প্রেগন্যান্সি টেস্ট করার ঘরোয়া পদ্ধতি - প্রেগন্যান্সি টেস্ট করার সঠিক সময়
প্রেগনেন্সি টেস্ট করার প্রক্রিয়াটি খুব একটা জটিল বা কঠিন নয় , আর বর্তমান
আধুনিক যুগে তো এই বিষয়টি একেবারেই সহজ কেননা দোকান থেকে সামান্য কিছু টাকা খরচ
করে , প্রেগনেন্সি টেস্টের স্টিক গুলো কিনে নিয়ে এসে আপনি মুহূর্তের মধ্যেই এর
রেজাল্ট পেতে পারেন কিন্তু তারপরেও এমন কিছু বোনেরা আছেন যারা জানতে চেয়ে থাকেন
প্রেগন্যান্ট টেস্টের ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো সম্পর্কে। টেস্ট করার জন্য ঘরোয়া উপকরণ
ব্যবহার করেও বিভিন্ন উপায়ে এর রেজাল্ট পাওয়া যায় আর সেগুলোই আজকে আপনাদের
জানাবো।
সূচিপত্রঃ প্রেগন্যান্সি টেস্ট করার ঘরোয়া পদ্ধতি - প্রেগন্যান্সি টেস্ট করার সঠিক সময়
প্রেগনেন্সি টেস্ট করার ঘরোয়া পদ্ধতি
প্রেগনেন্সি টেস্ট করার কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি রয়েছে, আপনি বাড়িতে থাকা বিভিন্ন উপকরণ এর মাধ্যমে ঘরোয়া ভাবে প্রেগনেন্সি টেস্ট করে নিতে পারেন। প্রেগনেন্সি টেস্ট করার ঘরোয়া পদ্ধতি সম্পর্কে আপনার যদি জানা না থাকে তাহলে এ বিষয়টি জেনে নিন। তাহলে আর দেরি না করে শুরু করা যাক টেস্ট করার ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো সম্পর্কে আলোচনা। বেশ কয়েকটি পদ্ধতির মাধ্যমে ঘরে বসে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করে নেওয়া যায়। প্রেগনেন্সির টেস্ট করার ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো হল,
- চিনি দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট
- টুথপেস্ট দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট
- সাবান দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট
- সরিষার গুড়া দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট
- শ্যাম্পু দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট
- ডেটল দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট
- টেস্ট লবণ দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট
- ভিনেগার দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট
- গম অথবা বার্লি দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট
- ব্লিচিং পাউডার দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট
- বেকিং সোডা দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট
চিনি দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্টঃ চিনি দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট এর
জন্য একটি পাত্রে আপনাকে কিছুটা জেনে নিতে হবে, এরপর এই চিনির ভিতরে কিছুটা
সকালের প্রস্রাব দিতে হবে।আপনি যদি দেখান যে চিনি গুলো সহযেই গলে যাছে তাহলে আপনি
প্রেগনেন্ট নন।আর যাদি চিনি গুলো গলে না গিয়ে জটা বাঁধার মত হয়ে যায় তাহলে বুঝবেন
আপনি প্রেগন্যান্ট।
টুথপেস্ট দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্টঃ টুথপেস্ট দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট
করার জন্য আপনাকে অবশ্যই সাদা টুথপেস্ট নিতে হবে, রঙ্গিন টুথপেস্ট নেয়া যাবে না।
সাদা টুথপেস্ট এর মধ্যে কিছুটা প্রসাব দিন যদি দেখেন সাদা টুথপেস্ট এর রং
পরিবর্তন হয়ে নীল রং বা নীলচে কালার চলে আসছে তাহলে বুঝতে হবে আপনি
প্রেগন্যান্ট।
সাবান দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্টঃ সাবানের উপরে আপনি দুই থেকে তিন
টেবিল চামচ সকালে সংগ্রহ করা প্রসাব ঢালুন। যদি দেখেন সাবান ফুলে ফেঁপে উঠছে
এবং সাবানের ভিতরে প্রচুর বুদবুদ দেখা যাচ্ছে তাহলে আপনি ধরে নিতে পারেন যে
আপনি প্রেগনেন্ট।
সরিষার গুড়া দিয়ে প্রেগনেন্সিতে টেস্টঃ সরিষার গোড়া দিয়ে
প্রেগনেন্সি টেস্ট করতে আপনার বেশ কয়েকদিন সময় লাগবে। এই পদ্ধতিতে
প্রেগনেন্সি টেস্ট করার জন্য আপনার প্রয়োজন হবে বেশ খানিকটা সরিষার গুড়া। এই
সরিষার গুড়াগুলো একটি বাথ টবের পানির ভেতরে মেশাতে হবে এবং এই পানির
ভেতরে আপনার সারা শরীর ভিজিয়ে বসে থাকতে হবে কমপক্ষে ৩০ মিনিট। এরপর আপনি
ভালোভাবে গোসল বা সাবান নিয়ে কয়েক দিনের জন্য অপেক্ষা করুন। চার পাঁচ দিনের
মধ্যে আপনার যদি মাসিক শুরু হয় তাহলে আপনি গর্ভবতী নন,আর যদি শুরু না হয় তাহলে
আপনি গর্ভবতী।
শ্যাম্পু দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্টঃএই পদ্ধতিটিও সাবান দিয়ে টেস্ট করার মতই কিছুটা ,প্রথমে আপনি একটি বাটিতে একটু শ্যাম্পু নিয়ে সামান্য একটু পানি শ্যামপুর ভিতরে মিশিয়ে শ্যাম্পু টিকে তরল করে নিন খুব বেশি নাড়াচাড়া করবেন না এরপর শ্যাম্পু গুলোর ভেতরে কিছুটা প্রসাদ দিন যদি দেখেন শ্যাম্পু গুলোর ভিতরে বুদবুদ দেখা যাচ্ছে তাহলে আপনি নিজেকে প্রেগন্যান্ট ধরে নিতে পারেন।
ডেট ডেটল দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্টঃ পারে এক টেবিল
চামচ বিদ্যালয়ের ভিতরে তিন টেবিল চামচ প্রসাব ঢালুন এবং কিছুক্ষণ
অপেক্ষা করুন যদি দেখেন প্রসাব এবং ডেটল ওপর নিচে আলাদা আলাদা তৈরি করেছে তাহলে
বুঝে নিবেন আপনি গর্ভবতী।
লবণ দিয়ে প্রেগনেন্সিতে টেস্টঃ একটি পাত্রে কিছুটা লবণ নিয়ে এর মধ্যে কয়েক চামচ পরিমাণ প্রস্রাব থাকুন একটু পরে যদি দেখেন লবণগুলো জটা হয়ে গেছে তাহলে বুঝবেন আপনি প্রেগন্যান্ট।
ভিনেগার দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্টঃ ভিনেগারের মধ্যে
আপনাকে কিছুটা প্রসাব ঢালতে হবে । অবশ্যই প্রস্রাবটি ভিনেগারের
ভেতরে ঢালার সময় খুব সাবধানে ঢালবেন, না হলে বুদবুদ উঠে যাবে এবং আপনি পরীক্ষাটি
সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন না। আপনি যদি প্রেগন্যান্ট হন তাহলে ভিনেগারের
ভিতরে প্রসাব দেওয়ার কিছুক্ষণ পরে দেখবেন যে ভিনেগারের রং পরিবর্তন হয়ে
গেছে।
গম অথবা বার্লি দিয়ে প্রেগন্যান্সি টেস্টঃ গম বা বার্লি দিয়ে
প্রেগনেন্সি টেস্ট করাটা একটু সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। গোটা গম বা বার্লির ভিতরে
কিছুটা প্রস্রাব ঢেলে কয়েকদিনের জন্য রেখে দিন যদি দেখেন এর মধ্যে গম বা
বার্লি থেকে গাছ বেরিয়েছে তাহলে আপনার প্রেগনেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা
রয়েছে।
ব্লিচিং পাউডার দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্টঃ ব্লিচিং পাউডারের ভিতরে
কিছুটা প্রসাব দেওয়ার পরে যদি শব্দ সহকারে প্রচুর বুদবুদ উঠতে দেখেন তাহলে
আপনাকে বুঝতে হবে আপনি প্রেগনেন্ট।
বেকিং সোডা দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্টঃ বেকিং সোডা দিয়ে প্রেগনেন্সি
টেস্ট করার জন্য আপনার প্রয়োজন হবে কিছুটা বেকিং সোডা এবং সকালের প্রস্রাব।
সকালে প্রসাব আপনি একটি পাত্রে সংরক্ষণ করুন বেকিং সোডার উপরে কিছুটা প্রসাব
ঢালুন। এরপর লক্ষ্য করুন যদি প্রচুর পরিমাণে বুদবুদ উঠতে থাকে তাহলে বুঝবেন
প্রেগন্যান্ট আর যদি একেবারে অল্প বুদবুদ ওঠে তাহলে আপনি প্রেগন্যান্ট
নয়।
আরো পড়ুনঃ কোন ধরনের স্রাব দেখলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যাবেন
এই পদ্ধতি গুলো দিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট করার পরে কখনোই আপনার উচিত হবে না ১০০% নিশ্চিন্ত হয়ে বসে থাকা। কারণ এই পথ ধরনের পদ্ধতি গুলো কখনোই পুরোপুরি সঠিক ফলাফল দেয় না। এটির মাধ্যমে আপনি পাথরের ভাবে নিশ্চিন্ত হতে পারেন কিন্তু তারপরে এই পরীক্ষাগুলো করার পরে একবার রেজিস্টার ডাক্তারের কাছে গিয়ে আপনার ভালোভাবে টেস্ট করিয়ে নেওয়া উচিত।
প্রেগনেন্সির টেস্ট করার সঠিক সময়
প্রেগনেন্সি টেস্ট করার সঠিক সময় সম্পর্কে আপনাদের অবশ্যই জেনে রাখা উচিত। কারণ
যত তাড়াতাড়ি আপনি আপনার প্রেগনেন্সির সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারবেন তত
তাড়াতাড়ি আপনি আপনার নিজের স্বার্থ এবং শিশুর স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সচেতন হতে
পারবেন। এই কারণে দেরি না করে আজই জেনে নিন প্রেগনেন্সির টেস্ট করার সঠিক সময়
সম্পর্কে।
যাদের নিয়মিত অথবা রেগুলার মাসিক হয় তারা সহবাস বা শারীরিক সম্পর্কে পর অন্ততপক্ষে দুই সপ্তাহ পার হলে প্রেগনেন্সি টেস্ট করতে পারেন। এর মানে হলো শারীরিক সম্পর্কে ২১ দিন পরে প্রেগনেন্সি টেস্ট করার সঠিক সময়। এটি অবশ্যই যাদের রেগুলার মাসিক হয়ে থাকে তাদের জন্য প্রযোজ্য। যাদের রেগুলার মাসিক তাদের মাসিক মিস হওয়ার পরে প্রেগনেন্সি টেস্ট এর সঠিক সময় হল অন্ততপক্ষে ১৫ দিন। অর্থাৎ, মাসিক মিস হওয়ার ১৫ দিন পর আপনার প্রেগনেন্সির টেস্ট করার সঠিক সময়।
মন্তব্য , প্রেগনেন্সি টেস্ট এর রিপোর্ট যদি আপনার ফলাফল পজেটিভ
আসে তাহলে অবশ্যই আজ থেকেই আপনার লাইফ স্টাইল এর উপরে বিশেষ নজর দিন এবং খাদ্য
খাবার এর তালিকা বদলে ফেলুন। কারণ গর্বের সন্তানের সুস্থভাবে বেড়ে
ওঠার বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করে মায়ের লাইফ স্টাইল এর উপরে। তাই আপনি
যদি একজন সচেতন মা হয়ে থাকেন এবং সুস্থ বাচ্চার জন্ম দিতে চান তাহলে অবশ্যই আজ
থেকেই আপনার নিজের এবং এবং গর্ভে থাকা সন্তানের কেয়ার নেয়া শুরু করুন।
নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url