ভিটামিন এ এর কাজ কি

ভিটামিন এ এর কাজ কি

আপনারা সবাই জানেন  আমাদের শরীর সুস্থ রাখার জন্য যে কয়টি ভিটামিন অত্যন্ত জরুরী তার মধ্যে ভিটামিন এ হলো অন্যতম কারণ শরীরের যদি ভিটামিন এর ঘাটতি দেখা দেয় তাহলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। শরীর সুস্থ রাখার জন্য ভিটামিন এ এর নানাবিধ কাজ রয়েছে। শরীরের ভিটামিন এ এর উল্লেখযোগ্য কাজ গুলো হলো, ভিটামিন এ - 

রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করেঃ রাতকানা হলো এক ধরনের রোগ যেই রোগে নাকি অল্প আলোতে এবং রাত্রেবেলা দৃষ্টিশক্তি কমে যায় যার ফলে দেখতে সমস্যা হয়। আর এই রোগটি যেই ভিটামিনের অভাবে হয়ে থাকে সেটি হল ভিটামিন এ। সুতরাং শরীরে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ না থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে রাতকানা রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাই এবং গর্ভাবস্থায় যদি গর্ভবতী মায়ের শরীরে ভিটামিন এর অভাব হয় তাহলে এক্ষেত্রে শিশুর জন্মগতভাবে রাতকানা রোগ নিয়ে জন্মাতে পারে। রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করা হলো ,শরীরে ভিটামিন এ এর কাজগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য।

দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখেঃ রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করা ছাড়াও চোখের দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখতে এবং বয়স জনিত কারণে অন্ধত্বের সমস্যা দূর করার ক্ষেত্রে কাজ করে ভিটামিন এ। চোখের ভেতরে শুকিয়ে যাওয়া , চোখে পানি না আসা যাওয়া , চোখের পর্দা ঘোলাটে হওয়া ইত্যাদি সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন এ অত্যন্ত জরুরী , কারণ চোখের এ সকল সমস্যা দূর করার ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে কাজ করে ভিটামিন এ।

রক্তস্বল্পতা দূর করেঃ শরীরের যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ না থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে আয়রন ফাংশন ভালো ভাবে কাজ করতে পারে না , আর আইরন ফাংশন ভালো ভাবে কাজ না করার জন্য শরীরে দেখা দেয় রক্তশূন্যতা । বুঝতেই পারছেন রক্তশূন্যতার সমস্যা দূর করতে অভ্যন্তরীণভাবে কাজ করে ভিটামিন এ।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ঠিক রাখতে সব ধরনের পুষ্টি উপাদান এবং ভিটামিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ , আর যার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ। ভিটামিন এ আমাদের শরীরকে নানান ধরনের সংক্রামক রোগ গুলো থেকে রক্ষা করে। ভিটামিন এ জাতীয় খাবার খেলে এটি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। তবে যাদের শরীরে যথেষ্ট ভিটামিন এ এর ঘাটতি রয়েছে তারা এই ঘাটতি পূরণের জন্য ভিটামিন এ জাতীয় খাবার গ্রহণের পাশাপাশি সঠিক মাত্রার ভিটামিন এ ক্যাপসুল ডাক্তারি পরামর্শ মোতাবেক গ্রহণ করতে পারেন। এতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি শারীরিক দুর্বলতাও দূর হবে।

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়ঃ বেশ কিছু গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে যে , ভিটামিন এ পুরোপুরি ভাবে ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে না পারলেও বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে শরীরকে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে। বিশেষ করে টিউমার এবং স্কিন ক্যান্সার প্রতিরোধে সরাসরি অবদান রাখে ভিটামিন এ ।

আরো পড়ুনঃ ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর উপকারিতা ও অপকারিতা

শিশুর ব্রেন ডেভেলপে সাহায্য করেঃ ভিটামিন এ শুধু রাতকানা রোগ দূর করতে বা চোখর দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে নয় শিশুদের ব্রেন ডেভেলপমেন্টের কাজেও সাহায্য করে থাকে আর এই কারণেই গর্ভাবস্থায় যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন এ গ্রহণ করার পাশাপাশি শিশু প্রসবের পর শিশুর 6 মাস বয়স থেকে শুরু করে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত , নির্দিষ্ট পরিমাণে ভিটামিন এ জাতীয় খাবার খাওয়ানোর পাশাপাশি বছরের নির্দিষ্ট সময় গুলোতে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়াতে হবে। এতে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হওয়ার পাশাপাশি শিশুর গ্রোথ  এবং ব্রেন ডেভেলপ করার ক্ষেত্রে কাজ করবে এই ভিটামিন। শুধু শিশুদেরই নয় যে কোন বয়সী মানুষের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে ভিটামিন এ।

শিশুর জন্ম ত্রুটি দূর করেঃ প্রেগন্যান্ট অবস্থায় , গর্ববতী মায়ের শরীরে যদি পর্যাপ্ত ভিটামিন এ এর ঘাটতি থাকে , তাহলে সে ক্ষেত্রে  জন্মগত ত্রুটি নিয়ে জন্মগ্রহণ করতে পারে। বিশেষ করে প্রথম  ট্রাইমিস্টারে গর্ভবতী মায়ের শরীরের জন্য ভিটামিন এ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও ভিটামিন এ শিশুর পুষ্টি ঘাটতি পূরণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

স্কিন ভালো রাখেঃ আমাদের স্কিন ভালো রাখা এবং স্কিনের যে কোন সমস্যা দূর করা হলো ভিটামিন এ এর গুরুত্বপূর্ণ কাজ গুলোর মধ্যে আরেকটি। সঠিক বয়সের যদি শরীরে সঠিক মাত্রায় ভিটামিন এ না থাকে তাহলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া  , ত্বক কুঁচকে যাওয়া সহ ত্বকের আরো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

দাঁত ও হাড় গঠনে সহায়তা করেঃ ভিটামিন এ আমাদের শরীরের হাড় গঠন এবং দাঁত মজবুত করতেও , ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি কে সাহায্য করে , যার কারণে বলা যায় যে দাঁত ও হার গঠনেও ভিটামিন এ সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে।

অন্যান্যঃ শরীরের উপরে উক্ত কাজগুলোতে সহায়ক ভূমিকা পালন করার পাশাপাশি ভিটামিন এ বার্ধক্য জনিত সমস্যা দূর করতে , ইমিউন সিস্টেম ভালো রাখতে , লিভার ভালো রাখতে , শিশুদের হাম রোগ প্রতিরোধ করতেও শরীরকে বিশেষভাবে সহযোগিতা করে থাকে ভিটামিন এ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url