সকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা - দুধ ও খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
সূচিপত্রঃ সকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা - দুধ ও খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
সকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম ,আয়রন, ভিটামিন বিভিন্ন পুষ্টিগুণে ভরপুর এবং অত্যন্ত সুস্বাদু একটি ফল হল খেজুর। খেজুরের মধ্যে লুকিয়ে আছে অনেক ধরনের উপকারিতা। আমাদের পবিত্র গ্রন্থ কুরআনে এবং হাদিসে খেজুরের কথা উল্লেখ থাকায় আমরা কম বেশি সবাই উত্তম একটি ফল হিসেবে খেজুর কে চিনি। কিন্তু খেজুরের উপকারিতা কথা শুনলেও হয়তো বা সবাই আমরা খেজুর খাওয়ার উপকারিতা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানিনা। তাই আজকে আপনাদের জানাবো সকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। আপনি যদি সকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা গুলো জানতে চান তাহলে পোস্টের এই অংশটি পড়ে জেনে নিতে পারেন ,সকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা গুলি।
আরো পড়ুনঃ রাতে মধু খাওয়ার উপকারিতা
প্রোটিনের যোগান দেয়ঃ প্রোটিন আমাদের শরীরের পেশী গঠন করতে বিশেষ
ভূমিকা পালন করে , এই কারণে প্রোটিন আমাদের শরীরের অত্যন্ত জরুরী। প্রতিদিন সকালে
যদি আপনি একটি অথবা দুইটি খেজুর খান তাহলে, খেজুরের মধ্যে থাকা প্রোটিন আমাদের
শরীরের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে সাহায্য করবে।
কর্মক্ষমতা বাড়ায়ঃ খেজুরের মধ্যে প্রোটিন এবং চিনি থাকাই শরীর
সকালবেলা খেজুর খেলে এটি আমাদের শরীরকে শক্তি যোগান দেয় যার ফলে সারাদিন
কর্মক্ষম থাকা যায়। শরীরের শক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি খেজুর ক্লান্তি দূর করতেও
সাহায্য করে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেঃ খেজুরের ফাইবার থাকাই এটি খাদ্য হজম হওয়ার
ক্ষেত্রে সাহায্য করে। আর খাদ্য হজমে সাহায্য করার ফলে রোজ সকালে খেজুর খেলে এটি
আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এবং অনেক সময় ডায়রিয়া সারাতে অনেক ভালো কাজ
করে।
ক্যান্সার দূর করতেঃ শরীরের বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার দূর করার
ক্ষেত্রে খেজুরের ভূমিকা অনস্বীকার্য। নিয়মিত সকালে খেজুর খাওয়ার অভ্যাস থাকলে
এটি আমাদের পেটের বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবে।
রক্তশূন্যতা দূর করতেঃ অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের পাশাপাশি খেজুরের
মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। আর এই আইরন আমাদের শরীরে রক্তশূন্যতা বা
রক্তস্বল্পতা দূর করতে অত্যন্ত জরুরি একটি উপাদান। আর এই কারণে সকালবেলা খেজুর
খেলে শরীরের আয়রনের ঘাটতি পূরণ হয় এবং রক্তশূন্যতা বা রক্তস্বল্পতা দূর হয়।
স্মৃতিশক্তি বাড়াতেঃ স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর ক্ষেত্রেও সকালে খেজুর
খেলে অত্যন্ত ভালো ফলাফল পাওয়া যায় এই কারণে নিয়মিত কেউ যদি সকালে খেজুর
খাওয়ার অভ্যাস করে তাহলে তার স্নায়ুতন্ত্রের কাজ করার ক্ষমতা বেড়ে যায় যার
ফলে মস্তিষ্কে বিভিন্ন তথ্য ধরে রাখার ক্ষমতা বাড়তে থাকে।
কোলেস্টেরল কম করেঃ খেজুর আমাদের শরীর থেকে
খারাপ কোলেস্টেরল দূর করতে এবং কম করতে অত্যন্ত সাহায্য করে। এই কারণে
সকালবেলা খেজুর খেলে শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কম থাকে এবং যার ফলে হার্ট
অ্যাটাকের ঝুঁকি , হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কম থাকে।
দুধ ও খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
দুধ ও খেজুর খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে বেশ অনেক কয়েকটি ক্ষেত্রে কিন্তু আমরা
হয়তো অনেকেই দুধ ও খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানি। আমরা হয়তো খুব সাধারণ
বেশ কিছু খাবারের উপকারিতা সম্পর্কে জানিনা বলেই এগুলো খাদ্য তালিকায় যুক্ত করি
না এবং যার ফলশ্রুতিতে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টির ঘাটতি গুলো দেখা যায়
তাই চলুন আজকে আমরা জেনে নিই দুধ ও খেজুর খাওয়ার উপকারিতা গুলো সম্পর্কে। দুধের
সাথে খেজুর মিশিয়ে খেলে যে সকল উপকারিতা পাওয়া যাবে সেগুলো হলো
হাড় গঠনে মজবুত করেঃ দুধের সাথে খেজুর মিশিয়ে খেলে এটি আমাদের
হাড় গঠনে সহায়তা করবে কারণ দুধের মধ্যেও প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে
এবং খেজুরের মধ্যেও প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে সুতরাং দুধ এবং খেজুর
দুটোই ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার আর এই যে কারণে দুধের সাথে খেজুর মিশিয়ে খেলে
শরীর পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম পায় তাহলে আমাদের হাড় গঠন সহায়তা করে এবং হাড় শক্ত
হয়। বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে দুধের সাথে খেজুর মিশিয়ে খেলে মা ও
শিশু দুজনেরই হাড় গঠনে একটি বিশেষ সহায়তা করে এবংবাচ্চা মজবুত
হয়।
রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ায়ঃ দুধের সাথে খেজুর খাওয়ার
আরেকটি উপকারিতা হলো ,এ দুটি উপাদান এক সাথে ভিজিয়ে খেলে এটি খুব
দ্রুত রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে কাজ করে। দুধের সাথে খেজুর
মিশিয়ে খেলে এটি শুধু রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্র বাড়াই না
পাশাপাশি রক্তস্বল্পতা দুর করতেও কাজ করে।
চেহারায় তারণ্য ধরে রাখেঃ চেহারা তারুণ্য ধরে থাকতে এবং ত্বকের থেকে
বয়সের ছাপ দূর করতে খেজুর এবং দুধ অত্যন্ত কার্যকরী দুইটি খাদ্য। খেজুর এবং দুধ
দুটি খাদ্যের মধ্যেই প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে আর যার কারণে এই
দুই উপাদান একসাথে মিলিয়ে খেলে এদের কার্যকারিতা দ্বিগুণ হারে বেড়ে যায় আর যার
ফলে চেহারা তারুণ্য ধরে রাখতে দুধ এবং খেজুর ম্যাজিকের মতন কাজ করে।
প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ দুধের সাথে খেজুর মিশিয়ে খেলে এটি নারী
এবং পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে।
প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি এটি পুরুষদের বন্ধ্যাত্ব দূর করতেও বিশেষ ভূমিকা
পালন করে।
শরীরে শক্তি বাড়ায়ঃ শরীরের শক্তি বাড়াতে আদর্শ দুইটি খাবার হল
খেজুর এবং দুধ। দুধ এবং খেজুরের মধ্যে সকল ধরনের পুষ্টি উপাদান পর্যাপ্ত পরিমাণে
থাকায় এটি আমাদের শরীরের শক্তি এবং কর্ম ক্ষমতা বাড়াই পাশাপাশি শারীরিক
দুর্বলতা প্রেসার লো হয়ে যাওয়া মাথা ঘুরা ইত্যাদি সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়।
দৃষ্টি শক্তি উন্নত করেঃ বয়স জনিত কারণে বা অন্যান্য যেকোনো সমস্যার কারণে যদি কেউ চোখে কম দেখে তাহলে দুধ এবং খেজুর একসাথে খেলে এই সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায়। আর যদি কারো আগে থেকেই দুধ ও খেজুর খাওয়ার অভ্যাস থাকে তাহলে সেসব ব্যক্তির ক্ষেত্রে চোখের ছানি বা চোখের জ্যোতি কমে যাওয়ার সমস্যা সৃষ্টি হতে খুব কমই দেখা যায়।
মন্তব্য , পোস্টটি পড়ে আপনার নিশ্চয়ই এতক্ষণে বুঝতে পেরেছেন যে কেন তার
নিয়মিতভাবে খেজুর খাওয়া উচিত। আপনারা যদি নিয়মিত সকালবেলা খেজুর খাওয়ার
অভ্যাস করেন অথবা দুধ ও খেজুর একসাথে মিশিয়ে খাওয়ার প্র্যাকটিস গড়ে তোলেন
তাহলে শরীরের বিভিন্ন ধরনের ছোট বড় অনেক সমস্যায় দূর করে ফেলতে পারেন অনায়াসে
, তাই সুস্থ থাকতে স্বাস্থ্য সচেতন মানুষদের উচিত হবে বাইরের বিভিন্ন ধরনের
হাবিজাবি খাবার গুলো না খেয়ে নিয়মিত খেজুর খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা।
নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url