দেখিয়ে নেওয়া এবং তার থেকে সব ধরনের ইনস্ট্রাকশন গ্রহণ করা। প্রেগনেন্সির প্রথম মাস মা কে অত্যন্ত সচেতন হতে হবে বিশেষ করে চলাফেরা ওঠা বাসার ব্যাপারে।

প্রেগনেন্ট অবস্থায় যেহেতু শরীরের অভ্যন্তরী বেশ কিছু হরমোনের তারতম্য বা পরিবর্তন দেখা যায় এবং এর পরিবর্তন উপসর্গগুলো বাহ্যিক ভাবেও লক্ষ্য করা যায়। তাই এই সময় শারীরিক পরিবর্তনগুলো দেখে ঘাবড়ে না গিয়ে যতটা সম্ভব টেনশন মুক্ত এবং রিলাক্সইং লাইফ লিড করা উচিত। এই সময় এসময় দুশ্চিন্তা , টেনশন এগুলো বাচ্চার ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে , তাই যতটা সম্ভব টেনশন মুক্ত থাকতে হবে। ভারী কাজকর্ম করা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে এবং হাঁটাচলা ওঠা বসার সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। প্রেগনেন্সির প্রথম দিকে পেটে এসিডিটির সমস্যা হয়ে থাকে তাই এ সময় সহজপাত্র খাবারগুলো খেতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে যেন কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা না দেয়।

প্রেগন্যান্ট অবস্থায় অনেকেরই মাসাল পেন , ব্যাক পেইন , পেট ব্যথা কোমর ব্যথা ইত্যাদি হয়ে থাকে কোন প্রকার ব্যথা নাশক ঔষধ গুলো নিজে নিজে না খাওয়াই ভালো , যদি ব্যথার কারণে এমার্জেন্সি সিচুয়েশন তৈরি হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারি পরামর্শ নিয়ে তারপরেই খাওয়া উচিত। প্রেগন্যান্ট অবস্থায় সবচেয়ে নজর দিতে হয় যে বিষয়টিতে সেটি হল খাওয়া-দাওয়া। কেননা আপনারা জানেন যে প্রেগন্যান্ট অবস্থায় মায়ের খাবার থেকে পুষ্টি সংগ্রহ করেই গর্ভের বাচ্চা সুস্থভাবে বেড়ে ওঠে। তাই এই সময়টিতে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া একজন প্রেগন্যান্ট মহিলার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সময় যদি পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা না হয় তাহলে গর্ভবতী নারীর শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবে এবং পুষ্টি ঘাটতি , রক্তশূন্যতা সহ আরো বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হবে যা গর্ভের সন্তানের জন্য মোটেই ভালো নয়। তবে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের পূর্বে অবশ্যই জেনে নিতে হবে প্রথম তিন মাস কোন খাবারগুলো প্রেগন্যান্ট মহিলাদের ক্ষতির কারণ এবং মিসক্যারেজের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে , সেই খাবারগুলো অবশ্যই পরিহার করতে হবে

যে কোন অবস্থাতেই আমাদের সুস্থ থাকার জন্য পর্যাপ্ত ঘুম অত্যন্ত জরুরী , আর প্রেগন্যান্ট অবস্থায় ঘুমের যে কতটা প্রয়োজন তা নতুন করে আর বলার অপেক্ষা রাখে না। একজন প্রেগনেন্ট মহিলার পর্যাপ্ত বিশ্রামের পাশাপাশি পরিমিত ঘুমের বিষয়টিও অত্যন্ত জরুরী। কোন অবস্থাতেই প্রেগনেন্ট অবস্থাতে ধূমপান এবং অ্যালকোহল সেবন করা যাবে না। এই সময় পোশাক পরিচ্ছেদের ব্যাপারেও সচেতন হতে হবে যেমন কোন আটসাট বা টাইপ পোশাক পড়া যাবে না এবং উঁচু জুতা স্যান্ডেল সম্পূর্ণরূপে পরিহার করতে হবে। বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে টয়লেট ও বাথরুম ইউজ এর সময় কেননা অনেক সময় এই স্থানগুলোতে পা পিছলে গিয়ে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তার পরেও প্রথম ট্রাইমিস্টারে প্রেগন্যান্ট মহিলার লাইফস্টাইল সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের থেকে পরামর্শ গ্রহণ করে নিতে হবে। কেননা এই সময় সামান্য অসচেতনতাও বিশাল ক্ষতির কারণ হয়ে দেখা দিতে পারে।

মন্তব্য, নিরাপদ এবং সুস্থ প্রেগনেন্সি একজন মহিলার অত্যন্ত কাঙ্ক্ষিত একটি বিষয় । প্রেগনেন্সির টাইমটা সুস্থভাবে যদি একজন গর্ভবতী কাটাতে চাই তাহলে শুরু থেকেই এই সময়ের সকল বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান অর্জন করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী সতর্কতার সাথে লাইভ লিড করতে হবে। প্রেগন্যান্ট অবস্থায় কোমর ব্যথা হওয়া অত্যন্ত স্বাভাবিক একটি লক্ষণ বা সমস্যা । যদিও প্রেগন্যান্ট অবস্থায় কোমর ব্যথা সম্পূর্ণরূপে যদিও নির্মূল করা সম্ভব নয় তার পরেও কিছুটা relax পেতে উপরের দেওয়া টিপস ফলো করতে পারেন , টিপস গুলো সঠিকভাবে ফলো করলে , প্রেগন্যান্ট অবস্থায় হওয়া কোমর ব্যথা থেকে সাময়িক বেশ আরাম পাবেন ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url