আশুরারা দিনের ইবাদাত - আশুরারা দিনে পাঠ কারার দোয়া

আশুরারা দিনের ইবাদাত

আশুরার দিনের ইবাদতের মর্যাদা অনেক বেশি ,তাই আজকে আমরা আলোচনা আশুরারা দিনের ইবাদাত নিয়ে। এখনো হয়তো অনেক মানুষ আছেন যারা আশুরার দিনের ইবাদত সম্পর্কে জানেন না। তাই আজকে আমরা যে সকল মানুষ আশুরার দিনের ইবাদত সম্পর্কে জানেন না তাদের উদ্দেশ্যে বর্ণনা করব আশুরার দিনের ইবাদত সমূহ গুলো নিয়ে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক আশুরার দিনের ইবাদত গুলো
হাদীসে বর্ণিত আছে , যে ব্যক্তি আশুরার দিন অর্থাৎ মহররমের ১০ তারিখে রোযা রাখে, সে ৬০ বছর রোযা ও রাত্রের ইবাদত করার সওয়ার লাভ করে।আশুরার দিন দুই রাকার দুই রাকাত করে ৪ রাকাত নামাযের প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহা, সুরা ঝিলঝাল, সূরা কাফিরুন ও সূরা ইখলাস একবার পড়ে নামাযান্তে দরুদ শরীফ ৭০ বার পড়ে কারবালার শহীদগণের রুহ মোবারকে সওয়াব রেসানী করে দেবে। এতে শহীদের দরজা লাভ হবে এবং কারবালার শহীদগণের সুপারিশ লাভ হবে। ( গুনিয়াতুত্তালেবীন- ২৮৫ পৃঃ)।
হাদীস শরীফে আরও বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি এ দিনে ৪রাকাত নামাযের প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতেহা, সূরা ঝিলঝাল, সূরা কাফিরুন ও সূরা এখলাস একবার করে পড়ে এবং নামাযান্তে ১০০ বার দরূদ পাঠ করে, আল্লাহ তাকে রোজ কিয়ামতে সকল প্রকার বিপদ আপদ থেকে মুক্ত রাখে।হাদীস শরীফে আরো বলা আছে, যে ব্যক্তি এদিন অর্থাৎ আশুরার দিনে ৪ রাকাত নামাযের প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহা একবার, সূরা এখলাস ১৫ বার পড়ে কারবালার শহীদগণের রূহ মোবারকে সওয়াব পৌঁছে দেবে শহীদগণ বিশেষ করে হযরত ইমাম হোসেন (রাঃ) তার মুক্তির ও মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য আল্লাহর দরবারে সুপারিশ করবেন। এ মাসের কমসে কম ২টি রোযা রাখবে একটি আশুরার দিন ও অপরটি তার আগের দিন, তাহলে ইহুদি নাসারাদের বিরোধীতা করা হবে।

আশুরারা দিবাগত রাতের ইবাদত

আশুরার দিবাগত রাতের ইবাদতের ফজিলত অনেক বেশি এই কারণে আমাদের সকলেরই উচিত আশুরার দিবাগত রাত্রি ইবাদত বন্দগির মধ্যে দিয়ে কাটানো এবং আশুরারা দিবাগত রাতের ইবাদত সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে রাখা। এই পবিত্র রাত্রি ইবাদতের মাধ্যমে কাটানোর জন্য আমাদেরকে অবশ্যই জানতে হবে , এই রাত্রে কোন কোন বিশেষ ইবাদত গুলো করার মাধ্যমে অশেষ সওয়াব হাসিল করা যায়। তাই চলুন আজকে আমরা আশুরারা দিবাগত রাতের ইবাদত সম্পর্কে জেনে নিই।
বিভিন্ন গ্রন্থ থেকে জানতে পারা যায় যে আশুরার দিবাগত রাত্রে ৫০ রাকাত সম্ভব হলে আরও বেশি নফল নামাজের প্রত্যেক রাকাতে হাতিহার করে সূরা ইখলাস তিনবার পাঠ করতে হয় এবং মোনাজাতের সময় হযরত হোসাইন (রা) এবং কারবালায় শহীদ হওয়া সকল রুহের উপরে সওয়াব রেসানি করতে হয়। এই পবিত্র রাত জেগে তসবি তাহলিল , ইস্তেগফার, কোরআন তেলাওয়াত , দোয়া-দরুদ পাঠ করার মাধ্যমে অশেষ সাওয়াবের অধিকারী হওয়া যায়
জানতে পারা যায় যে যে ব্যক্তি আশুরার রাতে সুবহে সাদিকের পূর্বে চার রাকাত নফল নামাজ আদায় করবে এবং প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহা ওয়া আতুককে একবার এবং সূরা ইখলাস তিনবার পড়ে নামাজ শেষে সূরা ইখলাস আরো ১০ বার করে কারবালা শহীদদের রুহের উপর সওয়াব রেসানী করে তাহলে তার আমলনামায় আল্লাহর হুকুমে অশেষ সওয়াব লেখা হয়।
আশুরার দিবাগত রাত্রে চার রাকাত নামাজে সূরা ফাতিহা একবার ও সূরা ইখলাস ৫০০ পাঠ করে নামাজ পড়লে তার উপরে আল্লাহ পাকের বিশেষ রহমত নাযিল হয় এবং এর ফলে অনেক সওয়াব লাভ করা যায় ।

আশুরারা দিনে পাঠ কারার দোয়া

আশুরার দিনে পাঠ করার একটি বিশেষ দোয়া আছে যেই দোয়াটি পাঠ করলে অশেষ সওয়াবের অধিকারী হওয়া যাবে এবং এই দোয়ার ফজিলত অনেক বেশি।এই দোয়াটি পাঠ করার মাধ্যমে সওয়াবের অধিকারী হতে হলে অবশ্যই আপনাকে আশুরারা দিনে পাঠ কারার দোয়া সম্পর্কে জানতে হবে। তাই আজকে আপনাদে এখন জানাবো আশুরারা দিনে পাঠ কারার দোয়া টি। চলুন তাহলে আর দেরি না করে দিলে নেওয়া যাক বিশেষ এই দোয়াটি।
উচ্চারণঃ লা-ই-লাহা ইল্লাল্লাহু আলিয়্যিল আ'লা। লা-ই-লাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুস সামা ওয়াতে ওয়াল আরদে ওয়ামা বাইনাহুম ওয়ামা তাহতাছ ছারা। আল্লাহুম্মাজ আল না মিম্মান দায়াকা ফা আযাবতাহু ওয়া আমানা বিকা ফাহাইতাহু। ওয়া রাগিবা ইলাইকা ফা আ'তাইতাহু ওয়া তাওয়াক্কাল আলাইকা ফা-আকফাইতাহু। ওয়াকতারাবা মিনকা ফা আদ নাইতাহু। আল্লাহুম্মা ইন্না নাস আলুকাল ঈমানাম্বিকা ওয়াল আখিরাতে, ইয়া যাল জালালি ওয়াল ইকরাম।
অর্থঃ শুরু করছি পরম করুনাময় আল্লাহ তায়ালার নামে। সর্বশ্রেষ্ঠ ও মহান আল্লাহ তায়ালা ব্যতীত আর কেহই উপাস্য নাই। সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টিকর্তা ছাড়া কেহই মাবুদ নেই, হে আল্লাহ! সকল প্রার্থনাকারীর দোয়া ও মুনাজাত তুমি কবুল করেছ। আমাকেও তাদের দলে সামিল করে নাও, যাদেরকে তুমি তোমার প্রতি ঈমান আনার ফলে সত্যের সন্ধান দিয়েছ আর তোমার দিকে আকৃষ্ট হওয়ার ফলে যাদের তুমি স্বীয় নেয়ামত দান করেছ এবং তোমার ওপর ভরসা করার ফলে যাদেরকে তুমি প্রাচুর্য দান করেছ আর তোমার নৈকট্য লাভ করতে অভিলাষ করার জন্য যাদেরকে তুমি স্বীয় নৈকট্য ও দীদার দান করেছ। হে আল্লাহ! আমার জীবিকা নির্বাহের ব্যপারে তুমি আমার জন্য ভালোবাসা জন্মিয়ে দাও। হে আল্লাহ! আমি তোমার দরবারে পূর্ণ ঈমান, হালাল রিযিক, দুনিয়া ও আখিরাতের সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনা করছি। হে রাহমানুর রাহিম! তুমি এ বান্দার প্রার্থনা কবুল কর।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url