দরুদে ইব্রাহিম বাংলা অর্থ - দরুদে ইব্রাহিম বাংলায়
Raihana Rija
আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিনের অনুগ্রহ এবং রহমত পাওয়ার সবচেয়ে বড় মাধ্যম গুলোর
মধ্যে দরুদ পাঠ করা একটি। নবীজি (সা) বলেছেন - যে ব্যক্তি আমার উপরে
একবার দরুদ পাঠ করবে আল্লাহ পাক তার উপরে দশটি অনুগ্রহ প্রদান করবেন। দরুদ পাঠের
উদ্দেশ্য হলো নবীজি (সা) জন্য দোয়া করা এবং নবীজির জন্য দোয়া কারোর
মাধ্যমে আমরা দুনিয়াতে এবং আখিরাতে সৌভাগ্যবান হতে পারি। তাই আজকে
আপনাদেরকে জানাবো দরুদ পাঠের ফজিলত সম্পর্কে এবং কোন দরুদটি এ বিষয়ে
এছাড়াও আজকের পোস্টে থাকছেন দরুদে ইব্রাহিম অর্থাৎ যে দরুদটি আমরা নামাজের মধ্যে
তেলাওয়াত করি সেই দরুদ আরবি এবং বাংলায়।
সূরা আহযাব এর ৫৬ নং আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন - নিশ্চয়ই আল্লাহতালা ও তার
ফেরেশতাগন রাসুলুল্লাহ(সা) এর প্রতি দরুদ পড়ে থাকেন। হে বিশ্বাসীগণ তোমরাও তার
প্রতি দরুদ ও সালাম প্রেরণ করো। এর থেকেই বোঝা যায় যে নবীজির উপরে দরুদ পাঠ করার
ফজিলত কত বেশি। আর সেই দরুদ টি আমাদের বেশি বেশি তেলাওয়াত করা উচিত ,যে দরুদ
আমাদের প্রিয় নবী (সা) নিজে শিক্ষা দিয়ে গেছেন। আর আজকে আপনাদেরকে জানাবো
সর্বশ্রেষ্ঠ দরুদ কোনটি এই বিষয়ে এবং এর পাশাপাশি দলিতে ইব্রাহিম বাংলা অর্থ এবং
দরুদে ইব্রাহিম এর বাংলা উচ্চারণ।
সূচিপত্রঃ দরুদে ইব্রাহিম বাংলা অর্থ - দরুদে ইব্রাহিম বাংলায়
দরুদ পাঠের অর্থই হলো নবী কারীম (সাঃ) এর জন্য দোয়া করা ।নবী করীম (সাঃ)-কে
দৃষ্টি না করিলে আল্লাহতায়ালা আঠার হাজার মখলূক সৃষ্টি করতেন না। হযরত মুহাম্মদ
(সাঃ) আল্লাহ তায়ালার প্রিয় বন্ধু। এ কারণে আল্লাহ তাআলা রহমত, দয়া ও অনুগ্রহ
পেতে চাইলে তার প্রতি প্রিয় বন্ধু নবী করিম (সাঃ) এর প্রতি রহমত ও অনুগ্রহ লাভের
জন্য দোয়া করা প্রয়োজনীয়।
**
আমরা আমাদের গুনাহ ও কর্মফলের দোষ খণ্ডনের জন্য আল্লাহ তাআলার দরগাহে যে দোয়া
করে থাকি তা পৌঁছাতে নাও পারে। অথবা কবুল নাও হতে পারে কিন্তু আল্লাহ তায়ালার
প্রিয় বন্ধু হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর ওপর রহমত নাজিল করার দোয়া অবশ্যই তার কাছে
সাদরে গৃহীত হয়। সে কারণে দরুদ শরীফের মাধ্যমে কোন দোয়া করলে তা অবশ্যই আল্লাহ
তায়ালার দরগাহে পৌঁছে যায় এবং বিবেচিত হয়। আদালতের কোট কাচারিতে যেমন কোট ফি
ছাড়া আরজি দাখিল করা যায় না সেরূপ দরুদ শরীফ যোগে না পাঠালে কোন দোয়া কবুল হয়
না এ কারণে দুরুদ শরীফের সাথে আবেদনকারী দোয়া কবুল হয়।
**
কুরআন মাজিদে সূরা তায়বায় বর্ণিত আছেঃ- (উচ্চারণঃ লাকাদ জ্বাআকুম রাসূলুম মিন
আনফুসিকুম আযীযুন আলাইহি মা আনিত্তুম হারীছ্বন আলাইকুম বিল মুমিনীনা রাউফুর
রাহীম। (সূরা তওবাহ) অর্থঃ "অবশ্যই তোমাদের মধ্যে এমন এক রসুলের আগমন ঘটেছে যিনি
তোমাদের স্বজাতীয় (মানুষ), তোমাদের কষ্টের বিষয় তার কাছে অত্যন্ত কঠিন ব্যাপার
যিনি তোমাদেরকে ভালবাসতে আকাঙ্ক্ষিত, (বিশেষভাবে) মুমিনদের প্রতি অনুগ্রহ ও
দয়ালু"।
উপরোক্ত আয়াত হতে স্পষ্টরূপে জানা যায় যে, নবী কারীম (সাঃ) আমাদের মঙ্গল কামনা
করেন তিনি আমাদের দরদী বন্ধু ও হিতাকাংখী। কেয়ামতের দিন তিনি আমাদের জন্য
সুপারিশ করবেন। আমাদের শুভাকাঙ্খী অভিভাবকের জন্য অনুগ্রহ দোয়া না করলে আমরা
অকৃতজ্ঞ বলে পরিগণিত হব! যদি তিনি আমাদের এই রূপ দুয়ার মুখপক্ষী নন, তবু আমাদের
মঙ্গলের জন্য তাঁর ওপর দরুদ পড়া উচিত । দরুদ শরীফ পড়লে তার দয়া সৃষ্টি
পাঠকারীর ওপর পড়ে এবং তার দোয়াতে বরকতে পাঠকারীর দুনিয়া আখিরাত উভয় জাহানের
অসীম কল্যাণ হবে।
**
অবশ্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম যে শুধু পরকালে আমাদের জন্য সুপারিশ
করবেন তা নয় বরং তিনি পার্থিব জীবনেও দোয়া করে সাহায্য করেন। দরুদ শরীফ পড়ার
শ্রেষ্ঠ ফজিলত হচ্ছে সব সময় দরুদ পড়লে আমাদের পার্থিব ও সাংসারিক কাজকর্ম সহজ
ও সফল হয়। পাঠক উন্নতির পথে অগ্রসর হয় এবং এর মাধ্যমে নবী করীম সাল্লাল্লাহু
ওয়া সাল্লাম এর সুপারিশ লাভ হওয়ার পথ সুগম হয়।
শ্রেষ্ঠ দরুদ কোনটি
অনেক ধরনের দরুদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দরুদ সেটাই যেটা নাকি নবীজি
(সা) নিজে জন্য নির্বাচন করেছেন এবং সাহাবীদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন , আর সেই
ফজিলতপূর্ণ দরুদ টি হল সেটাই যেটা আমরা নামাজের ভেতরে তেলাওয়াত করি
- অর্থাৎ দরুদে ইব্রাহিম হলো সব দরুদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দরুদ , কারণ এই দরূদটি নবীজি নিজে সাহাবীদের শিক্ষা দিয়ে গেছেন।
দরুদে ইব্রাহিম এর অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম)-এর উপর এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর
বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করুন, যেরূপ আপনি রহমত বর্ষণ করেছেন ইবরাহীম (আঃ) এবং
ইবরাহীম (আঃ)-এর বংশধরদের উপর। নিশ্চয়ই আপনি অতি প্রশংসিত, অত্যন্ত মর্যাদার
অধিকারী।
হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর উপর এবং
মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বংশধরদের উপর বরকত দান করুন
যেরূপ আপনি বরকত দান করেছেন ইবরাহীম (আঃ) এবং ইবরাহীম (আঃ)-এর বংশধরদের উপর।
নিশ্চয়ই আপনি অতি প্রশংসিত, অত্যন্ত মর্যাদার অধিকারী।
মন্তব্য , দরুদ পাঠ করা ফজিলত এতটাই বেশি যে দরুদ পাঠের জন্য অজু শর্ত
নয় , অর্থাৎ অজু ছাড়াও যে কোন মানুষ দরুদ পাঠ করতে পারবে। দরুদের
মর্যাদা এতটাই বেশি যে ,দরুদ পাঠ করা ছাড়া যে কোন দোয়া আল্লাহর দরবারে কবুল
হয় না এবং দরুদ পাঠ না করা পর্যন্ত সেই দোয়াগুলো আসমান এবং জমিনের মাঝখানের
ঝুলন্ত অবস্থায় থাকে। দুনিয়া এবং আখিরাতের সৌভাগ্য লাভ করার জন্য আমাদের
সকলকে আল্লাহপাক বেশি বেশি দরুদ পাঠে তৌফিক দান করুন(আমিন)।
নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url